Sunday, November 20

‘বিকট শব্দের পর দেখি আমাদের বগি বাতাসে উড়ছে’

‘বিকট শব্দের পর দেখি আমাদের বগি বাতাসে উড়ছে’

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: ইন্দোর-পাটনা এক্সপ্রেস ট্রেনে ৪৫জন আত্মীয়ের সঙ্গে ভ্রমণ করছিলেন দীপিকা ত্রিপাটি। মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ঘুমিয়েছেন। হঠাৎ করে বিকট শব্দে ঝাঁকি খেলেন তিনি। খেয়াল করলেন তার চারপাশ অন্ধকার হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পরই বুঝতে পারলেন, তিনি যে বগিতে আছেন তা বাতাসে উড়ছে।

এভাবেই নিজের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিলেন কানপুরে ট্রেন দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া যাত্রী দীপিকা। রবিবার ভোরে এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯৬ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত শতাধিক যাত্রী। দুর্ঘটনায় ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়। দুটি বগিতেই বেশির ভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনাস্থলে মা-বাবার সঙ্গে উপস্থিত থাকা দীপিকা বলেন, ‘কিভাবে জানি আমি বগির উপরে উঠে আসি। তখনই বুঝতে পারি কি ঘটেছে। আমাদের ৫জন আত্মীয়ের কোনও খোঁজ পাচ্ছি না। তারা অন্য বগিতে ছিলেন।’

৬০ বছরের বিন্দ কুমার ত্রিপাটিও দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধুরা প্রথম ও দ্বিতীয় বগিতে ছিলো। তারা গুরুতর আহত হয়েছে।’

পুলিশ ও রেল কর্মকর্তারা জানান, ট্রেনটি ইনদোর থেকে পটনা যাচ্ছিল। রবিবার ভোর সোয়া ৩টার দিকে মালাসার ও পুখরাইয়া স্টেশনের মাঝে ট্রেনটির ১৪টি বগি লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনার সময় বেশিরভাগ যাত্রী ঘুমাচ্ছিলেন। একটি উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন রেলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী সুরেনশ প্রভু দুর্ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। টুইটারে তিনি জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় কারও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর শাস্তি প্রদান করা হবে। তিনি নিজেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব পুলিশের ডিআইজিকে নির্দেশ দিয়েছেন ব্যক্তিগতভাবে উদ্ধারকাজ তদারকি করার জন্য।

দুর্ঘটনায় পড়া ট্রেনের লাইনচ্যুত বগিগুলোতে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার কাজ চলছে। জাতীয় দুর্যোগ প্রতিরোধ ও উদ্ধারকারী বাহিনীর পাশাপাশি আড়াইশ’ জওয়ানও উদ্ধার কাজে অংশ নিচ্ছেন। জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা দলজিৎ সিং চৌধুরী জানিয়েছেন, গ্যাস কাটারসহ ভারি যন্ত্রপাতি দিয়ে ট্রেনের ধ্বংসস্তুপে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

রেল মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় আটকে পড়া যাত্রীদের ঘটনাস্থল থেকে মালাসা স্টেশনে নেওয়া হয়েছে। আহত যাত্রীদের কানপুর দেহাত হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। কানপুর রেঞ্জের পুলিশের আইজি জাকি আহমেদ জানান, সবগুলো হাসপাতালকে সতর্ক করা হয়েছে। ৩০টি অ্যাম্বুলেন্স আহত যাত্রীদের বহনে কাজ করছে। সূত্র: এনডিটিভি।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়