Thursday, October 20

রহস্যাবৃত আমাজনের নিচে আরও বড় একটি নদী!

রহস্যাবৃত আমাজনের নিচে আরও বড় একটি নদী!
কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: পৃথিবীর দীর্ঘতম এই নদীটি দক্ষিণ আমেরিকায় অবস্থিত, নাম আমাজন নদী। এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৪০০ কিলোমিটার। বর্ষা মৌসুমে, আমাজন নদীর প্রস্থ ১৯০ কিলোমিটার বা ১২০ মাইল পর্যন্তও হয়ে যায় কখনও কখনও।

সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আমাজন নদীর নীচে একটি নতুন নদীর সন্ধান পেয়েছেন। প্রস্থে তা আমাজনের চেয়ে দ্বিগুণ বড়। প্রকৃতির অন্যতম বিস্ময় আমাজন অববাহিকা ও তার আশপাশের এলাকা। কত বিস্ময় যে এর অতলে লুকিয়ে রয়েছে তা বোধহয় একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন। আমাজন অববাহিকা পৃথিবীর অন্যতম বড় ও অনন্য বলে সারা বিশ্বে পরিচিত।

এটি বিস্তৃত ৭০ লাখ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। তবে এর বেশিরভাগটাই এখনও অজানা থেকে গেছে। যেমন একজন ব্রাজিলীয় বিজ্ঞানী আমাজন অববাহিকার নীচে একটি নতুন নদীর সন্ধান পেয়েছেন।

আমাজন অববাহিকায় নদীর ৪ কিলোমিটার গভীরে এই নদীটি বহমান। নাম রিও হামজা। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, আমাজন নদী যতটা দীর্ঘ এটিও দৈর্ঘ্যে ততটাই বড়। তবে প্রস্থে আমাজনের চেয়ে এটি অনেক বেশি বিস্তৃত।

জানা গেছে, আমাজন ও রিও হামজা দুটি নদীই প্রায় ৬ হাজার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পশ্চিম থেকে পূর্বের দিকে বয়ে চলেছে। তবে যেখানে আমাজন নদী প্রস্থে ১ কিলোমিটার থেকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত, সেখানে হামজা নদী ২০০ কিমি থেকে ৪০০ কিমি পর্যন্ত বিস্তৃত। দুটি নদীই উৎপত্তিস্থল থেকে শুরু করে শেষপর্যন্ত গিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে গিয়ে পড়েছে। উপরের আমাজন নদীর পানির গতিবেগ অনেক বেশি। প্রচুর বেশি পরিমাণে পানি বহন করে। সেখানে হামজার পানির বেগ অনেকটা স্থবির, শান্ত। কয়েকবছর আগে এই নিয়ে অনেক গবেষণার পরে নদীটির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

রিও হামজা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য ব্রাজিলের রিও ডি জেনারিওর ‘জিওফিজিক্যাল ন্যাশনাল অবজারভেটরি’তে সংগৃহীত রয়েছে। বলা হয়েছে, আমাজনের নীচে নদীর অস্তিত্ব খুঁজে বের করতে বিজ্ঞানীরা গণিত মডেলের সাহায্য নিয়েছেন। মাটির ও পানির নীচে তাপমাত্রার নানা পরিবর্তনকে লক্ষ্য করেও নয়া সূত্র পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে কীভাবে একবার উলম্বভাবে আবার কখনও দিগন্ত বিস্তৃতভাবে রিও হামজা নদীর প্রবাহপথ পরিবর্তিত হয়েছে।

প্রকৃতির এক অপার বিস্ময়ের নাম এই আমাজন নদী। অনেকগুলো শহরের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া আমাজন নদী সংলগ্ন সবচেয়ে বড় শহরটির নাম ‘ম্যানোস’। ব্রাজিলের এই শহরটিতে প্রায় ১.৭ মিলিয়ন মানুষ বসবাস করে। নদী মানেই সেখানে মাছের বসবাস। সেই নদী যদি হয় পৃথিবীর বৃহত্তম নদী, তাহলে তো মাছের রাজত্ব থাকা উচিত। আমাজন নদীতে সত্যিকার অর্থেই মাছের রাজত্ব আছে। এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় ৩০০০ প্রজাতির মাছ পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়তই আরও নতুন নতুন প্রজাতির মাছ আবিষ্কার করে চলেছেন।

আমাজনের অগভীর জলের মাঝে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাপ অ্যানাকোন্ডা। নদীর আশেপাশে কোন বড় প্রাণী এলেই অ্যানাকোন্ডা তাকে আক্রমণ করে এবং শিকার হিসেবে খেয়ে ফেলে।

শুধু অ্যানাকোন্ডাই নয়, আমাজনে লুকিয়ে থাকা আরেকটি মাংসাশী মাছের নাম পিরানহা। পিরানহা বেশ ভয়ঙ্কর। নদীতে নামা শিকারকে এরা একইসাথে দলবেঁধে আক্রমণ করে। বলা হয় কোনো জীবিত প্রাণী পিরানহার ঝাঁকের আক্রমণের শিকার হলে কিছুক্ষণ পরে সেখানে শুধু ঝকঝকে নতুন কংকাল পাওয়া যায়। তাই পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী যতটা দীর্ঘ, ততটাই বিপজ্জনক।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়