কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
অদম্য যৌন আকাঙ্ক্ষা কোনও দিনই কাটিয়ে উঠতে পারবেন না বলে আদালতের কাছে স্বেচ্ছা মৃত্যুর অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছেন এক বেলজিয়ান নাগরিক। জেল থেকে ছাড়া পেলে ফের অপরাধের দিকেই নিজেকে ঝুঁকতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন ৫২ বছর বয়সী ফ্রাঙ্ক ভ্যান ডেন ব্লিকেন নামের ওই ব্যাক্তি। তাই জেলের চার দেয়ালের মধ্যে থাকার চেয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর পথ বেছে নিয়েছেন। বেলজিয়ামের একটি আদালত তার সেই আবেদন মঞ্জুরও করেছেন।
বেলজিয়ামের ফেডেরাল ইউথেনিশিয়া কমিশন গত সেপ্টেম্বরে ফ্রাঙ্কের স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনটি গ্রহণ করে। সম্প্রতি তাকে স্পেশ্যালিস্ট ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন কমিশনের কর্মকর্তারা। সেখানেই প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশনের সাহায্যে স্বেচ্ছামৃত্যু বরণে সহায়তা করা হবে ফ্রাঙ্ককে।
ইউরোপে মৃত্যুদণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা চালু রয়েছে। তবে ২০০২ সালে বেলজিয়ামে স্বেচ্ছামৃত্যু আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে।
১৯৮৯ সালের ১ জানুয়ারি এক তরুণীকে ধর্ষণের পর ওই তরুণীরই একটি মোজা দিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন ফ্রাঙ্ক। সেসময় ফ্রাঙ্ককে মানসিকভাবে অপ্রকৃতিস্থ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এরপর মানসিকভাবে অসুস্থ অপরাধীদের বন্দী করে রাখা হয় জেলের এমন একটি ওয়ার্ডে ৭ বছর আটকে রাখার পর ছেড়ে দেওয়া হয় ফ্রাঙ্ককে। ছাড়া পাওয়ার পর এগারো, সতেরো এবং উনত্রিশ বছর বয়সী তিন নারীকে ফের আক্রমণ করে ফ্রাঙ্ক। পরে অনির্দিষ্ট কালের জন্য তাকে আটক রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। সেই থেকে এতগুলো বছরে একবারই জেলের বাইরের দুনিয়াটা দেখেছে ফ্রাঙ্ক। মায়ের মৃত্যুর পর তার দাফন-কাফনে যোগ দিতে বাইরে এসেছিল সে। ২০১১ সালে স্বেচ্ছামৃত্যুর জন্য প্রথম আবেদন করে ফ্রাঙ্ক।
প্রসঙ্গত, মাত্র ১৫ বছর বয়সে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছিলেন ফ্রাঙ্ক। গত বছর টেলিভিশনের একটি অনুষ্ঠানে ফ্রাঙ্ক বলেন, ‘কেউ যৌন অপরাধ করলে, সেটা কাটিয়ে ওঠার জন্য অপরাধীকে সাহায্য করা উচিত। শুধুমাত্র জেলে বন্দি করে রাখলেই এর কোনও সুরাহা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমি একজন মানুষ। আমি যা করেছি, সেটা মাথায় রাখলেও আমি একজন মানুষই।’
তবে ১৯৮৯ সালে যে তরুণীকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছিলো ফ্রাঙ্ক, তাঁর পরিবার ফ্রাঙ্কের এই স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন মঞ্জুরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। এভাবে মরে যাওয়ার চেয়ে জেলবন্দি হয়ে কেন যন্ত্রণা পাবে না অপরাধী, সে প্রশ্ন তুলেছেন ওই নিহত তরুণীর দুই বোন।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়