Tuesday, February 17

কাঁদলেন, কাঁদালেন মাইশার মা


ঢাকা: কথা বলতে গিয়ে বারবার ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠছিলেন তিনি। এর মধ্যেই পেট্রল বোমা হামলায় নিজের মেয়ে-স্বামীর মৃত্যুর কথা তুলে ধরে আবেগে আপ্লুত করলেন অন্যদের। গত ৩ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বাসে দুর্বৃত্তদের পেট্রল বোমা হামলা চালিয়ে যে আটজনকে খুন করা হয় তাদের মধ্যে যশোর পুলিশ লাইনস স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী মাইশা নাইমা তাসনিম এবং তার বাবা নুরুজ্জামান পপলু। রাজধানীতে পেট্রল বোমা হামলায় স্বজন হারানো আর আহতদের নিয়ে জাতীয় জাদুঘরে এক আয়োজনে মাইশার মা মাহফুজা বেগম মিতা যখন বর্ণনা দিচ্ছিলেন সেদিনের ঘটনার তখন চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি জাদুঘর মিলনায়তনের বহু মানুষ। এই আয়োজনে ছিলেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরাও। মাইশার মার বক্তব্য চলাকালে বাংলা না বুঝল্ওে নীরবে মাথা নীচু করে শোনেন তারা। এরপর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ইংরেজিতে মাইশার মায়ের বক্তব্যের বর্ণনা দেন। মাহফুজা বেগম মিতা বলেন, ‘আমার আদরের মেয়েটা আমার কোলে মারা গেলো, কিছু করতে পারলাম না, বেচে থেকে আমি এখন আর কী করবো?’ মাইশার মা বলেন, ‘আমার মেয়েটা ডাক্তার হতে চেয়েছিলো, কিন্তু তাকে কেন পুড়ে মরতে হলো, কে জবাব দেবে? আমার স্বামী খুব ধার্মিক ছিলেন তার কেন এমন মৃত্যু হলো?’ মাহফুজা বেগম মিতা বলেন, ‘যারা পেট্রল বোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছেন, তাদেরকে বলি, আপনারা এ কাজ করবেন না। রাজনীতি করলে মানুষকে ভালোবাসুন, তাদের কাছে যান। দোহাই লাগে, এ কাজ আর করবেন না। আর কারও মায়ের কোল খালি করবেন না, আর কারও বাবার চোখের পানি বের করবেন না’। কাঁদতে কাঁদতে মাইশার মা বলেন, ‘আমার জন্য দোয়া করবেন। যেন আমার ছেলেটি মানুষ হতে পারে’। পেট্রল বোমা হামলায় মানুষকে পুড়িয়ে মারার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান মাইশার মা। বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি এদের বিচার করুন’-বক্তব্য শেষ করেও কাঁদতে থাকেন সন্তানহারা একজন মাহফুজা বেগম মিতা।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়