মো: মাহতাব আহমদ(সেলিম)
:
পিত্রালয় থেকে জমিজমা বিক্রি করে যৌতুক বাবদ গাড়ী কেনার জন্য ৫ লক্ষ টাকা না এনে দেয়ার অপরাধে কানাইঘাট উপজেলার সাতবাঁক ইউপির দাবাধরনীরমাটি গ্রামে গত ২ মে শনিবার তিনদিন ধরে স্ত্রীকে বসত ঘরে আটকে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনায় কানাইঘাট থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ দু’দিন পর রেকর্ড করেছে পুলিশ। তবে ঘটনার মূল হুতা মামলার একমাত্র আসামী পাষন্ড স্বামীকে অদ্যবদি পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মধ্যযুগীয় কায়দায় ৪ সন্তানের জননীর উপর স্বামীর বর্বরোচিত নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে,কানাইঘাট নিউজ ও সিলেটের বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকায় শুক্রবার সংবাদ প্রকাশিত হলে সিলেটের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিষয়টি নজরে আসে। শুক্রবার অভিযোগটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ১১(খ) ধারায় রেকর্ড করে পুলিশ। থানার মামলা নং- ০৪, তাং- ০৮/০৫/২০১৫ইং। জানা যায়, কানাইঘাট পৌরসভার বায়মপুর গ্রামের মৃত বশির আহমদের মেয়ে নাজিয়া বেগম (৩৫) এর সাথে ১৫ বছর পূর্বে সাতবাঁক ইউপির দাবাধরনির মাটি গ্রামের মৃত আনফর আলীর পুত্র খলিলুর রহমান (৪০) এর বিয়ে হয়। বর্তমানে এ দম্পত্তির ৪টি ছেলে মেয়ে রয়েছে। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে নাজিয়া বেগমকে তার স্বামী খলিলুর রহমান নানা ভাবে শারীরিক নির্যাতন করে আসছিল। পিতৃহীন এতিম মেয়েটি নীরবে স্বামীর নির্যাতন সহ্য করে ঘর সংসার করে আসছিল। সম্প্রতি একটি সিএনজি অটোরিক্সা গাড়ী কিনে দেওয়ার জন্য খলিলুর রহমান তার স্ত্রীকে শ্বশুড় বাড়ী থেকে জমিজমা বিক্রি করে পাঁচ লক্ষ টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ শুরু করে। এতে স্ত্রী নাজিয়া অপারগতা প্রকাশ করলে গত ২ মে শনিবার পাষন্ড স্বামী খলিলুর রহমান স্ত্রীকে তার বসত ঘরে আটক রেখে কাঠের রোল দিয়া পা হইতে মাথা পর্যন্ত পিঠাইয়া সমস্ত শরীরে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে বসত ঘরের একটি কক্ষে আটক করে রাখে। একপর্যায়ে তিনদিন ধরে স্ত্রী নাজিয়ার উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় পাশবিক নির্যাতন করে স্বামী। গত মঙ্গলবার রাতের অন্ধকারে স্বামীর বাড়ী থেকে পিত্রালয়ে কোনমতে নাজিয়া বেগম পালিয়ে আসে। নাজিয়া বেগম রক্তাক্ত জখম নিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঐদিন রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তার চাচা শফিকুল হক। নির্যাতনের বিষয়টি জানতে পেরে কানাইঘাট নিউজ প্রতিবেদক হাসপাতালে ছুটে গিয়ে নির্যাতনের বিষয়টি ঘটনাটি তুলে ধরে সংবাদ পরিবেশন করেন। বর্তমানে নাজিয়া বেগম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। পুরো শরীর জুড়ে আঘাতের চিহ্ন থাকায় তার শরীর ফুলে গেছে। এদিকে কানাইঘাট থানায় নির্যাতিতা নাজিয়া বেগমের চাচা মামলার বাদী শফিকুল হক শুক্রবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই মাহমুদের কাছে মামলার কপি আনতে গেলে তার কাছে ১০ হাজার টাকা মামলার খরচ বাবদ দাবী করেন বলে বাদী শফিকুল হক স্থানীয় কানাইঘাট নিউজকে জানান। এব্যাপারে এস.আই মাহমুদের কাছে যোগাযোগ করা হলে তিনি ১০ হাজার টাকা দাবীর বিষয়টি মিথ্যা বলে অস্বীকার করেন। থানার ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ হলে তিনি বলেন, বাদী লোকটি ভালো নয়। এস.আই মাহমুদের টাকা চাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আমি তার সাথে কথা বলছি বলে জানান।
খবর বিভাগঃ
প্রতিদিনের কানাইঘাট
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়