নিজস্ব প্রতিবেদক:
কানাইঘাটে পরকীয়া প্রেমের জের ধরে নিখোঁজের ৪দিন পর শনিবার রাতে এক দর্জির গলা কাটা বস্তাবন্দী ক্ষতবিক্ষত গলিত লাশ পরকীয়া প্রেমিকার স্বামীর বাড়ীর পুকুর থেকে উদ্ধার করেছে কানাইঘাট থানা পুলিশ। এ নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত যুবকের পরকীয়া প্রেমিকা প্রবাসী স্ত্রী সুহাদা বেগম এবং তার দেবর সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে কানাইঘাট থানা পুলিশ। নির্মম এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, উপজেলার সদর ইউপির সোনাপুর গ্রামের মোঃ আবু বক্করের পুত্র কানাইঘাট পৌর শহরের চয়েস টেইলার্সের মালিক দর্জি ইমরান হোসেন (২৪) ৪দিন পূর্বে সোমবার রাতে পরকীয়া প্রেমিকা কানাইঘাট বড়চতুল ইউপির দূর্গাপুর দক্ষিণ নয়াগ্রামের প্রবাসী বদরুল ইসলামের স্ত্রী সুহাদা বেগম প্রেমিক ইমরানকে তার স্বামীর বাড়ীতে নিকটাত্মীয় জাহাঙ্গীর (২৩) ও তার আপন ভাই ইমরান আহমদ (২৪)কে খবর দিয়ে মোটর সাইকেল যোগে নিয়ে যায়। এরপর থেকে দর্জি ইমরান হোসেন নিখোঁজ ছিল। তার কোন সন্ধান না পেয়ে তার পিতা আবু বক্কর কানাইঘাট থানায় নিখোঁজের দুই দিন পর সাধারণ ডায়রী এবং পরবর্তী গত শুক্রবার তার পুত্র ইমরান হোসেনকে অপহরন করে খুন ও গুমের অভিযোগ এনে তার পুত্রের পরকীয়া প্রেমিকা প্রবাসীর স্ত্রী সুহাদা বেগম (২১) ও সুহাদার ভাই ইমরান আহমদ (২৪), দেবর মাসুম আহমদ (৩০) ও দক্ষিণ লক্ষীপ্রসাদ গ্রামের উমর আলীর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম (২৩) ৪ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৭/৮ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। থানার মামলা নং-১৯, তাং ১৯/০৯/২০১৬ইং। পুলিশ ইমরান হোসেনস নিখোঁজের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য রাতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সুহাদা বেগমের দেবর মাসুম আহমদ ও নিকটাত্মীয় জাহাঙ্গীর আহমদকে গ্রেফতার করে। তাদের স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দির সূত্র ধরে এ হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী ইমরান হোসেনের পরকীয়া প্রেমিকা সুহাদা বেগমকে গতকাল শুক্রবার বিকেলে গ্রেফতার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ইমরান হোসেনের লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের বর্ণনা দেয়। গত সোমবার রাতে ইমরান হোসেনকে বসত ঘরে পৈশাচিক কায়দায় হত্যার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দির সূত্র ধরে থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই জুনেদ, এএসআই জগদীশ, এএসআই আব্দুল মান্নান সহ একদল পুলিশ ইমরান হোসেনের বস্তাবন্দী অর্ধগলিত লাশ প্রবাসীর বাড়ীর পুকুর থেকে শনিবার রাত ৯টার দিকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ইমরান হোসেনের লাশ থানায় নিয়ে আসা হলে থানা প্রাঙ্গনে লোকে লোকারন্য হয়ে যায়। নিহতের আত্মীয় স্বজনরা ইমরানের গলা কাটা লাশ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। ইমরান হোসেনকে পৈশাচিক কায়দায় গলা কেঁটে, লিঙ্গ কর্তন করে হত্যা করে লাশ চটের বস্তায় ভরে বস্তার নীচ অংশে বাঁশ দিয়ে চালি বেঁধে গাছের সাথে বেঁধে পুকুরে ডুবিয়ে রাখে খুনী চক্র বলে থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। নিহত ইমরান হোসেনের পিতা আবু বক্কর গোয়াইনঘাট ডাক অফিসের পোস্ট মাস্টার কর্মরত রয়েছেন। অপরদিকে এ হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী প্রবাসী বদরুল ইসলামের স্ত্রী সুহাদা বেগমের পিতার বাড়ী লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির মুলাগুল নয়াখেল গ্রামে। সে সৌদি প্রবাসী তাজুল ইসলামের মেয়ে। নিহত ইমরান আহমদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে সুহাদা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্কের জের ধরে এ হত্যাকান্ড হয়েছে বলে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন। হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত থাকায় সুহাদা বেগম ও তার দেবর মাসুম আহমদ, জাহাঙ্গীর আহমদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
খবর বিভাগঃ
প্রতিদিনের কানাইঘাট
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়