Wednesday, May 4

বড়লেখার এক শিক্ষক দিয়ে ৫শ’ শিক্ষার্থীর পাঠদান


বড়লেখা প্রতিনিধি (মৌলভীবাজার) সিলেট, বুধবার, ০৪ মে ২০১৬ :: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার বোবারথল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। দুই মাস ধরে ৫শ’ শিক্ষার্থীর পাঠদানের দায়িত্বে রয়েছেন মাত্র একজন শিক্ষক! দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকটের কারণে স্বাভাবিক শ্রেণী কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা স্কুল বিমূখ হয়ে পড়েছে। সূত্রমতে উপজেলায় এমনও স্কুল রয়েছে, যেখানে ছাত্র সংখ্যা ১শ’র নিচে অথচ শিক্ষক সংখ্যা পাঁচের অধিক। সেসব স্কুল থেকে ডেপুটেশনে শিক্ষক পদায়ন করে এ স্কুলের পাঠদান চালিয়ে নেয়া সম্ভব বলে অনেকেই মন্তব্য করছেন। কিন্তু সেদিকে শিক্ষা অফিসের যথাযত নজর না দেয়ায় ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ-অসন্তোষ বিরাজ করছে। জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপির বোবারথল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্যাটার্ণভুক্ত ৯ জন শিক্ষকের স্থলে বছরের পর বছর ৩ শিক্ষক দিয়ে শ্রেণী কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক পাঠগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এক বছর আগে তিন শিক্ষকের একজন নিজ জেলায় বদলি হলে শিক্ষক সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। গত ৭ মার্চ বাকী দুই শিক্ষকের এক শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিনও নিজ জেলা নেত্রকোনায় বদলী হলে প্রধান শিক্ষক আব্দুস শাকুর খানকে একাই ৯ শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। সরেজমিনে গেলে প্রধান শিক্ষক আব্দুস শাকুর খান জানান, স্কুলের ৫শ’ শিক্ষার্থীকে তিনি একাই পড়ান। উপজেলা সদর হতে ২২ কিলোমিটার দুরবর্তী এ স্কুল থেকে সপ্তাহে ২দিন সমন্বয় সভাসহ বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের কাজে তাকে শিক্ষা অফিসে যেতে হয়। কোন শিক্ষকও না থাকায় বাধ্য হয়ে তখন স্কুল ছুটি দিতে হয়। এছাড়া সকালের শিফটের প্রাক-প্রাথমিকসহ তিনটি ক্লাস রয়েছে। এক ক্লাসে গেলে ফাঁকা দুই ক্লাসের শিক্ষার্থীর হাল¬া চিৎকারে পাঠদানতো দুরের কথা তাদের নিয়ন্ত্রণ করাই কঠিন হয়ে পড়ে। দ্বিতীয় শিফটেও তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর তিনটি ক্লাসের একটিতে গেলে অপর দুই ক্লাসের শিক্ষার্থীরা পাগল করে তোলে। ঠিকমত ক্লাস না হওয়ায় ক্রমশ শিক্ষার্থীরা স্কুল বিমূখ হচ্ছে। সচেতন মহলের বক্তব্য হলো বোবারথল এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে যতক্ষণ পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগ দেয়া না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বোবারথল প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক সংকট নিরসন সম্ভব হবে না। কারণ দুরবর্তী কোন শিক্ষক সেখানে যাওয়া আসা করে পাঠদান সম্ভব নয়। সূত্র জানায়, বোবারথল এলাকা থেকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার মত যোগ্যতা সম্পন্ন অনেক নারী-পুরুষ রয়েছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে তাদের চাকরি হয় না। এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার অরবিন্দ কর্মকার জানান, বোবরথল স্কুলে শিক্ষক সংকট নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়