Sunday, August 28

মৃত্যুর আশঙ্কা ভিডিও করার পরদিনই খুন হলেন তরুণী

মৃত্যুর আশঙ্কা ভিডিও করার পরদিনই খুন হলেন তরুণী

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে এক তরুণীর মৃত্যুর পর তার রেকর্ড করা একটি ভিডিও নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে, যেখানে তিনি নিজেই তার মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। পরের দিন সত্যিই তার মৃত্যু হয় উত্তর প্রদেশ রাজ্যে তার গ্রামের বাড়িতে। খবর বিবিসির।

সোনি কুরেশী নামের ওই তরুণীর মৃতদেহ পরিবারের লোকেরা খুব তাড়াতাড়ি কবর দিয়ে দেয়। এই ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পরে পুলিশ কবর থেকে দেহ তুলে ময়না তদন্ত করিয়েছে।

এ মাসের ১৮ তারিখে ওই ভিডিও রেকর্ড করেন মিস কুরেশী, আর ১৯শে আগস্ট তাকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। ভিডিওতে মিস কুরেশী বলছেন, “আমার বাবা, ভাই আমাকে মেরে ফেলতে চায়। সেইজন্যই আমাকে গ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

"আমি সাবালিকা, আমি আমার প্রেমিককে বিয়ে করতে চাই। তাই আমাকে মেরে ফেলতে চায় ওরা। আমার যদি কিছু হয়ে যায়, তাহলে ওরাই দায়ী থাকবে”, তিনি বলেন।

হাথরাস জেলার পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট অজয় পাল শর্মা জানিয়েছেন, “ওই ভিডিওতে তরুণী যাদের নাম করেছেন মারা যাওয়ার আগে, তাদের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

"তবে সবাই পালিয়েছে, গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করছি আমরা”, তিনি বলেন। পুলিশ বলছে ওই তরুণী পরিবারের সঙ্গে মুম্বাইতে থাকতেন। তাকে যখন এক আত্মীয় ট্রেনে করে উত্তর প্রদেশে নিয়ে আসছিলেন, তখনই তার সন্দেহ হয় যে তাকে মেরে ফেলা হতে পারে।

তরুণীর সঙ্গে ইমরান নামের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার পথে একটি ট্রেনের শৌচালয়ে দাঁড়িয়ে তিনি ওই ভিডিও রেকর্ড করেছিলেন। পুলিশ বলছে তার প্রেমিক ইমরান নিজেই ওই ভিডিওটা রেকর্ড করেছিলেন।

তরুণীর প্রেমিক ইমরানের সঙ্গেও কথা বলেছে পুলিশ। তারও সন্দেহ হয়েছিল যে সোনির সঙ্গে ভয়ানক কিছু করা হতে পারে। কিন্তু ইমরানও ভাবতে পারেন নি যে পরের দিনই মেরে ফেলা হবে ওকে।

এক স্থানীয় সাংবাদিক সুরজ মৌর্য সোনি কুরেশীর গ্রামে গিয়েছিলেন সরেজমিনে খবর সংগ্রহ করতে। তিনি জানিয়েছেন নওরঙাবাদ গ্রামের বেশীরভাগ মানুষ এই বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাননি।

গ্রামের লোকরা মৌর্যকে শুধু এটা জানিয়েছেন যে ওই তরুণী পেট ব্যথা হয়ে মারা গেছেন – পরিবার থেকে গ্রামবাসীদের এটাই জানানো হয়েছিল।

কবর দেওয়ার সময়েও গ্রামের লোকেরা হাজির ছিলেন বলে মৌর্য জানতে পেরেছেন। ভারতে অনেক ঘটনা সামনে আসে, যেখানে পরিবারের সম্মান রক্ষার নাম করে তরুণ-তরুণীদের পরিবারের লোকেরাই হত্যা করে।

ভিন্ন ধর্ম বা জাতের ছেলে বা মেয়েরা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে অথবা বাড়ি থেকে পালিয়ে বিয়ে করলে উত্তর আর পশ্চিম ভারতের গ্রামাঞ্চলে এরকম ভাবে অনেককেই পরিবারের লোকেরা মেরে ফেলেছে।

অনেক পরিবারই মনে করেন পরিবারের অমতে এই ভাবে বিয়ে করলে বা কোনও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে পরিবারের বদনাম হবে, সেজন্যই সম্মান রাখতে খুন করা হয়।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়