Monday, November 14

পালানোর আগে পুলিশের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করছিল ধর্ষক রুবেল!

পালানোর আগে পুলিশের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টা করছিল ধর্ষক রুবেল!
কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: গারো তরুণীকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি রাফসান হোসেন রুবেল (৩০) গতকাল বিকেলে আদালতে থেকে পালিয়ে যান। বিচারকের খাসকামরার বাইরে থেকে আসামি পালানোর ঘটনা এটাই প্রথম। এই ধর্ষক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে রোববার বিকেলে নেওয়া হয় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। সেখান থেকেই সটকে পড়েছে আলোচিত মামলার এ আসামি। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

র‍্যাব গারো তরুণী ধর্ষণ মামলায় রুবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশে হস্তান্তর করেছিল। তবে পুলিশের সঙ্গে সখ্য থাকায় সে গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। পালিয়ে যাওয়ার পর ওই বিষয়টি ফের আলোচনায় এসেছে। গতকাল রুবেল পালিয়ে যাওয়ার পর দায়িত্বে অবহেলার জন্য বাড্ডা থানার এসআই ইমরানুল হাসান ও কনস্টেবল দীপক চন্দ্র পোদ্দারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আদালত প্রাঙ্গণ থেকে আসামি পলায়নের ঘটনা অনেক থাকলেও বিচারকের খাসকামরা থেকে আসামি পালানোর নজির নেই। কোনো আসামি স্বীকারোক্তি দিতে চাইলে তাকে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য বিচারকের খাসকামরায় নেওয়া হয়। তার আগে আসামিকে বারান্দায় বসিয়ে রাখলেও তদন্ত কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে দুজন পুলিশ পাহারায় থাকে। এ অবস্থায় সিএমএম আদালতের নিরাপত্তায় চরম অব্যবস্থাপনাকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পুলিশ ও কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছাড়া এ ঘটনা ঘটেনি বলেও মনে করছেন তারা।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গারো তরুণীকে অপহরণের পর ধর্ষণের ঘটনা স্বীকার করেছে আসামি রুবেল। পুলিশের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়ার পর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিতে চায় সে। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ তাকে নিয়ে যায় আদালত ভবনের অষ্টম তলায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাব্বির ইয়াসির আহসান চৌধুরীর খাসকামরায়। জবানবন্দি রেকর্ডের আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক ইমরানুল হাসান আসামিকে বারান্দায় বসিয়ে রাখেন। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা বিচারকের কক্ষে ঢুকতেই সটকে পড়ে রুবেল।

এর আগে ওই তরুণীকে ধর্ষণ ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ ১৮ দিনেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি রুবেলকে। প্রভাবশালী পরিবারের এই বখাটের বিরুদ্ধে আগেও এ ধরনের অভিযোগ ছিল। নানা সূত্রে সংবাদ জেনে র‍্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে শনিবার থানায় সোপর্দ করে।

আদালতের কর্মচারীরা জানিয়েছেন, স্বীকারোক্তির জন্য যখন আসামি রুবেলকে আদালতে আনা হয়, তখন সঙ্গে থাকা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে হেসে হেসে কথা বলতে দেখা গেছে তাকে। আদালতের খাসকামরার পেছনের বারান্দায় সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষেধ। সেখান থেকে পুলিশের নজর এড়িয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ কম।

ঢাকার আদালতের আইনজীবী ফিরোজ আহমেদ বলেন, আদালতের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবতে হবে এখন। আলোচিত ধর্ষণ ঘটনার আসামির সঙ্গে পুলিশের হাসি-ঠাট্টা ও পালিয়ে যাওয়া অনেক কিছু ইঙ্গিত করে। এ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা উচিত।

রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় গত ২৫ অক্টোবর বিউটি পার্লারে কর্মরত এক গারো তরুণী ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় সালাউদ্দিন নামের এক সহযোগীকে পুলিশ আটক করলেও রুবেল পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। গত শুক্রবার রাতে র্যাব বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকা থেকে আসামি রাফসান হোসেন রুবেলকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই সে র্যাবের কাছে ধর্ষণ ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়। চাঞ্চল্যকর এ ধর্ষণ ঘটনার পর গারো সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন সংগঠন বিচারের দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছিল। 
---- বিডিলাইভ

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়