Wednesday, November 2

১০ বছরে পা রাখল সিকৃবি


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: ২ নভেম্বর ২০০৬ সাল সিলেটের শিক্ষার ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। তৎকালীন সিলেট সরকারী ভেটেরিনারী কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়। দেশের চর্ত্থু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় । দেখতে দেখতে ১০ বছরে পা রাখল বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের উত্তর পূর্ব কোণে অবস্থিত হযরত শাহজালাল (রঃ) , শাহপরান (রঃ) স্মৃতি বিজড়িত পূণ্যভুমি সিলেটের অপার সম্ভাবনার হাজার হাজার অনাবাদি হাওর , টিলা ও সমতল জমিকে ব্যবহার করে স¤পদে পরিণত করার লক্ষ্য নিয়ে যাত্রা আরম্ভ করে সিকৃবি। শুরুতে কেবলমাত্র একটি অনুষদ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও সময়ের সাথে সাথে কৃষি , মাৎস্যবিজ্ঞান , কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা, কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরী , বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ চালু হয়। বাংলাদেশ তথা হাওর অঞ্চলের কথা চিন্তা করে রয়েছে দুটি বিশেষায়িত বিভাগ- (১) হাওর এগ্রিকালচার এবং (২) কোস্টাল ও মেরিন সায়েন্স। সিলেট নগরী থেকে ৭ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে ছোট ছোট টিলা বেষ্টিত মাত্র ৫০ একরের উপর দাঁড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যা¤পাস। এই স্বল্প জায়গার মধ্যে রয়েছে-৪টি একাডেমিক ভবন, ৬ টি আবাসিক হল, প্রশাসনিক ভবন, লাইব্রেরী, মিলনায়তন, উপাচার্য বাসভবন, ক্যাফেটেরিয়া, ব্যাংক, টিচার্স কোয়ার্টার , কর্মকর্তা কোয়ার্টার, স্টাফ কোয়ার্টার, ভেটেরিনারী ক্লিনিক প্রভৃতি । নির্মাণাধীন আছে-নতুন উপাচার্য বাসভবন, ছাত্র হল , শহীদ মিনার, লাইব্রেরী ভবন, ভেটেরিনারী ক্লিনিক, একাডেমিক ভবন, ছাত্র শিক্ষক মিলনায়তন, শিক্ষক কর্মকর্তা কোয়ার্টার , খামার বাড়ি, নতুন রাস্তা নির্মাণ। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় রয়েছে-নানা সমস্যা। শিক্ষকের অপ্রতুলতার কারণে প্রায়ই ক্লাস নিয়মিত হয় না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের । রয়েছে আবাসন সমস্যা, নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগের অভাব, ডাইনিং এ মানহীন খাবার। বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই কোন খেলার মাঠ ও আধুনিক অডিটোরিয়াম। শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য তিনটি বাস থাকলেও সংস্কারের অভাবে প্রায় সময়ই বাস চলাচল বন্ধ থাকে, যার ফলে শহর থেকে আগত শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সকল সমস্যা ছাপিয়ে গিয়েছে গবেষণার জন্য জায়গার অভাব। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমির পরিমাণ প্রায় ৫০ একর। এর মধ্যে আবার বেশীর ভাগ টিলা। তবে আশার কথা হচ্ছে-খাদিম নগর বাইপাস সংলগ্ন ১২.৩ একর জমি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে সিলেট জেলা প্রশাসন অধিগ্রহণ করেছে। আরো ১৫ একর জমি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ জমি বহিঃ ক্যা¤পাস গবেষণার জমি হিসেবে ব্যবহৃত হবে। সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এত সমস্যার মধ্যেও বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে আপন গতিতে। ছাত্র শিক্ষক মধুর স¤পর্ক , সেশনজট মুক্ত, স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা, প্রশাসনের আন্তরিকতা , হরতাল অবরোধের মধ্যেও ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় সর্ব মহলের নিকট প্রশংসিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। আশার আলো দেখাচ্ছেন-বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ডঃ শহীদুল ইসলাম উদ্ভাবন করেছেন গ্রীষ্মকালীন সিম – ১,২ । যার ফলে এখন সিম খাবার জন্য শীতের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। তাছাড়া ফসলের আগাছা দমন, সরিষার জাত উদ্ভাবন, আইড় মাছের কৃত্রিম প্রজনন ইত্যাদি বিষয়ে গবেষণা চলছে। শিগগিরই এসকল গবেষণার সাফল্যের মুখ দেখবে। এছাড়া, অনেক শিক্ষক বর্তমানে উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে আছেন, পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের পাঠদান আরও মানমসম্মত করবে। বিশ্ববিদ্যালয়কে সাফল্যের সাথে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশ বরেণ্য প্রাণিবিজ্ঞানী অধ্যাপক ডঃ মোহাম¥দ গোলাম শাহী আলম । বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তার অভিমত জানতে চাইলে তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সিলেন্স করে গড়ে তোলা আমার লক্ষ্য। একদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশ তথা জাতিকে নেতৃত্ব দিবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক প্রধান রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম শোয়েব বলেন,সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শুধু সিলেট নয়, সমগ্র দেশের কৃষির অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়