কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: কেয়া
খাতুনের মুখে হাসি ফুটেছে। তার অবস্থা এখন আগের চেয়ে অনেক ভালো। স্বামী
পারভেজ খানেরও চাওয়া একটাই—স্ত্রীকে নিয়ে সামনের পথচলাটা যেন সুখের ও
স্বস্তির হয়। কেয়ার জন্য যাঁরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি
কৃতজ্ঞতারও শেষ নেই এই দম্পতির।
মুঠোফোনে কেয়া বলেন, ‘ডাক্তার বলেছেন, আপাতত আমি সুস্থ আছি।’ এ কথা বলার সময় মুঠোফোনে তাঁর হাসির শব্দ শোনা যায়, এতে ছিল অনাবিল আনন্দের অনুভূতি। স্বামী পারভেজ বললেন, ‘এইবার যখন কেয়াকে নিয়ে ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে যাই, ডাক্তার জানতে চান, রোগী কে? কেয়াকে দেখে তো রোগীর মতো মনে হচ্ছিল না।’
এই দম্পতির মুখে এখন শুধুই হাসি। বিয়ের পাঁচ মাসের মাথায় গত বছর জানা গিয়েছিল, কেয়ার শরীরে বাসা বেঁধেছে ব্লাড ক্যানসার (এএমএল)। কেয়া শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগেই গিয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে ভারতের হাসপাতালে। সেখানে দীর্ঘ চার মাস চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরেন। তারপর নিয়মিত ফলোআপে যাচ্ছেন ভারতে।
স্ত্রীর অসুখের খবরে মধুচন্দ্রিমায় যাওয়া, একটি ভালো চাকরি পাওয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে তরুণ পারভেজ দৌড়ে বেড়িয়েছেন হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে। সম্প্রতি চিকিৎসকের কাছ থেকে আসার পর এই দম্পতি কিছুটা থিতু হয়েছেন। এভাবে যদি তিন-চার বছর পার করা যায়, তবে কেয়ার সুস্থতার বিষয়ে হাঁপ ছাড়া যাবে বলে জানিয়েছেন সেখানকার চিকিৎসকেরা।
গত বছরের ৮ জুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগে ভর্তি হন কেয়া। তখন সেখানকার চিকিৎসকেরা বলেন, কেয়ার ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ভারতে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন তাঁরা। তাঁরা বলেন, এই চিকিৎসায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা খরচ হতে পারে।
পারভেজ ২০১৪ সালের নভেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ (অ্যাকাউন্টিং) সম্পন্ন করে বের হয়েছেন। অন্যদিকে, স্ত্রী কেয়া খাতুন তখন রাজবাড়ী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছেন। পছন্দের বিয়ে। সব মিলে ওই সময় তাঁদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
পারভেজের বাবা বাসের চালক। তিন ভাইয়ের মধ্যে পারভেজ বড়। সংসারের হাল তাঁর ধরার কথা। সবাই সে আশাতেই ছিলেন। অন্যদিকে, কেয়ার বাবা রেলওয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। চার বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে কেয়া সবার ছোট। এই দুই পরিবারের পক্ষে কেয়ার চিকিৎসা খরচ চালানো অসম্ভব ছিল।
তবে কেয়া ও পারভেজের বিপদে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন দেশের মানুষ। পারভেজের বন্ধু ও স্বজনদের সহায়তায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাহায্যের আবেদন জানানো হয়। এরপর প্রথম আলোতে কেয়াকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে প্রচুর সাড়া মেলে। কেয়ার নামে ৩৫ লাখের বেশি টাকা সহায়তা পাওয়া যায়। ওই টাকা থেকেই চলছে চিকিৎসা।
পারভেজ জানান, প্রথমে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করার কথা থাকলেও কেমোথেরাপি দিয়েই ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলে ভারতের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
কেমো শুরু হওয়ার পর অন্যান্য শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি কেয়ার মাথার চুল পড়তে শুরু হলে কেয়া পুরো মাথা ন্যাড়া করে ফেলেন। পারভেজ বললেন, এখন কেয়ার মাথাভর্তি চুল। সেই চুল প্রায় ঘাড় ছাড়িয়েছে। কেয়া আবার পড়াশোনা শুরু করেছেন। এরই মধ্যে কেয়া প্রথম শ্বশুরবাড়িতে পা রাখেন। এখন শ্বশুরবাড়ি ও বাবার বাড়ি দুই জায়গাতেই থাকছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনের বাড়ি রাজবাড়ী সদরে। পারভেজ এখন স্বপ্ন দেখছেন একটি ভালো চাকরি পাওয়ার। চাকরি পেলেই সামনে পথচলা আরেকটু মসৃণ হবে তাঁদের।
কেয়ার সহায়তায় যাঁরা হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের ভুলে যাননি পারভেজ। তিনি বলেন, ‘কেয়াকে যাঁরা সহায়তা করেছেন, অন্তর থেকে তাঁদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ওই সময় দ্রুত চিকিৎসা করাতে না পারলে কেয়া আজ কোথায় থাকত, তা ভাবতেও ভয় লাগে। আমাদের পক্ষে কেয়ার চিকিৎসা করানো কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। যাঁরা কেয়াকে সহায়তা করেছেন, তাঁদের প্রতি অনুরোধ, কেয়ার মতো আরও অনেক কেয়া আছে। সব কেয়ার মুখেই যাতে হাসি ফোটে।’
