কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
সত্যিই যেকোন সময় পরিবর্তন হতে পারে মানুষের জীবনের গতিপথ। আর তেমনই একজন
দিশেহারা জীবন নৌকার নাবিক মো. ফখরুল ইসলাম। এক সময় একটি মাল্টিলেভেল
মার্কেটিং কোম্পানির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ছিলেন। সহস্র লোক তার তত্ত্বাবধানে
থেকে কাজ করেছে। লাখ লাখ টাকা নাড়াচাড়া করেছেন।
কিন্তু এখন তার পরিচয়, তিনি একজন রিকশাচালক। রাজধানীর রাজপথে রিকশা চালাচ্ছেন তিনি।
সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা হারিয়েছেন। ফলে ইঞ্জিনচালিত রিকশা চালান। মধ্যবিত্ত পরিবারের এই মানুষটি লোকলজ্জা ভুলে শুধুমাত্র জীবিকার তাগিদে রিকশা চালাচ্ছেন। অতিকষ্টে কাটছে তার দিন। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী ফখরুল ইসলাম এখনো বিশ্বাস করেন তার দ্বারা বিরাট কিছু করা সম্ভব। সেই সম্ভাবনাকে জিইয়ে রেখেই ঢাকা শহরের পিচঢালা পথ পাড়ি দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
নিজের জীবনের গল্প বলতে গিয়ে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঢাকা শহরে আছি অনেক বছর। ভালোই ছিলাম। প্রথম দিকে ঢাকায় এসে ছোটখাটো চাকরি করতাম। এরপর সকলের পরিচিত একটি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানিতে যোগ দেই। সেখানে আমি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হয়েছিলাম। বউ, ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভালোই যাচ্ছিল দিনকাল। কিন্তু হঠাৎ কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমি বিপাকে পড়ে যাই। রীতিমতো অসহায় হয়ে যাই। কাছের আত্মীয়-স্বজন, এলাকার লোকজন অনেকের কাছ থেকে টাকা এনেছিলাম। কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবাই সে টাকা চাইতে লাগল। দেই দিচ্ছি করে সময় ক্ষেপণ করছিলাম। অতো টাকা একসঙ্গে দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাছাড়া টাকা তো আর আমার কাছে ছিল না। কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিলাম। আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে টাকার লেনদেন করলে বোঝা যায় কোন আত্মীয় কেমন। আমি বুঝেছি।
আস্তে আস্তে তাদের চাওয়ার ধরণ অপমানের পর্যায়ে যেতে থাকে। আমার মান সম্মান ধুলোয় মিশে যায়। টাকার টেনশন আমাকে পেয়ে বসে। সারাক্ষণ টাকা-পয়সার চিন্তা মাথায় ঘুরত। অপমানিত হওয়ার টেনশন মাথায় ঘুরত। কাকে কীভাবে বোঝাব, সামাল দেব সেই চিন্তায় মগ্ন থাকতে হত। সেই টেনশনে একদিন রাস্তা পার হওয়ার সময় আমি সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হই। আমার একটি পা কাটা পড়ে। চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ হয়। আমার কিছু ভাই-বন্ধুর সহায়তায় চিকিৎসা করাই। লম্বা সময় অসুস্থ ছিলাম। সুস্থ্য হয়ে ফেরার পর একটা পা-হীন এই আমি কী করব? কোথায় যাব? কীভাবে বাঁচব? অনেক কষ্টে তিন বছর চলে যায়। অবশেষে এক ভাই আমাকে বুদ্ধি দিল- তুই ঢাকা শহরে গিয়ে রিকশা চালা। তোকে তো কেউ চিনবে না। তাছাড়া বাঁচতে হলে কিছু একটা তো করে খেতে হবে। তিনি কিছু টাকাও দিলেন। সেই টাকা দিয়ে ও আরো ধারকর্জ করে এই রিকশা বানাই। দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় রিকশা চালাই। বাকি সময় নতুন একটি কোম্পানিতে সময় দেই।’
দুর্ঘটনার পর তার জীবনের গতিপথ বদলে যায়। বন্ধ করে দিতে হয় ছেলেদের পড়াশোনা। মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এক সময় আমার তিন ছেলেই পড়াশোনা করত। কিন্তু আমি দুর্ঘটনার শিকার হলে তাদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটে। বড় ছেলের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি। সে বর্তমানে কাজ করছে। আমার স্ত্রী দুই ছেলেকে নিয়ে বি.বাড়িয়া থাকেন।’
নিজের জীবন দর্শন সম্পর্কে মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আসলে মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়ার চেয়ে ফকিরের ঘরে জন্ম নেওয়া ভালো। আমি ফকিরের ঘরে জন্ম নিলে মানুষের কাছে হাত পেতে কিছু চাইতে পারতাম। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়ায় সে উপায় নেই। তাই রিকশা চালাতে হচ্ছে। তবে আমি বিশ্বাস করি এখনো ভালো কিছু করা সম্ভব। আমি রিকশা চালানোর পাশাপাশি আর একটি কোম্পানিতে চাকরি করছি। সেখানে আমার আন্ডারে বেশ কিছু তরুণ ছেলে-মেয়ে কাজ করছে। আশা করছি এক সময় আমি ভালো অবস্থায় যেতে পারব। জীবন আসলে থেমে থাকে না। ভালো কিংবা মন্দ- একভাবে জীবন চলেই যায়। এক সময় বেশ ভালো ছিলাম।
