Sunday, July 31

কানাইঘাটে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে দুর্ঘটনার স্বীকার মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর দুই হাত কেটে ফেলা হয়েছে !


নিজস্ব প্রতিবেদেক: কানাইঘাটে পল্লীবিদ্যুতের ঝুঁকিপূর্ণ মেইন লাইনের তারে ঝড়িয়ে মারাত্মক আহত হয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী দুই হাত হারিয়ে পঙ্গু হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আর্থপেডিক্স বিভাগে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। কিন্তু অদ্যবধি পর্যন্ত চিকিৎসাধীন পঙ্গু ষষ্ঠ শ্রেণির এই শিক্ষার্থীর কোন ধরনের খোঁজখবর না নেওয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, উপজেলার ঝিঙ্গাবাড়ী ইউপির ফাগু বাঁশবাড়ী গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল জব্বারের ভাগ্না স্থানীয় ফাগু সালাফিয়া দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিক আহমদ (১৩) মামার বাড়ীতে থেকে লেখাপড়া করত। গত ১০ জুলাই মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী সাদিক আহমদ মামা আব্দুর জব্বারের নির্মাণাধীন একতলা ভবনের সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় সিঁড়ির পাশ ঘেঁষা কানাইঘাট পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের আওতাধীন অনুমান ২ মাস পূর্বে টানানো ঝুঁকিপূর্ণ ৬ হাজার বোল্টের এসটি লাইনে সকাল ১১টায় জড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ লাইনে জড়িয়ে থাকার পর লাইনটি ট্রিপ করলে সাদিক আহমদ গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে ছিটকে পড়ে। পরে বাড়ীর লোকজনের শোর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মুমূর্ষ অবস্থায় সাদিককে উদ্ধার করে সাথে সাথে সিলেট সিওমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সাদিকের দুই হাতে পঁচন ধরলে কনুই পর্যন্ত ডাক্তারা কেঁটে ফেলেন। কিন্তু তার দুই হাতের কনুই পর্যন্ত কেটে ফেলার পরও বর্তমানে আর্থপেডিক্স বিভাগে চিকিৎসাধীন সাদিকের দুই হাতের কনুইর উপরের বিভিন্ন অংশের পঁচন ধরেছে। সাদিকের মামা মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুর জব্বার বলেছেন, তার ভাগ্নাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ডাক্তাররা ভারত অথবা সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ১০ জুলাই বিদ্যুতের মেইন লাইনে জড়িয়ে শিশু সাদিকের মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটলেও খবর পাওয়ার পরও কানাইঘাট পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের কোন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা অদ্যবধি পর্যন্ত ঘটনাস্থল অথবা চিকিৎসাধীন সাদিকের কোন খোঁজ খবর নেননি বলে গ্রামের লোকজন ও আত্মীয় স্বজনরা জানিয়েছেন। সাদিকের মামা আব্দুল জব্বার এবং ফাগু বাঁশবাড়ী গ্রামের হারুন আহমদ, ইসলাম উদ্দিন, ফখরুল ইসলাম সহ আরো অনেকে কানাইঘাট নিউজকে জানিয়েছেন, অনুমান ৩ মাস পূর্বে তাদের গ্রামে বিদ্যুতায়নের লাইন টানানো হয়। ঝূঁকিপূর্ণ অবস্থায় বিদ্যুতের লাইন নির্মানের সময় মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল জব্বার সহ আরো অনেকে মৌখিক ভাবে অভাব-অভিযোগ দেওয়ার পরও পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ কোন কর্ণপাত না করে তাদের মতো লাইন নির্মান করে। ত্রুটিপূর্ণ অবস্থায় বিদ্যুৎ লাইন নির্মানের ফলে বিদ্যুতের নির্মিত এসটি লাইনগুলো অনেকাংশে ঝুলে পড়েছে, যা অনেকের বাড়ীঘর ঘেঁষে যাওয়ায় যে কোন সময় সাদিকের মতো আরো অনেকে এ ধরনের অনাকাংখিত দুর্ঘটনার স্বীকার হতে পারে, যা সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে। সাদিকের মর্মান্তিক এ ঘটনার জন্য গ্রামের লোকজন পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে বলেছেন, তাদের অবহেলার কারনে এ ঘটনাটি ঘটেছে। কিন্তু অদ্যবধি পর্যন্ত তারা সাদিকের চিকিৎসার কোন খোঁজ খবরও নেন নি। সাদিকের মামা আব্দুল জব্বার জানিয়েছেন, তার নির্মানাধীন বাড়ীর সিঁড়ির পাশ দিয়া বিদ্যুৎ লাইন নির্মানের সময় তিনি বার বার বাঁধা দেওয়ার পরও লাইন নির্মান করা হয়। যার দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আমার মাদ্রাসা পড়ুয়া ভাগ্না সাদিক মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এ ঘটনার জন্য গ্রামবাসী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারা তদন্তের দাবী জানিয়েছেন। এব্যাপারে পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম নজরুল ইসলাম মোল্লার সাথে কানাইঘাট নিউজ থেকে যোগাযোগ করা হলে তাকে কর্মস্থলে পাওয়া যায়নি, তার সেল ফোনটি বন্ধ রয়েছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়