আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কানাইঘাট নিউজ:
দীর্ঘ সাতবছর ধরে ঝুলে থাকা মৃত্যুদণ্ড কার্যকর সংক্রান্ত জটিলতার অবসান করলো পাকিস্তান। পাকিস্তান সরকার ফাঁসি কার্যকরে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ফলে এখন থেকে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে আর কোনো বাধা রইল না।
দেশটির আইন বিভাগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত যেসব আসামির আপিল খারিজ করে দেয়া হয়েছে, তাদের সকলের সাজা কার্যকর করা হবে।
গত বছরের ডিসেম্বরে পেশোয়ারের এক স্কুলে তালেবান হামলার পর দেশটিতে আংশিকভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পেশোয়ারের সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত এ পাবলিক স্কুলে তালেবান হামলায় ১৫০ জন নিহত হয়। এদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। ওই ঘটনায় সাধারণ জনগণের মধ্যে ব্যাপক ঘৃণার সৃষ্টি হয়। সেই থেকেই আংশিকভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর শুরু করে দেশটির সরকার। সেই থেকে প্রায় ২০জন সন্ত্রাসী হামলায় অভিযুক্ত আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
মানবাধিকার এক সংগঠনের মতে, দেশটিতে আট হাজারেরও বেশি মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামী রয়েছে। প্রায় এক হাজার অভিযুক্তের আপিল খারিজ করে দেয়া হয়েছে এবং প্রাণভিক্ষার আবেদনও বাতিল করা হয়েছে।
ইসলামাবাদ থেকে বিবিসির এক প্রতিবেদক বলেন, ‘স্থগিত থাকা মৃত্যুদণ্ডাদেশ এই সময়ে কোনো হঠাৎ প্রত্যাহার করা হলো এটি স্পষ্ট নয়। এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের মধ্যে দিয়ে পাকিস্তানে মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামীদের নিয়ে দোদুল্যমান অবস্থার সমাপ্তি ঘটলো।
মানবাধিকার বিষয়ক আইনি সংস্থা ‘জাস্টিস প্রোজেক্ট পাকিস্তান’র নির্বাহী পরিচালক সারাহ বেলাল মৃত্যুদ- কার্যকরের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্তকে ‘দায়িত্বহীন’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানে বিভিন্ন সময়ে আসামীদের সঙ্গে অবর্ণনীয় অমানবিক আচরণ করতে দেখা যায়। এর মধ্যে পুলিশী নির্যাতন, শিক্ষামূলক কর্মসূচীর অভাব এবং বিনা অপরাধে কারাভোগের ঘটনা তো অহরহ ঘটছে। এসব কিছু বিবেচনা না করে সরকার মৃত্যুদণ্ডের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিলো। যা খুবই দায়িত্বহীন সিদ্ধান্ত।’
৩ মার্চের তারিখ দেয়া এই আদেশটি পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। এর আগে পেশোয়ারে হামলার পর জাতিসংঘ পাকিস্তানকে মৃত্যুদ- কার্যকরের স্থগিতাদেশ তুলে না নিতে পরামর্শ দিয়েছিল।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়