কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশ দলের সবাই যখন ছুটিতে, তখন কাল থেকে শুরু হতে যাওয়া ঢাকা টেস্টে রানের ফিরতে মরিয়া মুশফিকুর রহিম অনুশীলনে। খুলনায় একাদশে সুযোগ না পাওয়া সতীর্থ জুবায়ের হোসেনকে নিয়ে চলে এলেন হোম অব ক্রিকেটে। বৈশাখের খরতাপ উপেক্ষা করে ব্যাটিংয়েও মগ্ন হয়ে গেলেন।
বাড়তি অনুশীলনে বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়কের মন-প্রাণ সঁপে দেওয়াটা নতুন নয়। তিনি বরাবরই এরকম। আর গত কিছুদিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাট হাতে দারুণ সময় পার করতে করতে এই এক ম্যাচের ব্যর্থতা যে তাকে কতটা চিন্তিত করে তুলেছে, সেটি কাল বিকেলের অনুশীলনেই স্পষ্ট।
তবে মুশফিককে নিয়ে বাড়তি চিন্তা শুধু তারই নয়, পুরো দলেরও। সেটি তার ব্যাটিং নিয়ে অবশ্যই নয়। ঢাকা টেস্টে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মুশফিক উইকেটকিপিংও করতে পারবেন কি না, দুশ্চিন্তা তা নিয়েই। টেস্ট শুরুর এক দিন আগেও সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট।
সিরিজের শেষ টেস্টে মুশফিকের উইকেট আগলানো নিয়ে তাই অনিশ্চয়তা রয়েই গেল। খুলনায় পেসার মোহাম্মদ শহীদের বলে আজহার আলীর ক্যাচ নিতে গিয়ে সেই যে ডান হাতের অনামিকায় চোট নিয়ে বেরিয়ে যান অধিনায়ক, এরপর আর কিপিং গ্লাভস পরাই হয়নি।
তার জায়গায় ইমরুল ও মাহমুদ উল্লাহদের দিয়ে 'ঠেকার কাজ' চালিয়ে নেওয়া বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট মুশফিককে পরখ করে দেখবেন।
যদিও আঙুলে এখনো তিনি চোট অনুভব করছেন বলে জানিয়েছেন ফিজিও বায়েজিদুল ইসলাম, 'গতকাল মুশফিক ব্যাটিং করেছে, তবে কিপিংয়ের অনুশীলন করেনি। আঙুলের ব্যথা যদিও অনেকটাই কমে এসেছে এখন তবু ব্যথা তো আছে। যে জন্য কিছুটা অস্বস্তিও আছে। আমরা উইকেটকিপিং করিয়ে ওর অবস্থা যাচাই করে দেখব। এই টেস্টে কিপিং করবে কি করবে না, সে সিদ্ধান্তে আসতে তাই ওই সময় পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতেই হচ্ছে।'
সেই অপেক্ষার ফল যদি ইতিবাচক হয়, তাহলে কোনো সমস্যাই থাকে না আর। কিন্তু নেতিবাচক হলে টিম ম্যানেজমেন্টও তো কম সমস্যায় পড়বে না! তামিম-ইমরুলের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে খুলনা থেকে টেস্ট ড্র করে ফেরা বাংলাদেশ দলের জন্য সেটি হবে মধুর বিড়ম্বনা।
ভালো পারফর্ম করার পর সাধারণত একাদশ কিংবা কম্বিনেশন বদলানোর প্রশ্নই আসে না। তবু ঢাকা টেস্টে একটি পরিবর্তন ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করে দিয়েছে পেসার রুবেল হোসেনের ইনজুরি। পেটের বাঁ দিকের পেশিতে টান পড়ায় সিরিজের শেষ টেস্ট থেকে ছিটকে পড়েছেন তিনি।
খুলনা টেস্টের চতুর্থ দিন থেকেই সমস্যাটা অনুভব করছিলেন। গতকাল স্ক্যান করানোর পর নিশ্চিত হওয়া গেছে যে অবস্থা বেশ গুরুতরই। না হলে তো পুরোপুরি সেরে উঠতে তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় লাগার কথা নয়। রুবেলের জায়গায় তাই শেষ টেস্টের দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে আরেক পেসার আবুল হাসানকে। সুবাদে ঢাকা টেস্টের একাদশে একটি পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবীই ছিল।
কিন্তু মুশফিক যদি শেষ পর্যন্ত উইকেটকিপিং করতে না পারেন, তাহলে আরেকটি পরিবর্তন না এনেও উপায় থাকবে না টিম ম্যানেজমেন্টের। কারণ খুলনার মতো নিশ্চয়ই আপৎকালীন ব্যবস্থায় উইকেট সামলানোর কাজটি সেরে নিতে চাইবে না বাংলাদেশ শিবির। তখন একজন বিশেষজ্ঞ উইকেটকিপার লাগবে।
দলে সে রকম আরেকজন আছেনও। ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রচুর রান করার পুরস্কার হিসেবে টেস্ট দলে জায়গা পাওয়া লিটন কুমার দাস যে উইকেটকিপিংটাও করেন। কিন্তু তাকে একাদশে ঢোকাতে হলে কার জায়গায়? মধুর বিড়ম্বনা এসে যাচ্ছে এখানেই।
ম্যানেজার খালেদ মাহমুদকেও তাই বলতে হলো, 'অনুশীলনে দেখার পরই বুঝতে পারব মুশফিক কিপিং করতে পারবে কি না। যদি করতে না পারে, সে ক্ষেত্রে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ কিপার খেলানোর কথাই ভাববে দল। সে রকম কিছু হলে একটা মধুর সমস্যাও হবে। তাকে আপনি কার জায়গায় খেলাবেন? তখন হয়তো সৌম্য সরকার ও শুভাগত হোমের যেকোনো একজনকে বাইরে রাখা হবে।'
খবর বিভাগঃ
খেলাধুলা
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়