Wednesday, June 24

রহমতের সওগাত


জহির উদ্দিন বাবর: সিয়াম সাধনার রমজানকে ভাগ করা হয়েছে তিন ভাগে। প্রথম ১০ দিন রহমতের। এ সময় আল্লাহর অফুরন্ত রহমত বর্ষিত হতে থাকে। আল্লাহর রহমত অনবরতই ঝরছে। তবে পবিত্র রমজানের প্রথম দশকে রহমতের বারিধারা বইতে থাকে প্রবল বেগে। এতে সিক্ত হয়ে মোমিনরা পরকালে সুউচ্চ আসনে আসীন হতে পারেন। রাসুল (সা.) বলেন, 'তোমাদের সামনে রমজান হাজির। এটি অত্যন্ত বরকতপূর্ণ মাস। এ মাসের রোজা আল্লাহ তোমাদের ওপর ফরজ করেছেন। এ মাসে রহমতের দরজাগুলো উন্মুক্ত ও জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় এবং বড় বড় শয়তানকে আটক করে রাখা হয়। এ মাসে এমন একটি রাত আছে, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। যে লোক এ রাতের মহাকল্যাণ লাভ থেকে বঞ্চিত থাকল, সে প্রকৃতই সবকিছু থেকে বঞ্চিত।' (বায়হাকি, আহমাদ ও নাসাঈ)। রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত মহান আল্লাহর বিশেষ রহমতে পরিপূর্ণ। এ সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেন, 'আর এটি এমন একটি মাস, যার প্রথম ভাগে আল্লাহর রহমত, মধ্য ভাগে গোনাহের মাগফিরাত এবং শেষ ভাগে দোজখের আগুন থেকে মুক্তিলাভ রয়েছে।' (মেশকাত)। এসব সুসংবাদ শুধু তাদের জন্যই, যারা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য রমজানের পূর্ণ একটি মাস রোজা পালন করেন, নিজেদের ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত রাখেন। রোজাদার ব্যক্তিই দুনিয়া ও আখেরাতে সফলকাম। তারা আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছ থেকে লাভ করেন অসীম রহমত। রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত মহান আল্লাহর বিশেষ রহমতে পরিপূর্ণ। রোজা পালনের মধ্য দিয়ে মোমিনরা আত্মিকভাবে নিজেদের গড়ে তুলতে সক্ষম হন। তাই আল্লাহ তায়ালা রোজাদারদের জন্য পবিত্র রমজানে তার রহমতের দরজা অবারিত করে দেন। হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) এরশাদ করেন, 'রমজানে আমার উম্মতকে পাঁচটি বিশেষ সুবিধা দেয়া হয়েছে, যা আমার পূর্ববর্তী কোনো নবীকে দেয়া হয়নি। ১. রমজানের প্রথম রাতে আল্লাহ তাদের দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন, আর আল্লাহ যার দিকে দৃষ্টি দেন, তাকে কখনও শাস্তি দেন না। ২. সন্ধ্যার সময় তাদের মুখ থেকে যে গন্ধ বের হয় তা আল্লাহর কাছে মেশকের সুগন্ধির চেয়েও উত্তম। ৩. রমজানের প্রতিটি দিনে ও রাতে ফেরেশতারা রোজাদারদের জন্য দোয়া করেন। ৪. আল্লাহ তাঁর বেহেশতকে বলেন, তুমি আমার বান্দার জন্য সুসজ্জিত এবং প্রস্তুত হও! আমার বান্দা অচিরেই দুনিয়ার দুঃখ-কষ্ট থেকে অব্যাহতি পেয়ে আমার বাড়িতে ও আমার সম্মানজনক আশ্রয়ে এসে বিশ্রাম নেবে। ৫. রমজানের শেষ রাতে আল্লাহ তাদের সব গোনাহ মাফ করে দেন।' এক ব্যক্তি বললেন, এটি কি লাইলাতুল কদর? রাসুল (সা.) বললেন, 'না, তুমি দেখনি শ্রমিকরা যখন কাজ শেষ করে তখনই পারিশ্রমিক পায়।' (বায়হাকি)। আমরা প্রত্যেকেই আল্লাহর রহমতের মুখাপেক্ষী। রহমতের এ দশকে আমরা বেশি বেশি করে তওবা, এস্তেগফার ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়