ইসলাম ডেস্ক:
কারো প্রতি অন্যায় আচরণ, জুলুম-নির্যাতন ইসলামে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। মানুষের ওপর জুলুম এমন এক ভয়াবহ পাপ যার শাস্তি কোনো না কোনো উপায়ে দুনিয়ার জীবনে পাওয়া শুরু হয়ে যায়। শুধু মানুষ নয়, পশুপাখি ও প্রাণীর ওপর জুলুমকেও হারাম করেছে ইসলাম। জুলুমের ভয়ঙ্কর পরিণতি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত করবে। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘জালেমদের কর্মকা- সম্পর্কে আল্লাহকে কখনও উদাসীন মনে করো না। তবে তিনি তাদের শুধু একটি নির্দিষ্ট দিন পর্যন্ত অবকাশ দেন, যেদিন চক্ষুগুলো বিস্ফোরিত হবে, তারা মাথা ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠিপড়ি করে দৌড়াতে থাকবে, তাদের চোখ তাদের নিজেদের দিকে ফিরবে না এবং তাদের হৃদয়গুলো দিশেহারা হয়ে যাবে। অন্য আয়াতে আছে, ‘জুলুমবাজরা তাদের জুলুমের পরিণতি শিগগির জানতে পারবে, তাদের গন্তব্যস্থল কেমন?’ রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা জালেমকে দীর্ঘ সময় দিয়ে থাকেন। অবশেষে যখন পাকড়াও করেন তখন তাকে আর রেহাই দেন না।’
জুলুম করলে কী করতে হবে এর নির্দেশনাও হাদিসে রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি তার কোনো ভাইয়ের সম্মানহানি কিংবা কোনো জিনিসের ক্ষতি করে থাকে, তবে আজই (দুনিয়াতেই) তার কাছ থেকে তা বৈধ করে নেয়া উচিত এবং সেই ভয়াবহ দিন আসার আগেই এটা করা উচিত, যেদিন টাকা-কড়ি দিয়ে কোনো প্রতিকার করা যাবে না, বরং তার কাছে কোনো নেক আমল থাকলে তার জুলুমের পরিমাণ হিসেবে মজলুমকে ওই নেক আমল দিয়ে দেয়া হবে এবং তার কোনো অসৎ কাজ না থাকলেও ওই মজলুমের অসৎ কাজ তার ওপর বর্তানো হবে।’
জুলুম থেকে বাঁচার কার্যকর উপায় হচ্ছে লোভ, ক্ষমতার লোভ, হিংসা, ধর্মীয় বিদ্বেষ, ক্রোধ থেকে আত্মসংবরণ করা এবং জনসেবা, ধর্মীয় সেবা ও পরোপকারমূলক কাজে আত্মনিয়োগ করা। বিশেষ করে ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করা, কোরআন ও হাদিস পড়া এবং কোরআন ও হাদিসে জুলুম সম্পর্কে যেসব বর্ণনা আছে তা জানা, মানা এবং অন্যকে জানানোর চেষ্টা করা। আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী হলে, জান্নাত ও জাহান্নামে বিশ্বাসী হলে, দুনিয়ার শান্তি ও পরকালীন মুক্তি পেতে চাইলে সব ধরনের জুলুম এবং জুলুমের সহযোগিতা করা থেকে আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। কারণ জুলুমমুক্ত সমাজই ইসলামের প্রত্যাশা।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়