বিশ্বনাথ প্রতিনিধি, মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০১৬ :: সিলেটের বিশ্বনাথ নতুনবাজারে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালানো হয়েছে মঙ্গলবার। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আবদুল হক’র নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানকালে সবজিবাজারের ৫টি দোকান উচ্ছেদ করা হয়। তবে সেখানে অবৈধভাবে গড়ে তুলা ১২টি দোকানের মধ্যে ৭ দোকান উচ্ছেদ করা হয়নি।
দু’পাশের ৭টি বহাল রেখে মাঝখান থেকে ৫টি দোকান উচ্ছেদ করায় ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। কোনো নোটিশ না দিয়ে মাঝখান থেকে এসব দোকান উচ্ছেদের প্রতিবাদের বুধবার বিকালে বাজারে মানববন্ধন করার ঘোষণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের লোকজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫ বছর পূর্বে নতুনবাজারের সবজিবাজার নিকটবর্তী বাসিয়া নদীর তীরে রাতের আঁধারে এক সাথে ১২টি অবৈধ দোকান কোঠা নির্মাণ করা হয়। এর কিছুদিন পর নতুনবাজারস্থ মাছ বাজারের পার্শ্বে মসজিদের নাম ব্যবহার করে আরেকটি প্রভাবশালী মহল একসনা বন্দোবস্ত নিয়ে পাকা দোকান কোঠা নির্মাণ করেন। বন্দোবস্তের মেয়াদ শেষ হলেও তা আর পুনঃবন্দোবস্ত নেওয়া হয়নি। তারপরও স্ব-স্থানে বহাল রয়েছে সেই অবৈধ স্থাপনাগুলো। আরেকটি অংশে রয়েছে আধাপাকা নির্মিত অবৈধ স্থাপনা।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ- সব অবৈধ স্থাপনা বহাল রেখে মাঝখান থেকে ৫টি দোকান কোঠা উচ্ছেদের ঘটনা রহস্যজনক। এ ঘটনায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তাদের অভিযোগ- প্রভাবশালীদের অবৈধ স্থাপনা বহাল রেখে অন্যগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। তারা বাসিয়া নদীর তীরে গড়ে উঠা সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানান।
এদিকে, মৎস্যজীবীদের পক্ষ থেকে একাধিক বার ওই অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদের আবেদন করলে প্রশাসন কোন প্রদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। এমনকি উপজেলা ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের দাবিকৃত ৪ লাখ টাকা পরিশোধ না করার কারণে ডানে-বামে অবৈধ স্থাপনা রেখে মাঝখান থেকে ৫টি দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন উচ্ছেদকৃত দোকান কোঠার ব্যবসায়ীরা।
উচ্ছেদকৃত দোকান কোঠার ভূমি লিজ আনার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছেন দাবি করে উচ্ছেদকৃত দোকান মালিক জুনাব আলী ও ময়না মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এখানে আমাদের দোকান রয়েছেন। সম্প্রতি কালবৈশাখী ঝড়ে দোকানগুলোর টিন উড়ে যায়। এগুলো মেরামত করতে গেলে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও তহশিলদার অনিল বাবু ৪ লাখ টাকা দাবি করেন। ইতিমধ্যে তহশিলদার অনিল সিংহকে ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তারা বলেন, গত রবিবার মোবাইল ফোনে (ময়না মিয়ার) অনিল বাবু আরো ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। দাবিকৃত ওই টাকা না দেওয়ায় কোনো প্রকার নোটিশ ছাড়াই দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হয় বলে তাদের অভিযোগ।
তবে টাকা দাবি ও গ্রহণের বিষয়টি মিথ্যা উল্লেখ করে তহশিলদার অনিল সিংহ বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার কারণে মিথ্যা অভিযোগ তুলা হচ্ছে। কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেওয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, টাকার জন্য কাউকে কোন ফোন দেওয়া হয়নি।
টাকা দাবির বিষয়টি সঠিক নয় উল্লেখ করে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আবদুল হক বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য দোকান মালিকদের একাধিকবার নোটিশ দেয়া হয়েছে। নোটিশ প্রদানের পরও এসব অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করা হয়নি। ফলে মঙ্গলবার কয়েকটি দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে বলেও তিনি জানান।
খবর বিভাগঃ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়