Monday, June 1

আওয়ামী লীগ আতঙ্ক আওয়ামী লীগে!


চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। আর এই আতঙ্কের কারণও আওয়ামী লীগ। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন- চসিক নির্বাচনে আ জ ম নাছির মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় এই আতঙ্ক। জানা যায়, মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সমর্থকদের রক্তচক্ষুর ফলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের অন্যতম দুই নেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আবদুচ ছালামের সমর্থকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। আ জ ম নাছির উদ্দিনের সমর্থকদের সাথে ইতোমধ্যে এই দুই সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে একাধিক। সংঘর্ষের মাত্রা বাড়ছে দিনদিন। ফলে চট্টগ্রাম মহানগর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত চরম অস্থিরতায় রয়েছে নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীরা জানান, চসিক মেয়র নির্বাচনের আগেও চট্টগ্রাম মহানগর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থকদের আধিপত্য ছিল। কিন্তু নির্বাচনে আ জ ম নাছির উদ্দিন মেয়র হওয়ার পর থেকেই চুপসে যায় এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থকরা। আর এই ফাঁকে মাথাচড়া দিয়ে উঠে আ জ ম নাছির উদ্দিনের সমর্থিত আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। যাদের হাতে মেয়রকে সম্ভাষণ জানাতে গিয়ে তোপের মুখে পড়তে হয়েছে মহিউদ্দিন ও ছালাম সমর্থিতদের। এমনকি আ জ ম নাছিরের আচরণ হজম করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আবদুচ ছালাম। এতে ক্ষোভ বিরাজ করছে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আবদুচ ছালাম সমর্থিতদের মাঝে। চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম এ প্রসঙ্গে বলেন, আ জ ম নাছির ও তার সমর্থকদের ধারণা চসিক নির্বাচনে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রার্থী হতে না পেরে ভেতরে ভেতরে তাদের বিরোধিতা করেছে। এ থেকেই এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আবদুচ ছালাম সমর্থিতদের প্রতি গাত্র দাহ শুরু হয়। তিনি বলেন, মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর আ জ ম নাছির উদ্দিনের প্রতিটি সংবর্ধনা সভায় দলীয় অনেক নেতাকর্মীকে মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আবদুচ ছালাম সমর্থক মনে করে নাছির সমর্থকরা হামলা ও মারধর করেছে। সর্বশেষ গত বুধবার চট্টগ্রাম জামাল খান এলাকায় নাগরিক সংবর্ধনায় এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী সমর্থিত যুবলীগের দুই কর্মীকে ছুরিকাঘাত করে নাছির সমর্থকরা। একই অবস্থা চলছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরপরই চবি ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ বাঁধে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আ জ ম নাছির উদ্দিন সমর্থিতদের মাঝে। বর্তমানে নাছির উদ্দিনের সমর্থিতদের দাপটে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে মহিউদ্দিন চৌধুরী সমর্থিতরা। চবি ছাত্রলীগ নেতা রবিউল হোসেন ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা বদিউল আলম জানান, আ জ ম নাছিরের সমর্থকরা মূলত আধিপত্য বিস্তারের জন্য এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সমর্থকদের রক্তচক্ষু দেখিয়ে নিষ্ক্রিয় করার অপকৌশল নিয়েছে। ফলে দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। তিনি বলেন, এই অস্থিরতার কারণে চট্টগ্রাম মহানগর থেকে চবি পর্যন্ত দলের সকল সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে। এতে প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, মেয়র হওয়ার পর থেকে নগরীতে দলীয় নেতাকর্মীদের একটি অংশ আ জ ম নাছিরে পক্ষ অবলম্বন করে সুবিধা আদায়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। এতে দলে কোন্দল বাড়ছে। যা দলের জন্য মোটেও শুভ নয়। আ জ ম নাছিরের উচিত তার সমর্থিতদের নিয়ন্ত্রণ করা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন এ প্রসঙ্গে ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। সে হিসেবে নেতাকর্মীদের দলাদলি আগেও ছিল এখনও আছে। এ জন্য মেয়রকে দায়ী করা উচিত নয়। তবুও আমি দলের নেতাকর্মীদের এ ব্যাপারে সবসময় নিয়ন্ত্রণ করি। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন মেয়র হওয়ার পরপরই চবির সংঘর্ষ নিয়ে আমি শক্ত অবস্থান নেওয়ায় আর কোন সংঘর্ষ হয়নি। তবে আমার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কতিপয় স্বার্থান্বেষি মহল পরিস্থিতি ঘোলাটে করার জন্য সংঘর্ষের ঘটনা ঘটাচ্ছে। যা আমার উপস্থিতে একটি ঘটেনি। এ ব্যাপারে আমি নেতাকর্মীদের সতর্ক করেছি। নেতাকর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করার স্বীকার করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সাংগঠনিক নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ করছি। অচিরেই এই সমস্যা নিরসন হবে। -----ইব্রাহিম খলিল, ঢাকাটাইমস

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়