সাজিদ আরাফাত:
সময় গড়িয়ে চলে অনন্তকালের গহ্বরের পথে। সবকিছুই এক সময় সেই গহ্বরে নিখোঁজ হবে অথবা স্রেফ মিলিয়ে যাবে। এর পরও কিছু ঐতিহাসিক স্থাপনা, শিল্প-সাহিত্যের নানা উদাহারণ আমাদের অতীত গৌরব সম্পর্কে ধারণা দেয়। তেমনই এক স্থাপনা বালিয়াটি জমিদার বাড়ি, যা এখনও প্রকৃতির নানা প্রতিকূলতার বিপরীতে দাঁড়িয়ে থেকে ঘোষণা করছে আমাদের অতীত গৌরবের কথা।
জমিদার বাড়ি মানেই অপূর্ব কারুকাজ করা বিশাল ভবন। প্রতিটি দেয়ালের পরতে পরতে যেন ইতিহাস আর না বলা হাজারো কথার ফুলঝুরি। রয়েছে আকর্ষণ করার মতো সৌন্দর্যের ছোঁয়া। তবে অন্যান্য জমিদারবাড়ির চেয়ে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার বালিয়াটি জমিদার বাড়িতে একটু হলেও বাড়তি সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়া যায়। কালের স্বাক্ষী বালিয়াটির জমিদার বাড়ি...
নদীর পাড়ে অবস্থান হওয়ায় মনে হয় তার সৌন্দর্য অন্য রকম অর্থ বহন করে। জমিদারবাড়ীর সিংহ দরজায় প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে প্রশস্ত আঙ্গিনা। একই লাইনে দাঁড়িয়ে আছে কারুকার্যখচিত চারটি বহুতল ভবন। এগুলোর পেছনে রয়েছে জমিদারবাড়ির অন্দরমহল এবং কয়েকটি পুকুর। প্রকৃতির এমন মনোরোম পরিবেশ আকর্ষণ না তৈরী করে কি পারে? কালের স্বাক্ষী বালিয়াটির জমিদার বাড়ি...
অধুনা মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার ভূমি অধিকর্তা ছিলেন বালিয়াটির রায় বাহাদুর পরিবার। বালিয়াটিতে জমিদার হিসেবে ছিলেন হরেন্দ্র কুমার রায় বাহাদুর, জ্ঞানেন্দ্র কুমার রায় বাহাদুর ও ঈশ্বরচন্দ্র রায় বাহাদুর। ১৮ শতকের শেষভাগে বিত্তশালী এই জমিদাররা গড়ে তোলেন তাদের প্রাসাদ। লন্ডন ও কলকাতা থেকে আনা সামগ্রী ব্যবহার করে গড়ে তোলা হয় তিন তলা বিশিষ্ট বেশ কয়েকটি অট্টালিকা। জমিদার বাড়ির দুটি অংশ দশ আনি এবং অপরটি ছয় আনি জমিদার বাড়ি নামে পরিচিত। কালের স্বাক্ষী বালিয়াটির জমিদার বাড়ি...
সম্প্রতি ইতিহাসের সেই না বলা কথা আর প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের দর্শনে কালের সাক্ষী হয়ে টিকে থাকা বালিয়াটি জমিদার বাড়িতে শিক্ষা সফরে যায় ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলমেন্ট অল্টারনেটিভ-এর যোগাযোগ ও গণমাধ্যম বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এতে অংশ নেয় প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। সেখানে তারা তথ্য ও স্থিরচিত্র সংগ্রহ করে। এছাড়াও এই জমিদার বাড়ির উপর তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন।
ঢাকা থেকে বালিয়াটি জমিদার বাড়ির দূরত্ব প্রায় ৪৫ কিলোমিটার। কালের স্বাক্ষী বালিয়াটির জমিদার বাড়ি...
নিয়মানুযায়ী টিকেট কেটে জমিদার বাড়িতে প্রবেশ করতে হয়। বাংলাদেশিদের জন্য টিকেটের মূল্য ২০ টাকা। সার্কভুক্ত দেশ সমূহের দর্শনার্থীদের জন্য টিকেটের মূল্য ১০০ টাকা আর বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষের জন্য টিকেটের মূল্য ২০০ টাকা। ছুটির দিনে সুন্দর এই জমিদার বাড়িটি দেখতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দর্শণার্থী ভিড় করেন। সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলোতেও দর্শনার্থীদের অভাব থাকে না। বালিয়াটি জমিদার বাড়ি রোববার পূর্ণদিবস আর সোমবার অর্ধদিবস বন্ধ থাকে। অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতেও তা বন্ধ থাকে।
খবর বিভাগঃ
ঐতিহ্য
দর্শনীয় স্থান
ফিচার
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়