Tuesday, March 3

মহারাষ্ট্রে গরু জবাই নিষিদ্ধ করে কঠোর আইন


আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কানাইঘাট নিউজ: ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে গরু জবাই, গরুর গোশত বিক্রি ও খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জি আজ (মঙ্গলবার) এ সংক্রান্ত বিলে সই করেছেন। এ আইন অমান্যকারী ব্যক্তিকে উচ্চমাত্রায় জরিমানা করার পাশাপাশি সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডাদেশ দেয়ার বিধান করা হয়েছে। ১২০ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ভারতের শতকরা প্রায় ৮০% অধিবাসী হিন্দু এবং গাভীকে তারা ‘দেবী’ হিসেবে সম্মান করে। এ কারণে ভারতের অনেক রাজ্যে আইন করে গরু জবাই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভারতের বাকী রাজ্যগুলোতে গরু জবাইয়ের ওপর আইনি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও মুসলমানদের গরু জবাইয়ের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। তবে ভারতের ফাস্টফুডের দোকানগুলোতে বিফ বা ‘লাল মাংস’ হিসেবে যা পাওয়া যায় তা মূলত মহীষের গোশত। ১৯৯৫ সালে মহারাষ্ট্র রাজ্যের বিজেপি-শিবসেনা সরকার প্রথম গরু জবাই নিষিদ্ধ করে আইন পাস করেছিল। মহারাষ্ট্র অ্যানিম্যাল প্রিজারভেশন (সংশোধন) বিলটি ১৯৯৬ সালের জানুয়ারি মাসে প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু গত ১৯ বছরে ভারতের কোনো প্রেসিডেন্ট বিলটিতে সই না করায় তা আইনে পরিণত করা সম্ভব হয়নি। গত বছর মহারাষ্ট্রে ফের ক্ষমতায় আসে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি। এরপর দলের নেতারা পুনরায় বিলটিকে আইনে পরিণত করার চেষ্টা শুরু করে। গত সপ্তাহে মহারাষ্ট্র বিধানসভার একদল বিজেপি এমপি প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিলটিতে সই করার অনুরোধ জানান। আজ বিলটিতে সই করার পর মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফ্যাডনাভিস এক টুইটার বার্তায় প্রেসিডেন্ট মুখার্জিকে ধন্যবাদ জানান। সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রে গরু জবাই নিষিদ্ধ করে যে আইন হলো তা ভারতের ইতিহাসে এ সংক্রান্ত সবচেয়ে কঠোর আইন। কারণ, এতে গাভীর পাশাপাশি ষাঁড় ও বলদ জবাইও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি অন্য কোথাও জবাই হয়েছে এমন গরুর গোশত সংরক্ষণও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মহারাষ্ট্রের কসাইরা এ আইনের বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, এর ফলে হাজার হাজার মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। সমালোচকরা বলছেন, এ আইনের ফলে এখন কৃষকদেরকে গরু মারা যাওয়া পর্যন্ত এগুলোকে খাবার খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। বয়স্ক যেসব গরুকে আর কৃষিকাজে ব্যবহার করা সম্ভব নয় রোগভোগে বা স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেগুলোর পেছনেও প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হবে। প্রসঙ্গত, অরুনাচল, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম ও ত্রিপুরা ছাড়া ভারতের বাকী সব কয়টি প্রদেশেই গুরু জবাইয়ে বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপিত আছে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়