Wednesday, December 23

'ছিটা' সরিষায় পুরোটাই লাভ


সাবজাল হোসেন, কালীগঞ্জ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে দিন দিন বাড়ছে 'ছিটা' সরিষা চাষ। এতে সার, সেচ কিংবা লাঙল কিছুই লাগে না। আমন ক্ষেতে শুধু সরিষার বীজ ছিটিয়ে দিতে হয়। এ কারণে এ সরিষা চাষে খরচ নেই বললেই চলে; পুরোটাই লাভ। এ সরিষা চাষ অন্য ফসলের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। জানা গেছে, শুধু বীজ ছিটিয়ে দিতে হয় বলে কৃষক এ সরিষার নাম দিয়েছেন 'ছিটা' সরিষা। কালীগঞ্জের কৃষক দিন দিন ঝুঁকে পড়ছেন এ সরিষা চাষে। উপজেলার মহাদেবপুর গ্রামের কৃষক লিটন বিশ্বাস জানান, এ বছর তিনি ৭ বিঘা জমিতে ছিটা সরিষা চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় মাত্র ৪০০ টাকা খরচ হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। আশা করছেন আমন ও বোরো ধানের মাঝে বোনাস ফসল হিসেবে ৫৫ থেকে ৬০ মণ সরিষা পাবেন। বর্তমানে প্রতি মণ সরিষার দাম ২ হাজার ৫০০ টাকার বেশি। সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আশাদুল ইসলাম জানান, স্বল্প সময়ে অল্প খরচে বাড়তি লাভ হয় বলে দিন দিন ছিটা সরিষার চাষ বাড়ছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় মাত্র ৩ বছর আগে পরীক্ষামূলক শুরু হয় ছিটা সরিষা চাষ। চলতি মৌসুমে এটা চাষ হয়েছে প্রায় ৪৫০ একর জমিতে। আমন আর বোরো ধান চাষের মাঝে যে সময় জমি পতিত থাকে, সে সময় চাষ হওয়া সরিষার তেমন উৎপাদন খরচ নেই। কৃষক বোনাস ফসল হিসেবে এটা পেয়ে থাকেন। এছাড়া ক্ষেতে জৈব সারের অভাবও পূরণ হয়। ফলে এ সরিষা চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এলাকার কৃষক জানান, কার্তিক মাসে আমন ধান কাটার সপ্তাহখানেক আগেই পাকা ধান ক্ষেতে প্রতি বিঘা জমিতে দুই কেজি সরিষা ছিটিয়ে দিতে হয়। এর পর কয়েক দিনের মধ্যে চারা গজিয়ে গেলে কৃষক ধান কাটা শুরু করেন। পরে ওই জমিতেই বেড়ে উঠতে থাকে সরিষা গাছ। বাড়তি যত্ন ছাড়াই ৬০ থেকে ৭০ দিনে এ সরিষা কৃষক সংগ্রহ করতে পারেন। এ পদ্ধতিতে এক বিঘা (৪৬ শতক) জমিতে ৬ থেকে ৮ মণ সরিষা হয়। সরিষা সংগ্রহ শেষে ওই জমিতেই কৃষক বোরো চাষ করে থাকেন। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান জানান, ২০১২ সালে উপজেলার কমলাপুর গ্রামের জাকারুল ইসলাম নামের এক কৃষকের ২ বিঘা জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে তরী-৭ জাতের সরিষা চাষ করা হয়। ফলন ভালো হওয়ায় পরের বছর ওই এলাকায় প্রায় ১৮০ বিঘা জমিতে এ সরিষা চাষ করেন কৃষক। এর পর থেকে প্রতি বছর এ ছিটা সরিষার চাষ বেড়েই চলেছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়