Monday, June 8

মোদির সঙ্গে সঙ্গে থাকার আহ্বান অশনি সংকেত!


মেজর অব. মো. আখতারুজ্জামান :গতকাল রবিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমাদের দেশের গুণীজনদের সামনে এক মনমোহনী বক্তৃতা দিয়ে গেছেন। অনেক কথা বলেছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের আসনের ন্যায্যতা নিয়ে কথা বলেছেন। এর সঙ্গে আমরা বাংলাদেশের মানুষ সবাই একমত। এটা ভারতের ন্যায্য দাবি এবং এই দাবি পূরণের সংগ্রামে আমরাও তাদের পাশে আছি। মোদি তার বক্তৃতায় আমাদের জন্য অনেক কিছু বলেছেন যা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান থেকে সঠিক। কিন্তু তিনি অনেক কথা চেপেও গেছেন। তিনি তার মোহনীয় বক্তৃতা দিয়ে আমাদেরকে ভুলাতে চেয়েছেন গত ৪৪ বছরের বঞ্চনা, অসহযোগিতা ও দুঃখ-দুর্দশার কথা। সিডরের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ পাঁচ লাখ টন চাল এখনও বাংলাদেশে আসেনি কেন সেকথা তিনি বলেননি। বাংলাদেশের সীমানার চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া কেন তা কিন্তু তিনি খোলাসা করেননি। বাংলাদেশের মরণ ফেনসিডিল কেন ভারত উৎপাদন করে সে কথা উনার মোহনীয় বক্তব্যে দিতে ভুলে গেছেন। উনি এই দেশের দুই দুজন রাষ্ট্রপতির মৃত্যুর ব্যাপারে একটি কথাও বলেননি। সমবেদনা বা সহানুভূতিতো জানানইনি তাদের মৃত্যুর কথাও উল্লেখ করেননি। আমাদের দুই রাষ্ট্রপতির মৃত্যুর কারণের তীর কিন্তু জনগণ সবসময় পশ্চিম দিকেই দেখায়। মোদি সাহেব শুধু আমাদের পাশেপাশেই নয় আমাদের সঙ্গে সঙ্গেও থাকতে চান, যা তিনি তার মোহনীয় বক্তৃতায় কয়েকবারই উল্লেখ করেছেন। আমাদের জন্য এটা অশনিসংকেত। পাশাপাশিতো আছি কিন্তু সঙ্গে থাকব কী করে! দুজন একসঙ্গে থাকতে গেলে একজনের সংসারতো বিলুপ্ত করতে হবে, সেটা ভাবতেই ভয়ে শীতল হয়ে যাচ্ছি। যে প্রধানমন্ত্রীর কথা তার মুখ্যমন্ত্রীরা শুনে না, যার মুখ্যমন্ত্রী সফরসঙ্গী হয়েও একসঙ্গে আসেনও না যানও না, তিনি আমাদেরকে সঙ্গে সঙ্গে রাখতে চান- এর মাজেজাতো অনেক গভীর মনে হচ্ছে। ইংরেজরা এই দেশে প্রথম এসে বলেছিল নাকি, "আমরা বাণিজ্য করতে আসিয়াছি- তোমাদের শাসন করতে নয়" এবং এই কথার মাজেজা বুঝতে আমাদের দুইশ বছর লেগেছিল! জানি না এখন ভারতের বানিয়ারা যার প্রতিনিধিত্ব করেন ভারতের বর্তমান গরিব প্রধানমন্ত্রী কোন বাণিজ্য করার জন্য আমাদেরকে সঙ্গে নিতে চান? লেখক: সাবেক সংসদ সদস্য।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়