Saturday, March 21

বাংলাদেশে প্রতিদিন ১৫টি ডাউন শিশু জন্ম নেয়: ডব্লিউএইচও


কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:বিশ্ব ডাউন সিনড্রোম দিবস আজ। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য 'আমার সুযোগ, আমার পছন্দ, উপভোগে চাই সমান অধিকার'। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, আমাদের দেশে প্রতি বছর ৫০০০ বা প্রতিদিন প্রায় ১৫টি ডাউন শিশুর জন্ম হয়। আমেরিকায় প্রতি বছর প্রায় ৬০০০ ডাউন শিশুর জন্ম হয়। ৩০ বছর বয়সী প্রতি ৯০০ শিশুর মধ্যে একজন শিশু এভাবে জন্ম নিয়ে থাকে। অপর দিকে ২৫ বছর বয়সী মায়ের ১২০০ শিশুর মধ্যে একজন শিশু এবং ৩৫ বছরের বয়সী মায়ের ৩৫০ জন গর্ভবতী মায়ের মধ্যে একজন শিশু ডাউন সিনড্রোম শিশু হয়ে জন্ম নিয়ে থাকে। ব্রিটিশ চিকিৎসক জন ল্যাঙ্গডন ডাউন ১৮৬৬ সালে এ শিশুদের চিহ্নিত করেন বলে তার নামানুসারে ডাউন সিনড্রোম কথাটি প্রচলিত হয়। প্রতি ৫০০ থেকে ৭০০ শিশুর মধ্যে একটি শিশু ডাউন সিনড্রোম বা ডাউন শিশু হিসেবে জন্মগ্রহণ করতে পারে। আমাদের শরীর গঠনের সবচেয়ে ক্ষুদ্র অংশকে কোষ বা সেল বলা হয়। প্রতিটি মানব কোষের মধ্যে ২৩ জোড়া ক্রোমোজম নামের অঙ্গানু থাকে, যার অর্ধেক আসে মায়ের কাছ থেকে আর অর্ধেক আসে বাবার কাছ থেকে। কোটি কোটি ডিএনএ-এর সমন্বয়ে এক-একটি ক্রোমোজম তৈরি হয়। এ ডিএনএ-কে বলা হয় আমাদের বংশগতির ধারক ও বাহক। অর্থাৎ আমাদের শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্য যেমন- আচার-আচরণ, বুদ্ধিমত্তা, চেহারা, উচ্চতা, গায়ের রং সবকিছুই এ ডিএনএ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অন্যদিকে মানব শরীরে এ ডিএনএ বা ক্রোমোজমের অসামঞ্জস্য দেখা দিলে নানারকম শারীরিক ও মানসিক ত্রুটি দেখা দেয়, যাদের আমরা সাধারণভাবে জন্মগত ত্রুটি বা জেনেটিক ত্রুটি বলে থাকি। ডাউন সিনড্রোম বা ডাউন শিশু সেরকম একটি জেনেটিক ত্রুটিযুক্ত মানব শিশু, যার শরীরের প্রতিটি কোষে ২১ নম্বর ক্রোমোজমটির সঙ্গে আংশিক বা পূর্ণভাবে আর একটি ক্রোমোজম সন্নিবেশিত থাকে। ২১ নম্বর ক্রোমোজম তিনটি থাকে বলে ২১/৩ বা একুশে মার্চ বিশ্ব ডাউন সিনড্রোম দিবস পালিত হয়। আর এ অতিরিক্ত ক্রোমোজমটির কারণে ডাউন শিশুর বিশেষ কিছু শারীরিক ও মানসিক ত্রুটি লক্ষ্য করা যায়। চেহারা একই রকম হয় বলে সহজে ডাউন শিশুদের চেনা যায়। ডাউন শিশুদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য: ডাউন শিশুদের কিছু নির্দিষ্ট শারীরিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। যেমন- মাংসপেশির শিথিলতা কম উচ্চতা চোখের কোনা উপরের দিকে উঠানো চ্যাপ্টা নাক ছোট কান হাতের তালুতে একটি মাত্র রেখা জিহ্বা বের হয়ে থাকা ইত্যাদি প্রতিরোধের উপায় : উন্নত বিশ্বে প্রত্যেকটি গর্ভবতী মাকে ডাউন শিশু এবং অন্যান্য সম্ভাব্য জন্মগত ত্রুটি ও তা নির্ণয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া চিকিৎসকের জন্য বাধ্যতামূলক। যেহেতু মা-এর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডাউন শিশু হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে, তাই চিকিৎসা বিজ্ঞানে অধিক বয়সে, বিশেষ করে পঁয়ত্রিশোর্ধ্ব বয়সে মা হওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়। মেধাবী শিশুর জন্ম নিশ্চিত করতে হলে ডাউন শিশুর মতো প্রতিরোধযোগ্য প্রতিবন্ধী বা জন্মগত ত্রুটির বিষয়টি পাঠ্য বইতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। গর্ভবতীর নারীর সেবায় অনাগত শিশুর জন্মগত ত্রুটির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়