ইসলাম ডেস্ক:
‘আশরাফুল মাখলুকাত’ বা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে মানুষের মহামূল্যবান জীবন ও দেহ সুরক্ষায় রক্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য তরল উপাদান। যেকোনো দুর্ঘটনায় শরীর থেকে রক্ত ঝরে গেলে দেহের অভ্যন্তরে অন্ত্র বা অন্য কোনো অঙ্গ থেকে রক্তক্ষরণ হলে অস্ত্রোপচারের জন্য রক্তের খুব প্রয়োজন। প্রসবজনিত অপারেশনের সময় বা বড় ধরনের দুর্ঘটনার মতো নাজুক অবস্থায় রক্ত দেওয়া অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়ে। মানবদেহে রক্তশূন্যতার জন্য রক্ত গ্রহণের যেমন বিকল্প নেই, তেমনি রক্তের চাহিদা পূরণের জন্য রক্ত বিক্রয় বৈধ নয়। তবে বিনা মূল্যে রক্ত না পেলে রোগীর জন্য রক্ত ক্রয় করা বৈধ, কিন্তু এতে বিক্রেতা গুনাহগার হবে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক রোগের ওষুধ আছে। সুতরাং যখন রোগ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করা হয়, তখন আল্লাহর হুকুমে রোগী আরোগ্য লাভ করে।’ (মুসলিম)
ইসলামের দৃষ্টিতে স্বেচ্ছায় রক্তদানে অন্য মানুষের মূল্যবান জানপ্রাণ রক্ষা পায় এবং নিজের জীবনও ঝুঁকিমুক্ত থাকে; তাই রক্তদানের ব্যাপারে ইসলামে কোনো বিধিনিষেধ নেই। কেউ যদি স্বেচ্ছায় রক্ত দান করেন, তাহলে এতে একজন বিপদগ্রস্ত মানুষের বা মুমূর্ষু রোগীর জীবন যেমন বাঁচবে, তেমনি রক্তদাতা ও রক্তগ্রহীতার মধ্যে গড়ে উঠবে রক্তের বন্ধন। স্বেচ্ছায় রক্ত দিলে শুধু অন্যের জীবন বাঁচানো নয়, বরং নিজের জীবনও ঝুঁকিমুক্ত রাখা সম্ভব হবে। বিপন্ন মানুষের মহামূল্যবান জীবনের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পবিত্র কোরআনে ঘোষিত হয়েছে, ‘আর কেউ কারও প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীকে প্রাণে রক্ষা করল।’
সৎ কর্ম ও নেক আমল করার জন্য আল্লাহর কাছে পরকালে যথাযথ প্রতিদানও মিলবে। যেহেতু তিন মাস অন্তর নিয়মিত রক্ত দান করলে রক্তের প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মানুষের রোগ-ব্যাধি ধরা পড়ে, এ জন্য প্রথম অবস্থাতেই আরোগ্য লাভের জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়। একজন সুস্থ-সবল লোকের রক্তদানের বিনিময়ে অন্য একজন অসুস্থ ও মুমূর্ষু ভাইয়ের জীবন রক্ষা পেলে শরিয়ত অনুমোদিত হওয়ায় আগ্রহচিত্তেই তা দেয়া উচিত। স্বেচ্ছায় রক্ত দান করলে তা মানুষের অনেক উপকারে আসে। আর এতে অনেক সওয়াব পাওয়া যায়। অন্যদিকে সামর্থ্যবান রক্তদাতাও পরোপকারের মাধ্যমে দৈহিক ও মানসিক দিক দিয়ে ইসলামি মূল্যবোধে উজ্জীবিত হয়ে সুস্থ, সবল ও নিরাপদ থাকেন।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়