Saturday, October 8

গাজীপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আরও ৭ জঙ্গি নিহত

গাজীপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আরও ৭ জঙ্গি নিহত
কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: গাজীপুরের পাতারটেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযানে সাত জঙ্গি নিহত হয়েছে। জঙ্গিরা অবস্থান করছে এমন খবরে শনিবার সকালে গাজীপুরের ওই বাড়িতে অভিযানে নামে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান ‘অপারেশন শরতের তুফানে’ ওই আস্তানায় থাকা সাত ‘জঙ্গি’ নিহত হয়। সকাল ১০টার দিকে অভিযান শুরুর পর জঙ্গিরাও পাল্টা আক্রমণ চালিয়েছিল। কিন্তু কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট, সোয়াত, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও জেলা পুলিশের যৌথ অভিযানে শেষ পর্যন্ত ৭ জঙ্গি নিহত হয়।

সকালে গাজীপুরের যে স্থানটিতে র‌্যাবের অভিযানে সন্দেহভাজন দুই জঙ্গি নিহত হন, তার আধা কিলোমিটারের মধ‌্যে পাতারটেক নামক স্থঅনে এই জঙ্গি আস্তানাটি। যেখানে দিনব্যাপি পুলিশের অভিযানে নিহত হয়েছেন অপর সাতজন। নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি। তাদের বয়স ১৭ থেকে ২৫ বছরের মধ‌্যে বলে জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেন। ঘটনাস্থলে থেকে বেশ কয়েকটি অস্ত্র উদ্ধারের কথাও জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার।

ঘটনার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও সেখানে যান। তিনিও গণমাধ্যমকে সাত জঙ্গি নিহতের খবর নিশ্চিত করেছেন।

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামও ঘটনাস্থলে রয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'নব্য জেএমবির ঢাকা বিভাগীয় কমান্ডার আকাশ তার সহযোগীদের নিয়ে এই বাড়িতে অবস্থান করছে- এমন খবরে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।' গাজীপুরের স্থানীয় পুলিশকে নিয়ে র‌্যাব, সোয়াট ও সিটির সদস্যরা এই অভিযান চালাচ্ছে।

গাজীপুরের দ্বিতীয় অভিযানে সিটিটিসির সঙ্গে সোয়াত টিম যুক্ত ছিলো। সেখানে গোলাগুলি চলে বিকাল পৌনে চারটা পর্যন্ত। এর আগে শনিবার ভোরে পশ্চিম হারিনালে জঙ্গি আস্তানায় র‌্যাবের অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত হয়।

দোতলা ওই বাড়ির মালিক সোলায়মান সরকার। তিনি সৌদি আরবে থাকেন। বাড়িটি দেখাশোনা করেন তার ভাই ওসমান গনি। ওই বাড়ির এক ভাড়াটিয়া জানান, মাস তিনেক আগে বাড়িটি ভাড়া নেয় সন্দেহভাজন জঙ্গিরা। তারা বাসা থেকে বের হতো না।

নব্য জেএমবির ঢাকা বিভাগের কমান্ডার ফরিদুল ইসলাম আকাশ ও তার সহযোগীরা সেখানে অবস্থান করছেন এমন তথ্যের ভিত্তিতে ওই আস্তানা ঘিরে ফেলে সিটিটিসির সদস্যরা।

বিকেল পৌনে চারটার দিকে ঘটনাস্থলে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ভবনের দ্বিতীয় তলায় সাত জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, 'তামিম চৌধুরী নিহত হওয়ার পর আকাশের নেতৃত্বেই নব্য জেএমবি সংঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করেছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের শুরুতে জঙ্গিদের আত্মসমর্পন করতে বলা হয়। কিন্ত তা না করে তারা উল্টো পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশও আত্মরক্ষায় গুলি চালায়। পরে ভবনের দ্বিতীয় তলায় সাত জঙ্গির মরদেহ পাওয়া যায়।

তিনি আরও বলেন, পাতারটেকে জেএমবি এবং আইনশৃঙ্খলবাহিনীর গোলাগুলির মধ্যে সাতটি মৃতদেহ পাওয়া গেছে। জব্দ হয়েছে তিনটি অস্ত্র (কী অস্ত্র উল্লেখ করেননি), কয়েকটি চাপাতি, একটি গ্যাস সিলিন্ডার। গোলাগুলির মধ্যে ১৪টি গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়েছে।

তিনি বলেন, এ সময় কাউন্টার টেররিজমের একজন সদস্য আহত হয়। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।

প্রসঙ্গত, আজ সকালে গাজীপুরের পশ্চিম হারিনালের একটি বাড়িতে এবং টাঙ্গাইলের কাগমারা মির্জাঘাট এলাকার একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালায় র‌্যাব। দুই অভিযানে আরও চার জঙ্গি নিহত হয়েছে। সেখান থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়