Thursday, April 21

কানাইঘাটের ৯টি ইউনিয়নে ভোটের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি


নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন কমিশনের তফসীল অনুযায়ী আগামী ২৩ এপ্রিল শনিবার কানাইঘাট উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের শেষ মুহূর্ত প্রচারণায় টানা বর্ষণ, ঝড়-তোফান, বজ্রপাত উপেক্ষা করে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভোট প্রার্থনা আর মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশের মাধ্যমে সরগরম করে তোলেছেন ভোটের মাঠ। আওয়ামীলীগ ও বিএনপির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ প্রতিদিন দলীয় সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে গণ সংযোগ করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে শান্তিপূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু ভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এবারের ইউপি নির্বাচন দলীয় ভাবে অনুষ্ঠিত হলেও কানাইঘাটে ৯টি ইউনিয়নের নির্বাচনে আঞ্চলিকতার টান এখনও প্রবল। দলীয় প্রার্থীদের পাশাপাশি কয়েকটি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোটের মাঠে শক্ত অবস্থানে থাকায় বেকায়দায় আছেন আওয়ামীলীগ ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা। ৯টি ইউনিয়নের নির্বাচনে ৬টি ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ এবং ৪টি ইউনিয়নে বিএনপির বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকায় দলের প্রার্থীরা ভোটের লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়তে পারেন বলে সরেজমিন ঘুরে ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। যার কারনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোটের লড়াইয়ে চমক দেখাতে পারেন। নানা শ্রেণী পেশার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে ৯টি ইউনিয়ন নির্বাচনে ১নং লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউপিতে মোট ৮জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী ডাক্তার ফয়াজ উদ্দিন (ঘোড়া), বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শমসের আলম (ধানের শীষ), আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আলা উদ্দিন মড়াই (আনারস) প্রতীকের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে। ২নং লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপিতে ৭জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ভোটের লড়াইয়ে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামীলীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জেমস্ লিও ফারগুসন নানকা (নৌকা), জাপা সমর্থিত এড. আব্দুর রহিম (লাঙ্গল), বর্তমান চেয়ারম্যান আ’লীগ বিদ্রোহী ফারুক আহমদ চৌধুরী (মোটর সাইকেল) ও বিএনপি সমর্থিত মোঃ কামাল উদ্দিন (ধানের শীষ) প্রতীকের। ৩নং দীঘিরপার পূর্ব ইউপিতে ৪জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এখানে ভোটের লড়াইয়ে এগিয়ে রছেনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আলতাফ উদ্দিন (ধানের শীষ), আ’লীগ সমর্থিত আলী হোসেন কাজল (নৌকা),আ’লীগ বিদ্রোহী বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী (আনারস) প্রতীকের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে। ৪নং সাতবাঁক ইউপিতে ৬জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী মাস্টার ফয়জুল ইসলাম (চশমা), আ’লীগ সমর্থিত মস্তাক আহমদ পলাশ (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান (মোটর সাইকেল)। ৫নং বড়চতুল ইউপিতে ৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এখানে চতুর্থমুখী হাড্ডা-হাড্ডি লড়াই হবে। তার মধ্যে আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মুবশি^র আলী (নৌকা), বিএনপি সমর্থিত আব্দুল মালিক চৌধুরী (ধানের শীষ), জাপা সমর্থিত কিউএম ফররুখ আহমদ ফারুক (লাঙ্গল) ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাও. আবুল হোসেন (চশমা)। এ চার জনের মধ্যে যে কেউ বিজয়ী হতে পারেন। ৬নং সদর ইউপিতে বর্তমান চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম (মোটর সাইকেল), বিএনপি সমর্থিত মামুন রশিদ (ধানের শীষ) ও আ’লীগ সমর্থিত হোসেইন আহমদ (নৌকা) প্রতীকের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াই হবে। ৭নং দক্ষিণ বানীগ্রাম ইউপিতে ৫জন প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান বিএনপি সমর্থিত শাহাব উদ্দিন (ধানের শীষ), আ’লীগ সমর্থিত মাসুদ আহমদ (নৌকা), স্বতন্ত্র মাস্টার লোকমান উদ্দিন (মোটর সাইকেল) প্রতীকের তুমুল লড়াই হবে। ৮নং ঝিঙ্গাবাড়ী ইউপিতে ১০জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এখানে বিএনপি সমর্থিত আবু বক্কর সিদ্দিকী (ধানের শীষ), আ’লীগ বিদ্রোহী মোঃ হারুনুর রশিদ (ঘোড়া), আ’লীগ সমর্থিত মোঃ নুরুল হক (নৌকা) ও আ’লীগ বিদ্রোহী জলাল মিয়া (টেবিল ফেন) প্রতীকের মধ্যে চতুর্থমুখী লড়াই হবে। ৯নং রাজাগঞ্জ ইউপিতে ১৩জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও এখানে আঞ্চলিকতা নির্বাচনে জয়লাভে বড় ধরনের ফেক্টর হয়ে দাড়াবে। তবে ভোটের লড়াইয়ে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকবেন বর্তমান চেয়ারম্যান বিএনপি সমর্থিত মোঃ মানিক মিয়া (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র ফখরুল ইসলাম (চশমা), আ’লীগ সমর্থিত জহিরুল ইসলাম তুয়েল (নৌকা), স্বতন্ত্র মোঃ আজিজ আশিক (ঘোড়া), জমিয়ত উলামায়ে সমর্থিত মাও. সামছুল ইসলাম (খাজুর গাছ), আ’লীগ বিদ্রোহী শায়েস্তা মিয়া (অটোরিক্সা), আ’লীগ বিদ্রোহী তারেক হাসান খালেদ (মোটর সাইকেল) ও খেলাফত মজলিশ বাহার উদ্দিন (মিনার) প্রতীকের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। এদের মধ্যে যে কেউ বিজয়ী হতে পারেন। তবে কানাইঘাট উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে জামায়াতের রিজার্ভ ভোট রয়েছে। জামায়াতের নেতাকর্মীরা যাকে চেয়ারম্যান পদে সমর্থন করবেন ভোটের লড়াইয়ে তারা এগিয়ে থাকবেন বলে অনেকে ধারনা করছেন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়