প্রথম আলোর সৌজন্যে
মুঠোফোনে কেয়া বলেন, ‘ডাক্তার বলেছেন, আপাতত আমি সুস্থ আছি।’ এ কথা বলার সময় মুঠোফোনে তাঁর হাসির শব্দ শোনা যায়, এতে ছিল অনাবিল আনন্দের অনুভূতি। স্বামী পারভেজ বললেন, ‘এইবার যখন কেয়াকে নিয়ে ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসপাতালে যাই, ডাক্তার জানতে চান, রোগী কে? কেয়াকে দেখে তো রোগীর মতো মনে হচ্ছিল না।’
এই দম্পতির মুখে এখন শুধুই হাসি। বিয়ের পাঁচ মাসের মাথায় গত বছর জানা গিয়েছিল, কেয়ার শরীরে বাসা বেঁধেছে ব্লাড ক্যানসার (এএমএল)। কেয়া শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগেই গিয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে ভারতের হাসপাতালে। সেখানে দীর্ঘ চার মাস চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরেন। তারপর নিয়মিত ফলোআপে যাচ্ছেন ভারতে।
স্ত্রীর অসুখের খবরে মধুচন্দ্রিমায় যাওয়া, একটি ভালো চাকরি পাওয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে তরুণ পারভেজ দৌড়ে বেড়িয়েছেন হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে। সম্প্রতি চিকিৎসকের কাছ থেকে আসার পর এই দম্পতি কিছুটা থিতু হয়েছেন। এভাবে যদি তিন-চার বছর পার করা যায়, তবে কেয়ার সুস্থতার বিষয়ে হাঁপ ছাড়া যাবে বলে জানিয়েছেন সেখানকার চিকিৎসকেরা।
গত বছরের ৮ জুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগে ভর্তি হন কেয়া। তখন সেখানকার চিকিৎসকেরা বলেন, কেয়ার ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ভারতে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন তাঁরা। তাঁরা বলেন, এই চিকিৎসায় ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা খরচ হতে পারে।
পারভেজ ২০১৪ সালের নভেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ (অ্যাকাউন্টিং) সম্পন্ন করে বের হয়েছেন। অন্যদিকে, স্ত্রী কেয়া খাতুন তখন রাজবাড়ী সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছেন। পছন্দের বিয়ে। সব মিলে ওই সময় তাঁদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
পারভেজের বাবা বাসের চালক। তিন ভাইয়ের মধ্যে পারভেজ বড়। সংসারের হাল তাঁর ধরার কথা। সবাই সে আশাতেই ছিলেন। অন্যদিকে, কেয়ার বাবা রেলওয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। চার বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে কেয়া সবার ছোট। এই দুই পরিবারের পক্ষে কেয়ার চিকিৎসা খরচ চালানো অসম্ভব ছিল।
তবে কেয়া ও পারভেজের বিপদে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন দেশের মানুষ। পারভেজের বন্ধু ও স্বজনদের সহায়তায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সাহায্যের আবেদন জানানো হয়। এরপর প্রথম আলোতে কেয়াকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে প্রচুর সাড়া মেলে। কেয়ার নামে ৩৫ লাখের বেশি টাকা সহায়তা পাওয়া যায়। ওই টাকা থেকেই চলছে চিকিৎসা।
পারভেজ জানান, প্রথমে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করার কথা থাকলেও কেমোথেরাপি দিয়েই ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে বলে ভারতের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
কেমো শুরু হওয়ার পর অন্যান্য শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি কেয়ার মাথার চুল পড়তে শুরু হলে কেয়া পুরো মাথা ন্যাড়া করে ফেলেন। পারভেজ বললেন, এখন কেয়ার মাথাভর্তি চুল। সেই চুল প্রায় ঘাড় ছাড়িয়েছে। কেয়া আবার পড়াশোনা শুরু করেছেন। এরই মধ্যে কেয়া প্রথম শ্বশুরবাড়িতে পা রাখেন। এখন শ্বশুরবাড়ি ও বাবার বাড়ি দুই জায়গাতেই থাকছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনের বাড়ি রাজবাড়ী সদরে। পারভেজ এখন স্বপ্ন দেখছেন একটি ভালো চাকরি পাওয়ার। চাকরি পেলেই সামনে পথচলা আরেকটু মসৃণ হবে তাঁদের।
কেয়ার সহায়তায় যাঁরা হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের ভুলে যাননি পারভেজ। তিনি বলেন, ‘কেয়াকে যাঁরা সহায়তা করেছেন, অন্তর থেকে তাঁদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ওই সময় দ্রুত চিকিৎসা করাতে না পারলে কেয়া আজ কোথায় থাকত, তা ভাবতেও ভয় লাগে। আমাদের পক্ষে কেয়ার চিকিৎসা করানো কোনোভাবেই সম্ভব ছিল না। যাঁরা কেয়াকে সহায়তা করেছেন, তাঁদের প্রতি অনুরোধ, কেয়ার মতো আরও অনেক কেয়া আছে। সব কেয়ার মুখেই যাতে হাসি ফোটে।’
প্রথম আলোর সৌজন্যে
খবর বিভাগঃ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়