ইসলাম ডেস্ক:
পরোপকার ও আত্মত্যাগের শিক্ষায় ইসলাম ভরপুর। পরের জন্য জীবন-মরণ বিসর্জন এবং দ্বীনের জন্য আত্মত্যাগকে ইসলাম জোরালো সমর্থন দিয়েছে। ইসলামের জন্য সবচেয়ে বেশি আত্মত্যাগ সাহাবায়ে কেরামের। তারা নিজের জীবন-যৌবন সব মিলিয়ে ইসলামকে সুউচ্চ করেছেন। ইসলামের খাতিরে অন্যের জন্য তারা সর্বস্ব বিলিয়ে দিয়েছেন। তারা নিজের খাবার বিলিয়ে দিয়েছেন অনাহারির মুখে। আনসারি সাহাবিরা দুই স্ত্রী থাকলে একজন দান করে দিয়েছেন মুহাজির ভাইয়ের জন্য। দ্বীনের জন্য তাদের যে কোরবানি এর কোনো নজির পৃথিবীর ইতিহাসে আর নেই। পবিত্র কোরআনে আনসারদের প্রশংসা করে বলা হয়েছে, ‘নিজেদের প্রচ- প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও তারা অপরকে প্রাধান্য দেয়।’
সাহাবি হজরত আবুযব (রা.) বর্ণনা করেন, একবার আল্লাহর রাসূল (সা.)-কে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, ইয়া রাসুলাল্লাহ জিহাদ করার মতো কিংবা গোলাম আজাদ করার মতো অবস্থা আমার নেই। আমি অক্ষম ও নিঃস্ব। সুতরাং অধিক সাওয়াব লাভের কোন পদ্ধতিটি আমার জন্য সঙ্গত হবে? উত্তর দিলেন, এমতাবস্থায় তুমি মানুষের উপকার কর, তাহলে অধিক সাওয়াবের অধিকারী হতে পারবে। এ হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, পরোপকার একটি উত্তম আমল। এর দ্বারা প্রায় জিহাদসম সাওয়াব পাওয়া যায়। উপকার করতে না পারলে অন্তত অপকার থেকে বেঁচে থাকতে বলেছে ইসলাম। রাসুল (সা.) পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, ‘প্রকৃত মুসলমান সে, যার হাত ও যবানের অনিষ্টতা থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে।’
ইমাম গাযালি (রহ.) বলতেন, আল্লাহ তাআলা এ দুনিয়াতে তিন ধরনের জন্তু সৃষ্টি করেছেন। এক ধরনের জন্তু আছে, যারা মানুষের শুধু উপকার করে। যেমন গরু, মহিষ, ছাগল ইত্যাদি। এসব জন্তু মানুষের অনেক উপকারে আসে। আরেক ধরনের জন্তু আছে, যারা মানুষকে শুধু কষ্ট দেয়। যেমন সাপ-বিচ্ছু ইত্যাদি। এছাড়া তৃতীয় ধরনের জন্তু এ পৃথিবীতে আছে, যারা মানুষের উপকার করে না এবং ক্ষতিও করে না। এরপর ইমাম গাজালি (রহ.) লোকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, হে মানুষ! যদি তুমি প্রথম প্রকারের জন্তু হতে না পার, তাহলে কমপক্ষে তৃতীয় প্রকারের জন্তু হও। অর্থাৎ মানুষের উপকারও করো না এবং ক্ষতিও করো না। দুনিয়াতে কেউ কারো উপকারে এলে আল্লাহ পাক পরকালে তার উপকারে আসবেন বলে হাদিসে উল্লেখ আছে। এজন্য ইসলামের নির্দেশনায় উজ্জীবিত হয়ে সবার উচিত পরোপকারে এগিয়ে আসা।
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়