তিনি বলেন, এখন খারাপ সময় যাচ্ছে। হয়তো আবার ভালো সময় ফিরে আসবে। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। চেষ্টার ফল যদি আল্লাহ দেন।’
কিন্তু এখন তার পরিচয়, তিনি একজন রিকশাচালক। রাজধানীর রাজপথে রিকশা চালাচ্ছেন তিনি।
সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা হারিয়েছেন। ফলে ইঞ্জিনচালিত রিকশা চালান। মধ্যবিত্ত পরিবারের এই মানুষটি লোকলজ্জা ভুলে শুধুমাত্র জীবিকার তাগিদে রিকশা চালাচ্ছেন। অতিকষ্টে কাটছে তার দিন। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী ফখরুল ইসলাম এখনো বিশ্বাস করেন তার দ্বারা বিরাট কিছু করা সম্ভব। সেই সম্ভাবনাকে জিইয়ে রেখেই ঢাকা শহরের পিচঢালা পথ পাড়ি দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
নিজের জীবনের গল্প বলতে গিয়ে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঢাকা শহরে আছি অনেক বছর। ভালোই ছিলাম। প্রথম দিকে ঢাকায় এসে ছোটখাটো চাকরি করতাম। এরপর সকলের পরিচিত একটি মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানিতে যোগ দেই। সেখানে আমি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হয়েছিলাম। বউ, ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভালোই যাচ্ছিল দিনকাল। কিন্তু হঠাৎ কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমি বিপাকে পড়ে যাই। রীতিমতো অসহায় হয়ে যাই। কাছের আত্মীয়-স্বজন, এলাকার লোকজন অনেকের কাছ থেকে টাকা এনেছিলাম। কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবাই সে টাকা চাইতে লাগল। দেই দিচ্ছি করে সময় ক্ষেপণ করছিলাম। অতো টাকা একসঙ্গে দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাছাড়া টাকা তো আর আমার কাছে ছিল না। কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিলাম। আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে টাকার লেনদেন করলে বোঝা যায় কোন আত্মীয় কেমন। আমি বুঝেছি।
আস্তে আস্তে তাদের চাওয়ার ধরণ অপমানের পর্যায়ে যেতে থাকে। আমার মান সম্মান ধুলোয় মিশে যায়। টাকার টেনশন আমাকে পেয়ে বসে। সারাক্ষণ টাকা-পয়সার চিন্তা মাথায় ঘুরত। অপমানিত হওয়ার টেনশন মাথায় ঘুরত। কাকে কীভাবে বোঝাব, সামাল দেব সেই চিন্তায় মগ্ন থাকতে হত। সেই টেনশনে একদিন রাস্তা পার হওয়ার সময় আমি সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হই। আমার একটি পা কাটা পড়ে। চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা খরচ হয়। আমার কিছু ভাই-বন্ধুর সহায়তায় চিকিৎসা করাই। লম্বা সময় অসুস্থ ছিলাম। সুস্থ্য হয়ে ফেরার পর একটা পা-হীন এই আমি কী করব? কোথায় যাব? কীভাবে বাঁচব? অনেক কষ্টে তিন বছর চলে যায়। অবশেষে এক ভাই আমাকে বুদ্ধি দিল- তুই ঢাকা শহরে গিয়ে রিকশা চালা। তোকে তো কেউ চিনবে না। তাছাড়া বাঁচতে হলে কিছু একটা তো করে খেতে হবে। তিনি কিছু টাকাও দিলেন। সেই টাকা দিয়ে ও আরো ধারকর্জ করে এই রিকশা বানাই। দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় রিকশা চালাই। বাকি সময় নতুন একটি কোম্পানিতে সময় দেই।’
দুর্ঘটনার পর তার জীবনের গতিপথ বদলে যায়। বন্ধ করে দিতে হয় ছেলেদের পড়াশোনা। মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এক সময় আমার তিন ছেলেই পড়াশোনা করত। কিন্তু আমি দুর্ঘটনার শিকার হলে তাদের পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটে। বড় ছেলের পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছি। সে বর্তমানে কাজ করছে। আমার স্ত্রী দুই ছেলেকে নিয়ে বি.বাড়িয়া থাকেন।’
নিজের জীবন দর্শন সম্পর্কে মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আসলে মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়ার চেয়ে ফকিরের ঘরে জন্ম নেওয়া ভালো। আমি ফকিরের ঘরে জন্ম নিলে মানুষের কাছে হাত পেতে কিছু চাইতে পারতাম। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়ায় সে উপায় নেই। তাই রিকশা চালাতে হচ্ছে। তবে আমি বিশ্বাস করি এখনো ভালো কিছু করা সম্ভব। আমি রিকশা চালানোর পাশাপাশি আর একটি কোম্পানিতে চাকরি করছি। সেখানে আমার আন্ডারে বেশ কিছু তরুণ ছেলে-মেয়ে কাজ করছে। আশা করছি এক সময় আমি ভালো অবস্থায় যেতে পারব। জীবন আসলে থেমে থাকে না। ভালো কিংবা মন্দ- একভাবে জীবন চলেই যায়। এক সময় বেশ ভালো ছিলাম।
তিনি বলেন, এখন খারাপ সময় যাচ্ছে। হয়তো আবার ভালো সময় ফিরে আসবে। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। চেষ্টার ফল যদি আল্লাহ দেন।’
খবর বিভাগঃ
ফিচার
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়