Monday, November 16

নম্র ও মিষ্টি কথায় সওয়াব


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: মানবজীবনে মানুষকে চেনা যায় ছোট ছোট বিষয়ে। কথা বলার ভঙ্গি, খাবার-দাবার, পরস্পরে মেলামেশা ইত্যাদির মাধ্যমে ফুটে ওঠে ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব। তেমনি মিষ্ট ভাষাও মানুষের উত্তম চরিত্রের অন্যতম নিদর্শন। মানুষের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলা, ভালো আচরণ করা অনেক সওয়াবের কাজ। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন মুমিনের পরিমাপযন্ত্রে সবচেয়ে ওজনদার যে বস্তুটি রাখা হবে তা হলো উত্তম চরিত্র।’ পরস্পরের সঙ্গে কথা বলার সময়ও চারিত্রিক শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দেয়া যায়। যেমন সালাম করা, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা, ভালো পরামর্শ দেয়া এবং সুন্দরভাবে কথা বলে কিছু বোঝানোও উত্তম চরিত্রের নিদর্শন। কোরআনে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, ‘তোমরা মানুষের সঙ্গে মিষ্ট ভাষায় কথা বল’। নিচু স্বরে, মার্জিত ভঙ্গিতে কথা বললে চারিত্রিক সৌন্দর্য প্রকাশ পায়, মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে। আর কর্কশ স্বরে, উদ্ধত ভাষায় কথা বললে বিশৃঙ্খলা বাড়ে, সমাজে অশান্তি ছড়ায়। হজরত লোকমান (আ.) তার ছেলেকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘তুমি চলার সময় ভারসাম্যপূর্ণ গতিতে চল, কথা বলার সময় নিচু স্বরে বল’। মিষ্ট ভাষায় কথা বললে পরস্পরের মধ্যে সম্পর্ক ও ভালোবাসা গভীর হয়। আর কর্কশ ভাষায় কথা ঝগড়া-বিবাদ বাড়ায়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুসলমান তিরস্কার ও অভিশাপ দিতে পারে না, তেমনি পারে না কর্কশ ও অশ্লীল ভাষায় কথা বলতে।’ এ জন্য মুসলমানদের উচিত, নম্র্র ও সুমিষ্ট ভাষায় কথা বলা। রাসুল (সা.) আরো বলেন, ‘ভালো কথা বলা একটি সদকা।’ যেমনিভাবে দান-সদকায় গরিবের মন জয় করা যায়, তেমনি মিষ্ট কথা দিয়ে অনেক ভাঙা হৃদয়ে জোড়া লাগানো সম্ভব। হজরত মুসা ও হারুন (আ.) যখন ফেরাউনের কাছে যাচ্ছিলেন, তখন আল্লাহ তাদের বলে দিলেন, ‘তোমরা নম্র্র ভাষায় কথা বলবে।’ এতে এটা প্রমাণিত হয়, কাউকে নসিহত করতে হলে তা নম্র ও মিষ্ট ভাষায় করতে হবে। জিহ্বা এমন একটি যন্ত্র, যা দ্বারা কাউকে খুশিও করা যায় আবার কষ্টও দেয়া যায়। মিষ্টি কথা মনকে চাঙ্গা করে আর তিক্ত কথায় হৃদয় ভেঙে যায়। ইসলামের নির্দেশ হলো, কথায় কাউকে কষ্ট দেয়া যাবে না। মিষ্টি সুরে, নম্র ভাষায়, বিনয়ী কণ্ঠে কথা বলা রাসুলের (সা.) সুন্নত। প্রত্যেক মুসলমানের উচিত সেভাবেই কথা বলা।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়