নিজস্ব প্রতিবেদক:
পিত্রালয় থেকে জমিজমা বিক্রি করে যৌতুক বাবদ গাড়ী কেনার জন্য ৫লক্ষ টাকা না এনে দেয়ার অপরাধে এক পাষন্ড স্বামী তার ৪ সন্তানের স্ত্রীর উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন করেছে। বর্তমানে এই নারী পুরো শরীর জুড়ে অসংখ্য নির্যাতনের ক্ষতবিক্ষত যন্ত্রনা নিয়ে কানাইঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শুধুমাত্র যৌতুকের জন্য একজন অসহায় নারীর উপর এ ধরনের পাশবিক নির্যাতনের ঘটনার হোতা স্বামী খলিলুর রহমানকে গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, কানাইঘাট পৌরসভার বায়মুর গ্রামের মৃত বশির আহমদের মেয়ে নাজিয়া বেগম (৩৫) সাথে ১৫ বছর পূর্বে সাতবাঁক ইউপির দাবাধরনির মাটি গ্রামের মৃত আনফর আলীর পুত্র খলিলুর রহমান (৪০) এর বিয়ে হয়। বর্তমানে এ দম্পত্তির ৪ ছেলে-মেয়ে রয়েছে। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে নাজিয়া বেগমকে তার স্বামী খলিলুর রহমান নানা ভাবে শারীরিক নির্যাতন করে আসছিল। পিতৃহীন এতিম মেয়েটি নীরবে স্বামীর নির্যাতন সহ্য করে ঘর সংসার করে আসছিল। সম্প্রতি একটি সিএনজি অটোরিক্সা গাড়ী কিনে দেওয়ার জন্য খলিলুর রহমান তার স্ত্রীকে শ্বশুড় বাড়ী থেকে জমিজমা বিক্রি করে পাঁচ লক্ষ টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ শুরু করে। এতে স্ত্রী নাজিয়া অপারগতা প্রকাশ করলে গত শনিবার পাষন্ড স্বামী খলিলুর রহমান স্ত্রীকে তার বসত ঘরে আটক রেখে কাঠের রোল দিয়া পা হইতে মাথা পর্যন্ত পিঠিয়ে সমস্ত শরীরে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে বসত ঘরের একটি কক্ষে আটক করে রাখে। একপর্যায়ে তিনদিন ধরে স্ত্রী নাজিয়ার উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় পাশবিক নির্যাতন করে স্বামী। গত মঙ্গলবার রাতের অন্ধকারে স্বামীর বাড়ী থেকে পিত্রালয়ে কোনমতে পালিয়ে আসে নাজিয়া বেগম। নাজিয়া বেগম রক্তাক্ত জখম নিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঐদিন রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তার চাচা শফিকুল হক। বর্তমানে নাজিয়া বেগম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় পাষন্ড স্বামীর বর্বরোচিত নির্যাতনের ক্ষতবিক্ষত আঘাতের চিহ্ন নিয়ে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন নাজিয়া বেগম। মা আমিনা খাতুন চাচা শফিকুল হক সহ আত্মীয় স্বজনরা কাঁদছেন তার পাশে বসে। নির্যাতনের এমন বর্বরতা দেখে হাসপাতালে আগত সবাই পাষন্ড স্বামীকে ধিক্ষার দিচ্ছেন। এ ঘটনায় নির্যাতিতা নাজিয়া বেগমের স্বামী খলিলুর রহমানকে আসামী করে ভিকটিমের চাচা শফিকুল হক বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় গত বুধবার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
খবর বিভাগঃ
অপরাধ বার্তা
প্রতিদিনের কানাইঘাট
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়