Thursday, March 19

ইসলামে মানবাধিকার


ইসলাম ডেস্ক, কানাইঘাট নিউজ: ইসলাম মহান আল্লাহ তায়ালা মনোনিত একমাত্র ধর্ম। ইসলাম শান্তির ধর্ম। মানুষের সম্পূর্ণ জীবনবিধান ইসলাম ধর্মের মধ্যে রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইসলামকে এ পৃথিবীতে এমন ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন যেখানে ইহকাল পরকালের মুক্তির পথ রয়েছে। ইসলাম ধর্ম শুধু আল্লাহর এবাদত বন্দেগীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং জাগতিক সমস্ত কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ইসলামে দিক নির্দেশনা রয়েছে। মানুষের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করতে ইসলাম সবচাইতে বেশি গুরুত্ব প্রদান করেছে। মানবাধিকার মানুষের মূল্য এবং মর্যাদার সঙ্গে সম্পর্কিত এবং মানুষ রূপে জন্মলাভ করার জন্য তার জন্মগত অধিকার। এ বিষয়টি ইসলাম স্বীকৃতি দিয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দৃষ্টিতে মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। তিনি জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য সমভাবে এ অধিকারগুলো প্রদান করেছেন। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সারা জীবনে ইসলামী আদর্শকে প্রতিভাত ও প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। মানবাধিকারের বিষয়টি তাঁর কথায়, কাজে ও অনুমোদনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আল-কুরআন হলো ইসলামী মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রধান নির্দেশক যা কার্য্যকর রূপ লাভ করেছে হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনাদর্শে। ইসলাম নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারগুলোকেও স্বীকৃতি দেয়। সুতরাং এক বাক্যে বলা যায় ইসলামী মানবাধিকার হলো সমাজতান্ত্রিক ও ধনতান্ত্রিক ধারণার সমন্বয় এবং সমন্বিত উৎস। কারণ, অধিকারের আবির্ভাব হয়েছে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শতকে। কিন্তু ধনতান্ত্রিক অধিকারের আবির্ভাব বুর্জোয়া চেতনার যুগে, ত্রয়োদশ থেকে সপ্তদশ ও অষ্ঠাদশ শতকে। সমাজতন্ত্রের আবির্ভাব হয় বিংশ শতাব্দীতে। ইসলামী মানবাধিকারের লক্ষ্য ধর্মীয়, নৈতিক, আধ্যাত্নিক তথা অবস্থাগত সম্পদ স্বাধীনতা, ইসলামে বিভিন্ন মানবাধিকারকে গুরুত্ব প্রদান করেছে। যেমন আইনের দৃষ্টিতে সবাইকে সমান গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সবার অধিকার সমভাবে পাওয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছে। জীবনধারন, সম্পদ ও মর্যাদার অধিকারের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে "হে ঈমানদারগণ, তোমরা কারো প্রতি অন্যায় আচরণ করোনা। কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যা করোনা। তোমাদের জীবন ও সম্পত্তি তোমাদের পরস্পরের নিকট পবিত্র"। ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকার সর্ম্পকে বলা হয়েছে "আইনের সুস্পষ্ট বিধান ছাড়া কাউকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার বা আটক করা অথবা বল প্রয়োগ করা যাবে না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না এবং অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থাকবে"। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে "কেউই অপরের বোঝা বহন করবে না"। সকলের ধর্মীয় স্বাধীনতার বিষয়ে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে "তোমাদের কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্য। আমার কর্ম এবং কর্মফল আমার জন্য"। সুরা বাকারার ২৫৬ নং আয়াতে বলা হয়েছে "ধর্মের ব্যাপারে কোন জোর-জবরদস্তি নেই"। হযরত মুহাম্মদ (স.) বিদায় হজ্বে যে ভাষণ দান করেন তাতে তাঁর প্রতিটি কথায় মানবাধিকারের প্রসঙ্গটি উঠে এসেছে। তিনি মানবাধিকারকে সবচাইতে বেশি গুরুত্ব প্রদান করেছেন। বিদায় হজ্বের ভাষণে নবীজী (সা.) আমাদের অনেক দিক নির্দেশনা প্রদান করে গেছেন। এসব দিক নির্দেশনা আমরা এখন কেউই পালন করছি না। তিনি মানবাধিকারের বিষয়ের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ, স্বামী-স্ত্রীর অধিকার, জীবন এবং সম্পদের অধিকার, ক্রীতদাশের অধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন। ইসলামে মানবাধিকারকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হলেও মানবাধিকার এখন ভুলণ্ঠিত হচ্ছে। সারা পৃথিবীতে মুসলমানরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে জাগ্রত হতে হবে। প্রতিষ্ঠা করতে হবে সুন্দর পৃথিবীর।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়