ঢাকা: অবিলম্বে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদকে তার পরিবারের কাছে ফেরত দেয়ার দাবিতে বুধবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী অবরোধের পাশাপাশি ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।
একই দাবিতে বৃহস্পতিবার সারা দেশে জোটের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল এবং শুক্রবার সারা দেশে সব মসজিদে দোয়া, অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি জোট।
মঙ্গলবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ২০দলের মুখপাত্র বরকত উল্লাহ বুলু এ ঘোষণা দেন।
বুলু বলেন, “দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসন করতে এবং জনগণের ভোটের অধিকারসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার লক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটের প্রধান বেগম খালেদা জিয়া আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। সুশীল সমাজ ও পেশাজীবীসহ দেশের প্রায় সব গণতান্ত্রিক মহল এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও একটি সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে আলোচনার পথে সংকট নিরসনের অব্যাহত আহ্বান জানিয়ে আসছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় ভোটারবিহীন ও নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে ক্ষমতায় দখলকারী সরকার কোনো আহ্বানেই সাড়া দেয়নি।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “সংলাপের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে বরং সরকার হত্যা, গুম, অপহরণ, জুলুম-নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সৃষ্টি করা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি অব্যাহত রেখে তথাকথিত উন্নয়নের ধারার নামে তাদের অবৈধ শাসন এবং লুটপাট ও দুর্নীতির ধারাকেই প্রলম্বিত করতে চাইছে। তাদের সীমাহীন অপকর্ম ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের সব পথ তারা রুদ্ধ করেছে। জনগণের বিপুল সমর্থিত বিরোধী দলের স্বাভাবিক রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক তৎপরতা পরিচালনার সুযোগ নেই। এমনকি এসবের প্রকৃত চিত্র সংবাদ-মাধ্যমে তুলে ধরার সুযোগও সংকুচিত করে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি বিরোধী দলের বিরুদ্ধে তারা একটানা মিথ্যাচার করে চলেছে। এমতাবস্থায় দেশব্যাপী অবরোধের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা রাখা হয়নি।”
সালাহ উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তারের সাতদিন পার হলেও এখন পর্যন্ত তাকে মুক্তি দেয়া কিংবা আদালতে হাজির করা হয়নি এমন অভিযোগ করে বুলু বলেন, “সম্প্রতি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনসহ দেশব্যাপী আরো অনেক নেতা-কর্মীর ক্ষেত্রেও একই ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।”
সালাহউদ্দিনকে গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করে সরকারের পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে সাজানো গল্প ফাঁদা হয়েছে এবং শীর্ষ পর্যায় থেকে উৎকট ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। বলেন, “এতে তার পরিবারের এবং আমাদের উৎকণ্ঠা তীব্র হচ্ছে।”
বরকত উল্লাহ বুলু আরো বলেন, “সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে উপস্থাপন করার কথা আমরা বলেছি। কিন্তু তার মতো একজন রাজনৈতিক নেতাকে উধাও করে ফেলার মতো ধৃষ্টতাকে কোনো ক্রমেই মেনে নেয়া যায় না। এটা সবার জন্য অনিরাপদ এক অসভ্য পরিবেশেই কেবল সম্ভব।”
তিনি জোটের নেতাকর্মী ছাড়াও সব গণতান্ত্রিক ব্যক্তি ও শক্তিসহ দেশবাসীর প্রতি ঘোষিত কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালনের আহ্বান জানান।
খবর বিভাগঃ
রাজনীতি
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়