Wednesday, July 1

মানুষের তাপে ডিম ফুটে বের হল পাখির ছানা!


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক: শিরোনাম দেখে ভ্র কুঞ্চিত করার কিছু নেই। পাখি নয়, মানুষের শরীরের তাপেই ডিম ফুটে বের হয়ে এসেছে পাখির ছানা। চমকে দেয়া এ ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার চক মিরপুর ইউনিয়নের চখরিচরণ গ্রামে। আর এ অসাধ্য সাধন করেছেন ওই গ্রামের কৃষক শুকুর আলী শেখ। তিনি জানান, প্রতিবছরের মতো এ বছরও তিনি চখরিচরণ পূর্বপাড়ার চকে ২০ শতাংশ বর্গা জমিতে ইরি ধান রোপন করেন। প্রায় ২৫ দিন আগে তিনি ওই জমিতে আরো দুজন কৃষি শ্রমিক সঙ্গে নিয়ে পাকা ধান কাটতে যান। তার ক্ষেতের পাশেই প্রতিবেশী রূপচান নামের আরেক কৃষকের ধানক্ষেত। সেই ক্ষেতে ধান গাছের গোড়ায় প্রথমে রূপচান দুটি ডিম দেখতে পান। ডিম দেখেই তিনি শুকুর আলীকে ডাক দেন। শুকুর আলী ডিমগুলো দেখে ডাহুক পাখির মনে করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। প্রথম দুই দিন তিনি গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে খোঁজ করেন দেশি প্রজাতির কোনো মুরগি বাচ্চা ফুটাতে ডিমে তাপ দিচ্ছে কি না। কিন্তু তা না পেয়ে কী করা যায় ভাবছিলেন। এমন সময় নাতনি নিলুফা ঠাট্টা করে বলে, ‘দাদা তুমি নিজেই ডিমে তা দেও।’ কথাটি শুনে শুকুর নিজেই ইচ্ছা পোষণ করেন ডাহুকের ডিম থেকে বাচ্চা ফুটাতে তিনি নিজেই তাপ দেবেন। শুকুর আলী জানান, একটি পাকা নারকেলের অর্ধেক মালাইতে তুলা ও কিছু গরম কাপড় দিয়ে দুটি ডিম বসান। এরপর তিনি নিজের তলপেটে গামছা দিয়ে মালাইটি শক্ত করে বেঁধে নেন। একটানা মালাইটি পেটে বেঁধে রাখায় প্রতিদিন গোসল করতেও পারেননি। খাওয়া-দাওয়া এমনকি ঘুমিয়েছেন ডিম ভরা মালাই পেটে বেঁধেই। ঘটনার ১২ দিন পর শুকুর আলী দেখতে পান, একটি ডিম ফেটে নষ্ট হয়ে গেছে। সেখান থেকে ডিমটি ফেলে দেন। হতাশ না হয়ে শুকুর আলী আরেকটি ডিম নিয়েই অপেক্ষা করতে থাকেন। ২০ দিন পর ওই ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়ে আসে। এরপর বাচ্চাটির পরিচর্যা শুরু করেন তিনি। কয়েকদিনের মধ্যেই এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে প্রতিদিন পাখির ছানাটিকে দেখতে আসছে শত শত উৎসুক মানুষ। শুকুর আলী আরো জানান, ডাহুক ছানাটিকে তিনি পোষ মানাচ্ছেন। পোষ মানলেই খাঁচা থেকে বের করবেন। তা ছাড়া লালন-পালন করে পাখিটির বংশ বিস্তারের যাবতীয় ব্যবস্থা করবেন। এদিকে ডাহুক ছানা দেখতে আসা রফিকুল ইসলাম জানান, মানুষের পেটে পাখির ছানা হয়েছে শুনে তিনি দেখতে এসেছেন। পাখি প্রেমিক বলেই শুকুর আলী ধৈর্য সহকারে পেটের তাপ দিয়ে তা ফুটাতে পেরেছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবদুল হালিম বলেন, ডাহুক পাখি তাদের বাসায় একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ডিমে তা দেয়। এরপর সেখান থেকে ছানা বের হয়। ওই ডিম মানুষের পেটে তাপ দিয়ে ছানা জন্মানো দুঃসাধ্য ব্যাপার

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়