আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কানাইঘাট নিউজ:
আফগানিস্তান ও সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসা কিশোর অভিবাসীদের সুন্দর এবং স্বাভাবিক ভবিষ্যত গড়তে আলাদা স্কুল চালু হয়েছে জার্মানির বিখ্যাত কোল্ডিৎজের শহরের কাছে। এর ফলে অভিবাসী কিশোরদের নতুন জীবন শুরু করতে সুবিধা হবে।
বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসী কিশোর-তরুণরা শিখছে নতুন ভাষা, সংস্কৃতি। সেই সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছে পরস্পরের কষ্টের অভিজ্ঞতা। ভবিষ্যত জীবিকার পথ হিসেবে কেউ শিখছে নৌকা বাইচ। যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে গত কয়েক মাসে বহু আফগান কিশোর পালিয়ে জার্মানিতে অভিবাসী হয়েছে। নিজের দেশ ছেড়ে হাজার মাইল দূরের দেশে বাবা-মা কিংবা অভিভাবক ছাড়া। জীবনের ছোট-বড় সব বিষয়ে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
এদের একটি বড় অংশ এখন পড়াশোনার পাশাপাশি নৌকাবাইচে যুক্ত হয়েছে। লক্ষ্য একদিন এই খেলাকে ঘিরেই জীবিকার পথ তৈরি করা। সীমান্ত পেরিয়ে জার্মানিতে আসা ১৫ বছর বয়সী শাহিদ বলেন, ‘আগেবাড়ির সবার কথা তার খুব মনে পড়ত। খুব খারাপ লাগত। কিন্তু এখন আর তেমনটা হয় না। এখন আমি খুশী। কারণ আমি এখন স্কুলে যাই। তবে, দুই সপ্তাহ আগে আমার বাবাকে তালেবান যোদ্ধারা ধরে নিয়ে গেছে। এখন সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন।’
এসব স্কুল পড়ুয়াদের বেশিরভাগই এই বছরের শুরুতে জার্মানিতে এসেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কয়েদিদের থাকার জায়গা হিসেবে বিখ্যাত জার্মানির কোল্ডিৎজের শহরের কাছেই এই কিশোর অভিবাসীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নতুন পরিবেশে অভিবাসীরা যাতে খাপ খাইয়ে নিতে পারে, সেজন্য কর্তৃপক্ষ নিচ্ছে নানা ব্যবস্থা। প্রথমেই শেখানো হচ্ছে জার্মান ভাষা। এখানকার ছেলেমেয়ারা একেকজন একেক দেশ থেকে এসেছে। অধিকাংশই আফগানিস্তান থেকে এসেছে।কেউ সিরিয়া এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকেও এসেছে।
আসার আগেই হারিয়েছে বাবা আর বোনকে হারিয়েছে সিরিয়ার কিশোর আবদেল। আফগানিস্তান থেকে এসেছে জয়নাব ও তার বোন খাদিজা। খাদিজা জানায়, সে লেখাপড়া করতে চায়। কারণ আফগানিস্তানে সে পড়ার সুযোগ পায়নি। সেখানে অনেকক্ষণ কাজও করতে হত খাদিজাকে, আর সেজন্য স্কুলে যেতে পারেনি। এখন প্রতিদিন স্কুলে যেতে পেরে অনেক খুশী খাদিজা।
অভিবাসী ছেলেমেয়েদের জার্মান ভাষা আর সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন থমাস স্যাফেল্ড। তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারিতে যখন এই স্কুল শুরু হয় তখন ছাত্র সংখ্যা ছিল অল্প কয়েকজন। কিন্তু এখন ক্লাশ পূর্ণ হয়ে গেছে নানা দেশের ছেলেমেয়েদের উপস্থিতিতে। আমি ওদের সাহায্য করি। জার্মান ভাষা শেখাই, আর এদেশের বিভিন্ন রীতি রেওয়াজ শেখাই। আমি জানি স্কুলটা ওদের জন্য অনেক বড় একটি ব্যাপার। এটি ওদের জন্য অনেক শান্তিপূর্ণ একটি জায়গা। দেখা যায় স্কুলে বেশ আনন্দেই সময় কাটায় ছেলেমেয়েরা।
কিন্তু বলা হয়, বাবা-মা হারা এই কিশোর কিশোরীরাই অভিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তাদের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে নির্দিষ্ট হিসাব নেই। ধারণা করা হয়, পুরো ইউরোপে এমন অল্প বয়সী অভিবাসীর সংখ্যা ৩০ থেকে ৪০ হাজার পর্যন্ত হতে পারে।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়