Friday, February 26

কানাইঘাটে বাবুর্চি জামাল হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
কানাইঘাটে বাবুর্চি জামালের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধারের এক সপ্তাহ পরও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে ঘটনার মূল হোতারা। এতে ক্ষুব্দ এলাকাবাসী। শুক্রবার মানববন্ধন তারা কর্মসূচি পালন করে আসামিদের গ্রেফতারে ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়েছে। অন্যথায়, থানা ঘেরাওসহ বড় ধরণের কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে তারা। নিহত জামাল উদ্দিন (৪০) কানাইঘাট উপজেলার তিনচটি গ্রামের মৃত কালা মিয়ার পুত্র। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি উপজেলার বুরহান উদ্দিন বাজার থেকে কৌশলে হাওরে নিয়ে গুম করা হয় জামালকে। সেখানে ৬দিন রেখে দফায় দফায় নির্যাতনে হত্যা করার পর ১৯ ফেব্রুয়ারি হাওরে ফেলে দেওয়া তার লাশ। এলাকার লোকজন দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে দুপুরের দিকে লাশ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন বিকেলে দুইজনকে আটক করে পুলিশ। পরে জামালের স্ত্রী শাহিনূর বেগমের দায়ের করা ২৩৪৬ (১৯/০২/২০১৬) মামলায় আটক আব্দুর রহিম (৩৫) কে ১নং আসামি ও কবির (৩০) কে ৪ নং আসামি করা হয়। এই দু’জন ছাড়া আর কোন আসামী এখনো গ্রেফতার হয়নি। ঝিংগাবাড়ি ইউনিয়ন তথা কানাইঘাট উপজেলার মধ্যে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। শান্তিপূর্ণ এই অঞ্চলে জামাল খুনের ঘটনা এলাকার সর্বস্তরের মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছে। আতংক বিরাজ করছে এলাকার নারী-পুরুষ ও শিশুরা। শুক্রবার এ দাবিতে কানাইঘাট উপজেলার বুরহান উদ্দিন বাজারে স্থানীয় এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। মানববন্ধন থেকে মূল আসামিদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘন্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ৮নং ঝিংগাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক আহমদ চৌধুরী, সিলেট জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আখলাকুল আম্বিয়া, মাস্টার মাহমুদ হোসেন, ইউপি সদস্য রুবি রাণী, ছাত্রলীগ সিলেট জেলা কমিটির সহ-সভাপতি হারুন রশীদ, ফয়জুর রহমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইউপি সদস্য রিয়াজ উদ্দিন, আলা উদ্দিন মেম্বার, নূরুল হক, বিশিষ্ট মুরব্বি মিছবাহ উদ্দিন, হাজী নূর হোসেনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। নিহত জামালের শিশু কন্যা ৬ষ্ট শ্রেণির ছাত্রী জামিলা আক্তার সুমা ও শিশু পুত্র হাসান আহমদ বাবা হত্যার বিচার দাবি সম্বলিত প্লাকার্ড হাতে মানববন্ধনে দাঁড়াতে দেখা যায়। এর আগে ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে বুরহান উদ্দিন বাজারে জড়ো হতে হন সহস্রাধিক মানুষ। সেখানে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শহর উল্লাহ বাজারে রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে মানববন্ধনে জড়ো হন। মানববন্ধন শেষে আবারো মিছিল সহকারে গাছবাড়ি বাজার অভিমুখে রওয়ানা হন বিক্ষুব্ধ জনতা। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জামাল হত্যাকান্ডের মত নৃশংস ঘটনা এই অঞ্চলে এর আগে কখনো ঘটেনি। আমরা প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এটা একাত্তরের পাকিস্তানি বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। আমরা এই নরপিশাচদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়ে বক্তারা বলেন, নিরিহ মানুষকে হয়রানি করতে মামলায় বাদির দেয়া তালিকার বাইরেও অতিরিক্ত আসামি সংযুক্ত করেছে পুলিশ। আমরা এই মামলাটি পিবিআই’তে স্থানান্তর, তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন ও দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবি জানাচ্ছি। এক্ষেত্রে পুলিশের ডিআইজি, এসপিসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করি। দাবি আদায় না হলে ৭২ ঘন্টা পর থানা ঘেরাও, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রাসহ চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান বক্তারা।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়