মাহে রজব আরবি বছরের সপ্তম মাস। বায়হাকি শরিফে আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে আছে, রজব মাসের নতুন চাঁদ দেখলেই আল্লাহর রাসুল (সা.) বলা শুরু করতেন- ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রামাজান।’ এ ছাড়াও হাদিসে রজব মাসের বহু ফজিলত এবং আমলের কথা বর্ণিত আছে। যেমন, হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মাহে রজব আল্লাহর প্রিয় মাস। যে ব্যক্তি রজব মাসকে সম্মান করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে দুনিয়া ও আখেরাতে সম্মানিত করবেন।’
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘হে আমার সাথীরা! জিবরাঈল (আ.) আমাকে রজব মাসের ফজিলত ও আমল সম্পর্কে বলেছেন- রজবের ইবাদত মোমিন ব্যক্তি ছাড়া কোনো মুশরিকের ভাগ্যে জোটে না।’
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মাহে রজব আল্লাহর মাস। মাহে শাবান আমার মাস। আর মাহে রমজান আমার ও আমার উম্মতের মাস।’
রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতটি একটি পুণ্যময় রাত। এ রাতকে বলা হয় লায়লাতুল মেরাজ। ইসলামে এ রাতের গুরত্ব, ফজিলত ও অনেক বরকত রয়েছে। এ জন্য রজব মাস থেকে মোমিনের প্রস্তুতি শুরু হওয়া দরকার। রমজানের প্রস্তুতি, কোরআন তেলাওয়াতের প্রস্তুতি, আল্লাহর হুকুম মানার প্রস্তুতি, পরকালের প্রস্তুতি, নিজেকে পূতঃপবিত্র করার প্রস্তুতি।
আমাদের দেশে মসজিদ বাড়ছে। বাড়ছে মুসল্লির সংখ্যাও। কিন্তু ইসলামের মূল শেকড়ের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক কতটুকু জোরদার হচ্ছে? বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। মানুষ নামাজ পড়ছে, হজ করছে; কিন্তু মিথ্যাও বলছে! সুদ খাচ্ছে, ঘুষ খাচ্ছে, পর্দার হুকুম মেনে চলছে না, অন্যায় এবং পাপাচারে লিপ্ত হচ্ছে। মহান স্রষ্টা আল্লাহর হুকুম এবং রাসুলের আনুগত্য করছে না। অথচ প্রত্যেকের উচিত আল্লাহমুখী, ইমানদার এবং প্রকৃত ইসলামের অনুসারী হওয়া। দুঃখজনক হলো, আমরা প্রত্যেকে যার যার দর্শনে বিশ্বাসী। তবে সত্য হলো, যে যেখানেই থাকুন, সুষ্ঠু জ্ঞানে, মুক্তচিন্তার অধিকারী হলেই যে কেউ ইসলামের শেকড় খুঁজে পাবে। তবে সর্বাবস্থায় মিথ্যা, পরনিন্দা, হিংসা, লোভ, সুদ, ঘুষ, অহঙ্কার, চুরি, ডাকাতি এবং এ জাতীয় সব পাপাচার থেকে বেঁচে থাকা সবার জন্য আবশ্যক। মানুষ মানুষকে ভালোবাসবে, সুখ-দুঃখে পাশে থাকবে, আল্লাহর হুকুম এবং নবীর দেখানো পথে চলবে; তবেই তো মানুষ শান্তি পাবে। সমাজে আসবে নিরাপত্তা, সমৃদ্ধ হবে দেশ ও রাষ্ট্র।
মুফতি আহসান শরিফ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়