Tuesday, June 23

'সর্বকালের সেরা খলনায়ক'


বিনোদন ডেস্ক: কেবল ভারতেই নয়, হিন্দি সিনেমার 'মোগাম্বো' জনপ্রিয়তা পেয়েছেন বিশ্বজুড়ে। পাঞ্জাবের এক সাধারণ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন অমরিশ। নায়ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন তিনি। কিন্তু হয়ে গেলেন 'সর্বকালের সেরা খলনায়ক'। হিন্দি সিনেমার এই দাপুটে অভিনেতার জন্মদিন ছিল ২২ জুন। অমরিশ পুরির বড় দুই ভাই চমন পুরি এবং মদন পুরি ছিলেন ষাটের দশকের প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেই হিমাচল প্রদেশের বি এম কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে মুম্বাইয়ে চলে আসেন নায়ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। প্রথম অডিশনেই ব্যর্থ হন। তখন জীবিকা উপার্জনের জন্য এক ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি নেন তিনি। সিনেমায় সুযোগ না পেলেও অভিনয়ের প্রতি ভালবাসা কমেনি অমরিশের। আর তাই পৃথ্বী থিয়েটারে কর্মী হিসেবে যোগ দেন। বিখ্যাত নাট্যকার সাত্যাদেভ দুবের অনেক নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ১৯৭৯ সালে অর্জন করেন সাংগীত-নাটক অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডও। মঞ্চের জনপ্রিয়তা তাকে টিভির বিজ্ঞাপনে অভিনয়ের সুযোগ এনে দেয়। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে রূপালি পর্দায় নিজের আসন গড়ে নেন অমরিশ। তার বড় পর্দায় প্রথম উপস্থিতি ছিল মারাঠি সিনেমা ‘শান্তাতা! কোর্ট চালু আহে’। সেখানে তিনি রেলস্টেশনের এক অন্ধ ভিখারির ভূমিকায় অভিনয় করেন, যিনি গান গেয়ে রোজগার করতেন। রিচার্ড অ্যাটেনবরোর কালজয়ী সিনেমা ‘গান্ধি’তেও একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। মার্কিন নির্মাতা স্টিভেন স্পিলবার্গের ‘ইন্ডিয়ানা জোন্স: টেম্পল অফ ডুম’-এও অভিনয় করেছেন প্রধান খল চরিত্র মোলা রামের ভুমিকায়। তার প্রথম হিন্দি সিনেমা ‘রেশমা অউর শেরা’। পরবর্তীতে কেবল হিন্দিই নয়, মারাঠি, কানাড়া, তামিল, তেলেগু, মালায়ালাম এবং পাঞ্জাবী সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে চারশ'র বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। প্রথমে ‘ইন্ডিয়ানা জোন্স’-এ অভিনয়ের জন্য রাজি হননি অমরিশ। পরে অ্যাটেনবরোর অনুরোধে রাজি হন। এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য মাথা কামিয়ে ফেলতে হয়েছিল। পরে তার এই টেকো মাথার স্টাইল হিন্দি সিনেমায় এতটাই জনপ্রিয় হয় যে, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই স্টাইলটাই ধরে রাখেন তিনি। স্টিভেন স্পিলবার্গের প্রিয় অভিনেতা ছিলেন অমরিশ পুরি। তার সম্পর্কে এক সাক্ষাৎকারে অস্কারজয়ী এই নির্মাতা বলেছিলেন, “আমার সবচেয়ে প্রিয় খল চরিত্রের অভিনেতা হলেন অমরিশ পুরি। পৃথিবীতে জন্ম নেয়া সর্বকালের সব খলনায়কদের মধ্যে তিনিই সেরা এবং তার মতো কেউ আসবেও না।” ২০০৫ সালে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে চির নিদ্রায় শায়িত হন। মৃত্যুর আগে তার অভিনীত শেষ সিনেমা ‘কাচ্চি সাড়াক’। সিনমাটি মুক্তি পায় ২০০৬ সালে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়