কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
প্যারিসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পরপর দুই রাত অবৈধ ড্রোনের উড়াউড়ির ঘটনায় চিন্তিত হয়ে পড়েছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ। পরিবেশবাদী আন্দোলন-কর্মী, সন্ত্রাসী, দুষ্টু ছেলের দল সন্দেহের তালিকা থেকে কেউ বাদ যাচ্ছে না। অবশ্য অবৈধ এই ড্রোন অনুপ্রবেশের দায়দায়িত্ব এখন পর্যন্ত কেউ স্বীকার করেনি। প্যারিসসহ বিশ্বের তাবৎ নগর রক্ষীদের সামনে এখন একটাই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, কিভাবে ড্রোনকে প্রতিহত করা সম্ভব?
সম্ভাব্য সেরা ৫টি উপায় খতিয়ে দেখেছে বিবিসি। বিবিসি অবলম্বনে উপায়গুলো নিম্নে দেয়া হলো-
গুলি করে ভূপাতিত করা: ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর থেকে যেকোনো হুমকি সৃষ্টিকারী কিংবা সন্দেহের উদ্রেককারী আকাশযানকে গুলি করে ভূপাতিত করার নীতি গ্রহণ করে যুক্তরাজ্য। কিন্তু সমস্যা হল একটি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ক্ষুদ্রকায় একটি বাণিজ্যিক সস্তা ড্রোনকে ভূপাতিত করাটা অনেকটা মশা মারতে কামান দাগার মতো ব্যাপার।
ফ্যান্টম-২: ফ্যান্টম-২ সিরিজের ড্রোনগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করতে সক্ষম। ফলে স্পর্শকাতর এলাকায় প্রবেশ করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অচল হয়ে যাবে এই সিরিজের ড্রোনগুলো। কিন্তু বিমান বিশেষজ্ঞ ক্রিস ইয়েটস বলেন, ছোটখাটো ড্রোনও স্পর্শকাতর এলাকায় গিয়ে মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। এ ধরণের ড্রোনকে দিয়ে ছোটখাটো বোমাও বহন করানো সম্ভব।
লেজার ব্যবহার: চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে ড্রোন বিধ্বংসী লেজার রশ্মি প্রযুক্তির সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, দেশটির হাতে এখন এমন লেজার প্রযুক্তি আছে, যা একটি ড্রোনকে চিহ্নিত করার ৫ সেকেন্ডর মধ্যেই ধ্বংস করতে পারে। ২০১২ সালে মার্কিন নেভি একটি পর্যবেক্ষণ ড্রোনকে ভূপাতিত করার মাধ্যমে লেজার অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায়।
নো ফ্লাই জোন: গত বছর এক মাতাল সরকারী কর্মকর্তা তার খেলনা ড্রোনটি উড়িয়ে হোয়াইট হাউজের লনের উপর নিয়ে গেলে প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা নিয়ে হুলুস্থুল সৃষ্টি হয়। এটি ছিল একটি ডিজেআই ফ্যান্টম ড্রোন। গত জানুয়ারি মাসে এই ড্রোনের চীনা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এসজেড ডিজেআই টেকনোলজি তাদের বানানো ড্রোনগুলোতে নতুন এক প্রযুক্তি জুড়ে দিয়েছে। এখন এসব ড্রোন হোয়াইট হাউজের সাড়ে ১৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে ঢুকে পড়লেই এতে থাকা একটি জিপিএস সিগন্যাল পাঠাতে শুরু করবে এবং স্বয়ংক্রিয়ভাবে ড্রোনের মোটর বিকল হয়ে যাবে। কোনও বিমানবন্দরের কাছে ড্রোনের চলে যাওয়াও ঠেকাবে একই প্রযুক্তি।
জালের ব্যবহার: দুপাশে দুটো বড়সড় ড্রোন একটি জালকে টেনে নিয়ে যাবে, আর সেই জালেই ধরা পড়বে অবৈধ ড্রোন। ড্রোন ধরার একটা সাধারণ কৌশল হল জাল ব্যবহার করা। ফ্রান্সের পূর্বাঞ্চলে ১৩টি স্পর্শকাতর পারমাণবিক স্থাপনার আশপাশে অবৈধ ড্রোনের উড়াউড়ির পর এই পদ্ধতির সফল প্রয়োগ করা হয়েছিল। এজন্য কোনও বুলেট, ক্ষেপণাস্ত্র অথবা লেজার ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি। শহুরে এলাকার জন্য এটা খুব আকর্ষণীয় একটা উপায় হতে পারে।
জ্যাম করে: ড্রোন চিহ্নিত করার একটা বড় বাধা হল সাধারণ রাডার ক্ষুদে ড্রোনগুলোকে অনেক সময় পাখি ভেবে ভুল করে। তবে ড্রোন যেহেতু রেডিও সংকেত ব্যবহার করে পরিচালনা করা হয়, তাই এই সংকেত অচল করাও সহজ।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়