Wednesday, November 2

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: অনেকেই হয়তো জানেনই না তিনি কিডনি রোগে আক্রান্ত। তাই এ রোগকে অনেকে নীরবঘাতক হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকেন। আসুন কিডনি রোগ সম্পর্কে কিছু সাধারণ ও প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নেই।

কাদের হয়? কেন হয়?

কিডনি রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো বয়সসীমা অথবা লিঙ্গভেদ নেই। যে কোনো বয়সের নর-নারী জীবনের যে কোনো সময়ে কিডনি রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। কিডনি রোগের কারণ বিবিধ। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিচের কারণগুলোকে প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়:

*দীর্ঘমেয়াদি অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ। *দীর্ঘমেয়াদি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস। *কিডনি প্রদাহ। *ডায়রিয়ার পর অতিরিক্ত পানিশূন্যতা। *এন্টিবায়োটিক, ব্যথানাশক ওষুধ অথবা অন্য যে কোনো ওষুধের এমনকি আয়ুর্বেদিক, হোমিও, কবিরাজি ইত্যাদি ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। *অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে অথবা অন্য যে কোনো কারণে শরীর থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে হঠাত্ রক্তচাপ কমে যাওয়া। *দীর্ঘমেয়াদি মূত্রনালীতে প্রদাহ। *কিডনিতে পাথর, মূত্রনালীতে পাথর, কিডনি অথবা মূত্রনালীর জন্মগত ত্রুটি কিংবা অন্য কোনো কারণে মূত্রনালী সরু হয়ে প্রস্রাবের স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে। *বংশগত কিডনি রোগ থাকলে।

কিডনি রোগের প্রকারভেদ:

বৃহত্তর সংজ্ঞায় কিডনি রোগকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়—
১. সাময়িক বা স্বল্পমেয়াদি কিডনি রোগ।
২. দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ।
৩. স্থায়ী কিডনি বিকল রোগ।

এই তিন ভাগের মধ্যে সাময়িক বা স্বল্পমেয়াদি কিডনি রোগ সাধারণত দ্রুত ও যথাযথ চিকিত্সার মাধ্যমে ভালো করা সম্ভব। ফলে কিডনি সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়। তবে অহেতুক সময়ক্ষেপণ অথবা অপচিকিত্সা স্থায়ীভাবে কিডনি বিকল করে দিতে পারে।

অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীর কিডনি যথাযথ চিকিত্সা নেয়ার পরও এক সময় স্থায়ী কিডনি বিকল পর্যায়ে চলে যেতে পারে।

স্থায়ী কিডনি বিকল রোগে আক্রান্ত রোগীর কিডনি স্থায়ীভাবে বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে কখনোই আর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে না।

লক্ষণ সমূহ:
প্রথমেই বলে নেয়া ভালো, লক্ষণ দেখে কিডনি রোগ শনাক্ত করা দুরূহ। বরং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোন লক্ষনই প্রকাশ পায় না। তবে খুব সাধারণভাবে কিডনি রোগের লক্ষণগুলো হলো :

*খাবারে অরুচি বা ক্ষুধামন্দা *বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া *শারীরিক দুর্বলতা *কোমরের দুই পাশে কিংবা পেছনের নিচের দিকে মৃদু থেকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করা। *মুখণ্ডল, হাত-পা এমনকি সারা শরীর ফুলে যাওয়া *দিন দিন প্রস্রাবের পরিমাণ কমতে থাকা অথবা একেবারেই প্রস্রাব না হওয়া অথবা হঠাত্ প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া।

তবে এ লক্ষণগুলোই কিডনি রোগের চূড়ান্ত লক্ষণ নয়। ক্ষুধামন্দা, বমি হওয়া, শারীরিক দুর্বলতার যেমন অনেক কারণ রয়েছে তেমনি কোমরে ব্যথা অথবা শরীর ফুলে যাওয়ার কিডনি রোগ ছাড়াও অন্য অনেক কারণ রয়েছে। আবার প্রকারভেদে কিডনি রোগের লক্ষণগুলোরও হেরফের হয়। অন্যদিকে অল্পকিছু রোগীর মাঝে কিডনি রোগের কোনো লক্ষণই খুঁজে পাওয়া যায় না। এই রোগীরা অন্য দশজন সুস্থ মানুষের মতোই জীবনযাপন করেন। রুটিন চেকআপ অথবা অন্যকোন রোগের চিকিত্সার জন্য পরীক্ষা করতে গিয়ে দৈবাত তাদের কিডনি রোগ ধরা পড়ে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়