কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ। কিন্তু এখানে নীরব রাজনীতি আছে। সাম্প্রতিক জঙ্গিবাদ সমস্যা থেকে উত্তরণ চাইলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ‘সরব রাজনীতি’র চর্চা শুরু করতে হবে বলে মত দিয়েছেন ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।
রোববার (১৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে জননিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এ পরামর্শ দেন।
সোহাগ বলেন, ‘সরব রাজনীতি না থাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গিবাদের সৃষ্টি হচ্ছে। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য আবশ্যই প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরব রাজনীতি শুরু করতে হবে।’
তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিমুক্ত, আসলে কি রাজনীতিমুক্ত? সরব রাজনীতি নেই, সেখানে নীরব রাজনীতি আছে। আর নীরব রাজনীতি মানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিযবুত তাহরীরের সংগঠন আছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্যই সরব রাজনীতি থাকতে হবে।
একই অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি উন্মুক্ত হোক। ছাত্ররাজনীতি করতে পারবে না— এই মুচলেকা দিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয়। এ সিদ্ধান্ত ছাত্রসমাজ মানে না, মানবে না।
তবে এসময় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পর্কে অবগত নই। কারণ আমি দীর্ঘ ৪০ বছর অস্ট্রেলিয়া থেকে ৬ মাস আগে দেশে এসে নর্থ সাউথের দায়িত্ব নিয়েছি। কিন্তু তাই বলে যে আমি জঙ্গিবাদ সমস্যা বুঝে উঠতে পারব না, তা কিন্তু না।’
তিনি বলেন, ‘যে সব শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক জঙ্গিবাদের সাথে জড়িত, তাদের প্রতি নর্থ সাউথের পক্ষ থেকে ঘৃণা জানাচ্ছি।’
গৃহীত পদক্ষেপ প্রসঙ্গে নর্থ সাউথের ভিসি বলেন, ‘সব শিক্ষকদের বলেছি, শিক্ষার্থীদের দিকে নজর রাখতে। নিয়মিত মোটিভেশনের ব্যবস্থা করেছি। লাইব্রেরি পরিষ্কার করেছি এবং নামাজের জায়গাতেও সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি।’
অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বাসায় ফিরে সন্তান যেন দরজা বন্ধ করতে না পারে, সে দিকে নজর রাখুন। তাদের আচরণে কোনো পরিবর্তন দেখলে অবশ্যই পুলিশকে জানান।’
এর আগে শনিবার বিকেলে গুলশানের রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় জড়িতদের বাড়ি ভাড়া দেয়ার আগে তাদের নাম ঠিকানাসহ তথ্য না রাখায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত সহ-উপাচার্যসহ (প্রোভিসি) তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
গত ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারি রেস্তোরাঁয় হামলা চালায় জঙ্গিরা। ১২ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর জিম্মি সংকটের সময় জঙ্গিরা ১৭ জন বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে। তাদের বোমায় নিহত হোন দুই জন পুলিশ কর্মকর্তা। পরে জিম্মি উদ্ধার অভিযানে ওই রেস্তোরাঁর শেফ সাইফুল চৌকিদারসহ পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়।
গুলশান হামলায় অংশ নেয়া নিবরাস ইসলাম নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। আবার জিম্মি অবস্থায় জীবিত উদ্ধার হওয়া হাসনাত রেজাউল করিম ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক।
এ ছাড়াও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে হামলার সময় পুলিশের গুলিতে নিহত আবিরও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ওই তিন কারণে জঙ্গি হামলার মদদদাতা হিসেবে সন্দেহের তির যখন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে, ঠিক তখনই জানা গেল ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসির বাসায় ভাড়া থেকেই পাঁচ জঙ্গি হামলা চালায় গুলশানের হলি আর্টিসান বেকারিতে।
খবর বিভাগঃ
রাজনীতি
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়