Saturday, December 17

ঢাবি শিক্ষার্থীদের আবিষ্কার; ভূমিকম্প হলেই গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্ধ

ঢাবি শিক্ষার্থীদের আবিষ্কার; ভূমিকম্প হলেই গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্ধ
কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: আকস্মিকভাবে ভূমিকম্পের সম্মুখীন হলে গ্যাসের লাইন ফেটে বিস্ফারণ কিংবা বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট হয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমাদের দেশে এইরকম ঘটনা ঘটতে পারে। এমন দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমান শুন্য শতাংশে নামিয়ে আনা যায় বা নিজেকে রক্ষার সমস্ত কৌশল জানা সম্ভব।

আর এমনই এক অভূতপূর্ব প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের আট তরুণ শিক্ষার্থী। এই টিমের নাম ‘টিম অরিয়ন-গ্ল্যাডিয়েটর’।

তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের আট তরুণ শিক্ষার্থী হলেন- দ্বিতীয় বর্ষের স্বপ্নীল সায়ন সাহা, মো. শাহ কামাল সাইমুম, মো. ইসতিয়াক উদ্দিন, আন্দালিব রহমান, মায়িহা ইমাম তিথী, পার্থ প্রতিম নাথ এবং প্রথম বর্ষের সাদমান সিরাজ ও আতিক ফয়সাল।

প্রজেক্টের টিম লিডার স্বপ্নীল বলেন, ‘বাংলাদেশে ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দুইভাবে বেশি হয়। প্রথমত, গ্যাসের লাইন ফেটে কিংবা শর্টসার্কিটের কারণে  এবং আতঙ্কিত হয়ে ভুল কৌশল প্রয়োগ করার কারণে এই বিপদ ঘটে। আমদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মাত্র চার হাজার টাকার ব্যয়ে যেকোন বাসা বাড়ির ছাদে খুব সহজে স্থাপন করা যায়।



যন্ত্রটি ৪.৮ মাত্রার ভূমিকম্পেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভবনের গ্যাস এবং ইলেকট্রিসিটি বন্ধ করে দিতে সক্ষম। ভূমিকম্প শেষ হবার পর আপনা আপনি গ্যাস ও ইলেকট্রিসিটি চালু করে দিবে। তবে গ্যাসের লাইনে লিক হয়ে গেলে আমাদের সিস্টেম স্থায়ীভাবে গ্যাসের লাইন বন্ধ করে দিতে সক্ষম।

দলের আরেক সদস্য মো. ইসতিয়াক বলেন, ‘যন্ত্রটির পাশাপাশি আমাদের নির্মিত একটি অ্যাপও আছে। যা সিস্টেমের সঙ্গে ইন্টারনেট অব থিংস দ্বারা যুক্ত রয়েছে। এটি ভূমিকম্পের সময় কি কি পদক্ষেপ অবলম্বন করতে হবে তা টেক্সট, চিত্র এবং ভিডিও দ্বারা উপস্থাপন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে যে কেউ নিশ্চিন্তে ভুমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি এবং নিজের মধ্যে থাকা অত্যন্ত স্বাভাবিক ভয়ভীতি দূর করতে পারবেন’।

সাইমুম জানান, অ্যাপটিতে সমস্ত পুলিশ স্টেশন, হাসপাতাল, ব্লাড ব্যাংক এবং অ্যাম্বুলেন্সের ফোন নম্বর রয়েছে।পুরো হার্ডওয়্যারটি এই অ্যাপের সাথে বিভিন্ন ক্ষুদেবার্তা আদান-প্রদান করতেও সক্ষম।



শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবিত এই প্রজেক্টটি এরই মধ্যে দেশের বাইরেও সাড়া ফেলেছে। সম্প্রতি দলটি ভারতের আইআইটি (কানপুর) টেকক্রিতিতে  উদ্ভাবনী প্রযুক্তি প্রদর্শন করে  পঞ্চমস্থান অধিকার করেছে।

এছাড়াও সম্প্রতি বুয়েট ইইই ডে প্রজেক্ট শো প্রতিযোগিতায় ‘টিম অরিয়ন-গ্ল্যাডিয়েটর  বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত টিমগুলোকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। এমনকি প্রজেক্টির একটি গবেষণাপত্র আইইইই(IEEE) কনফারেন্সে গৃহিত হয়েছে।

প্রজেক্টির সুপারভাইজার ঢাবি ইইই বিভাগের প্রভাষক শেখ মো. মাহামুদুল ইসলাম বলেন, `আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি যন্ত্র আবিষ্কার করতে পেরেছে। সিস্টেমটি খুবই দরকারি এবং সময় উপযোগী। আশা করছি টিম অরিয়ন-গ্ল্যাডিয়েটর প্রজেক্টটিকে আরো কার্যক্ষম এবং সাশ্রয়ী করতে সক্ষম হবে।’ 
--- বিডিলাইভ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়