নিজস্ব প্রতিবেদক:
কৃষি প্রনোদনার আওতায় সরকারী ভাবে বিনামূল্যে প্রান্তিক চাষীদের মাঝে বিতরণকৃত ইউরিয়া ও মিশ্র সার এবং আউস ধানের বীজ সোমবার কানাইঘাটে কালো বাজারে বিক্রির চেষ্টাকালে স্থানীয় জনতা ও ব্যবসায়ীরা আটক করেছেন। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অপরাধে উপজেলা কৃষি অফিসের রাজাগঞ্জ ইউপির কর্মরত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, কৃষি অফিসের পিপিএম নাজিম উদ্দিন, এমএলএসএস ইব্রাহীম আলীকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া আজ তার কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে ডেকে নিয়ে শোকজ করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, সোমবার বেলা অনুমান ১টার দিকে কৃষি অফিসের উল্লেখিত এ তিন কর্মকর্তা ৫টি রিক্সা ভাড়া করে উপজেলা প্রশাসন পাড়ায় অবস্থিত কৃষি অফিসের গুদাম ঘর থেকে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণকৃত ৫০ কেজির সমপরিমাণ ইউরিয়া ও মিশ্র ১৪ বস্তা সার এবং আউস ধানের ১০ বস্তা বীজ কানাইঘাট বাজারস্থ ডাক বাংলা রোডে অবস্থিত সরকার অনুমোদিত সার ও বীজ ডিলার আব্দুল মুমিনের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বীজ ঘরে কালো বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যান। এসময় বাজারের কিছু ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজনের বিষয়টি দৃষ্টি গোচর হলে তারা সার ও বীজ বোঝাই ৫টি রিক্সা আটক করেন। এ ব্যাপারে রিক্সা চালকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা বলেন কৃষি অফিসের কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন, ইব্রাহীম আলী ৫শত টাকা রিক্সা ভাড়া ধার্য্য করে উল্লেখিত সার ও বীজ আব্দুল মুমিনের দোকান বীজ ঘরে পৌঁছে দেয়ার জন্য বলেছেন। তখন উৎসুক জনতা সেখানে ভীড় করলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, উদ্ভিদ সংরক্ষক আব্দুল মুমিনের শ্বশুড় মোহাম্মদ আলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত হয়ে পুরো বিষয়টি ধামা চাপা দেয়ার জন্য চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়াকে অবহিত করা হলে তার নির্দেশে জনতার হাতে আটকৃত সার ও বীজ তার কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। তখন কৃষি অফিসের লোকজন আটককৃত সার ও বীজ রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের ২০ জন প্রান্তিক চাষীদের বলে দাবী করে সেখানে রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষককে নিয়ে যান। স্থানীয় সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে নির্বাহী কর্মকর্তা এ ঘটনার সাথে জড়িত কৃষি অফিসের লোকজন, রিক্সা চালক ও কৃষকদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের বক্তব্যে ব্যাপক গড়মিল পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানকে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, পিপিএম নাজিম উদ্দিন, এমএলএসএস ইব্রাহীম আলীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের ২০ জন কৃষকের তালিকা বাতিল ও এই ইউনিয়নের বিনা মূল্যে সার ও বীজ বিতরণ বন্ধেরও নির্দেশ দেন। এব্যাপারে পত্রিকায় যাতে কোন সংবাদ প্রকাশিত না হয়, সে জন্য উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষক মোহাম্মদ আলী স্থানীয় সাংবাদিকদের উৎকোচ দিয়ে ম্যানেজের চেষ্টা করেন।
খবর বিভাগঃ
প্রতিদিনের কানাইঘাট
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়