Monday, December 21

মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবে গৃহকর্মীরা


ঢাকা: গৃহকর্মীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১৬ সপ্তাহ দেয়ার বিধান রেখে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদসচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, এই নীতিমালা অনুমোদন পাওয়ায় শ্রম আইন অনুযায়ী গৃহকর্মীরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তিনি বলেন, সর্বনিম্ন ১৪ বছরের কাউকে গৃহকর্মী নিয়োগ দেয়া যাবে। গৃহকর্মীদের শ্রমঘণ্টা এবং বেতন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করতে হবে। এই নীতিমালা অনুমোদনের ফলে গৃহকর্ম শ্রম হিসেবে স্বীকৃত পাবে এবং চার মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটিও পাবেন গৃহকর্মীরা। সচিব বলেন, নীতিমালায় গৃহকর্মীদের বিশ্রামের পাশাপাশি বিনোদনের সময় দেয়ারও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, গৃহকর্মীদের নির্যাতন করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী সরকার ব্যবস্থা নেবে। শফিউল আলম আরও জানান, মন্ত্রিসভা বৈঠকে দশম জাতীয় সংসদের ২০১৬ সালের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের খসড়াও অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া মন্ত্রিসভায় তিনটি আইনের অনুমোদন দেয়া হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৫ ও বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন আইন, ২০১৫-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে এশিয়ান ফাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক আইন, ২০১৫ আইনের। প্রত্যেক মাসের ৭ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ, চাকরি অপসারণের ক্ষেত্রে এক মাস আগে না জানালে ৩০ দিনে মজুরি প্রদান, নারী গৃহকর্মীর মাতৃত্বকালীন সময়ে স্ববেতনে ১৬ সপ্তাহ ছুটি এবং কর্মক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণসহ শ্রম আইন অনুযায়ী সুবিধা প্রাপ্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে নীতিতে। গৃহকর্মীদের সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো নিয়ে কোনো কথা এই খসড়া নীতিমালায় নেই। এ ক্ষেত্রে গৃহকর্মী ও নিয়োগকর্তা পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে আলোচনা সাপেক্ষ্যে বেতন নির্ধারণ করবেন। একই সঙ্গে শ্রমঘণ্টার বিষয়টিও নিয়োগকর্তা এবং গৃহকর্মী আলোচনা সাপেক্ষ্যে ঠিক করবেন। নীতিমালায় সাপ্তাহিক কিংবা মাসিক ছুটির কথাও উল্লেখ করা হয়নি। দেশে কতজন গৃহকর্মী আছেন তার কোনো হিসেব সরকারের কাছে নেই। কিন্ত, এ নীতিমালা অনুযায়ী গৃহকর্মীদের জন্য আলাদা তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তুলবে সরকার। গৃহশ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওর্য়াক’নামের একটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য মতে বাংলাদেশে ২০ লাখের বেশি গৃহশ্রমিক রয়েছেন। নীতিতে গৃহকর্মীর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘গৃহকর্মী বলতে এমন কোনো ব্যক্তিকে বোঝাবে যিনি নিয়োগকারীর গৃহে মৌখিক বা লিখিতভাবে খণ্ডকালীন অথবা পূর্ণকালীন নিয়োগের ভিত্তিতে গৃহকর্ম সম্পাদন করেন। এ ক্ষেত্রে মেস বা ডরমিটরিও গৃহ হিসেবে বিবেচিত হবে।’ শ্রম ও কর্ম সংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল চুন্নু সাংবাদিকদের বলেন, গৃহকর্মী নীতিমালা সময়ের দাবি ছিল। নীতিমালাটি মন্ত্রিসভার অনুমোদন পাওয়ায় ভালো লাগছে। এই সরকার দেশের সব মানুষের কথা চিন্তা করে। এটা শুধু কথার কথা নয়, কাজ করেই আমরা প্রমাণ করছি।’

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়