Wednesday, October 19

কে হাসবেন শেষ হাসি!

কে হাসবেন শেষ হাসি!

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: আর মাত্র দুইদিন পরই উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন। ক্ষমতাসীন দলের এই সম্মেলনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে দেশজুড়ে। প্রশ্ন একটাই কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক? সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, নাকি নতুন কেউ? এ নিয়ে এখনও রয়েছে অভেদ্য রহস্য। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে আরেক দফায় সাধারণ সম্পাদক করা নিয়ে দলের ভেতরে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি রয়েছে।

তবে নানা হিসাব-নিকাশ করে অনেকে বলছেন, সৈয়দ আশরাফই মন্দের ভালো। সাধারণ সম্পাদকের দৌড়ে রয়েছেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনকে ঘিরে তিনি আরও সক্রিয় হয়েছেন। তাকে নিয়েও নেতাকর্মীদের আগ্রহ তুঙ্গে। গত সম্মেলনেও এই দুই নেতা দলের সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় ছিলেন।

এখন পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আলোচনার পুরোভাগে থাকলেও শেষতক তাকে সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হবে কি হবে না এ নিয়ে নানা আলোচনা রয়েছে এই মুহূর্তে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী করার পর সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা সক্রিয় হয়েছেন।

অবশ্য পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় দলীয় কার্যক্রমের কোথাও তার উপস্থিতি দেখা যায়নি। জঙ্গিবাদবিরোধী আন্দোলনের মুহূর্তে মহাজোটের শরিক জাসদকে জড়িয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সরকারের জন্য কিছুটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিলেন।

দলের নেতাকর্মীরা নানা হিসাব-নিকাশ করছেন। কোনো স্পষ্ট চিত্র তাদের সামনে ভেসে উঠছে না। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামই এই মুহূর্তে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন। তবে শেষ হাসি কে হাসবেন, তা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে নেত্রীর ওপর।

দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানককে নিয়েও অনেকের আগ্রহ রয়েছে। বিশেষ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলনের মঞ্চ নির্মাণ থেকে শুরু করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে ব্যাপক সাজসজ্জার কাজ গুছিয়ে আনার বেলায় তার সাংগঠনিক দক্ষতা ব্যাপক প্রশংসা পেয়েছে। এ ছাড়া কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাকও সম্ভাব্য সাধারণ সম্পাদকের তালিকায় রয়েছেন। এরই মধ্যে তিনি দলের গঠনতন্ত্র উপপরিষদের আহ্বায়ক হিসেবে নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন।

কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণের আগ্রহ দেখালেও নেতাকর্মীরা তার বিকল্প হিসেবে কাউকে কল্পনাও করতে পারছেন না। তিনি টানা অষ্টম দফায়ও দলের সভাপতি হচ্ছেন তা মোটামুটি নিশ্চিত বলা যায়।

মূলত এ কারণেই এখন পর্যন্ত দলের সাধারণ সম্পাদক পদই এবারকার জাতীয় সম্মেলনের প্রধানতম আকর্ষণ হয়ে আছে। আগে টুকটাক আলোচনা হলেও সম্মেলনের দিন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে এ নিয়ে নীতিনির্ধারক নেতারা নিজেদের মধ্যেও কোনো কথা বলছেন না।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দলের নীতিনির্ধারক নেতারা বলেছেন, সাধারণ সম্পাদক পদে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত। নেতারা অবশ্য দলের সভাপতির মনোভাব জানার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

শুধু আওয়ামী লীগ নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি রাজনীতি সচেতন নাগরিকদের মধ্যেও সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন তা নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে।

এ ক্ষেত্রে আগামী দিনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়টি প্রধান ভাবনায় রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজনৈতিকভাবে বিচক্ষণ, দূরদর্শী, আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পারদর্শী, গ্রহণযোগ্য, অভিজ্ঞ ও আস্থাভাজন কাউকে সাধারণ সম্পাদক করবেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বিশ্বাস। একই সঙ্গে দক্ষ, মেধাবী ও যোগ্যতার মাপকাঠিতে সেরা এক ঝাঁক তরুণ নতুন কমিটিতে আসবেন বলে সবার প্রত্যাশা।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, ৭৩ সদস্যের বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাঠামো এবার ৮১-তে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এর মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সংখ্যা হবে ১৯। সভাপতিমণ্ডলীর বর্তমান ১২ সদস্যের মধ্যে রদবদলের সম্ভাবনা খুব কম। তবে কয়েকজন ছিটকে পড়লেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে নেতারা আভাস দিয়েছেন। বর্তমান কার্যনির্বাহী সংসদের প্রথম সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহকে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করার সম্ভাবনা রয়েছে। সাধারণ সম্পাদক না হলে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হতে পারেন ড. আবদুর রাজ্জাক। আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খানকেও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে।

এ ছাড়াও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের চার পদ, সাংগঠনিক সম্পাদকের আট পদসহ সম্পাদকমণ্ডলী এবং কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যপদে অনেক নতুন মুখ আসবে বলে নেতারা মনে করছেন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়