কানাইঘাট নিউজ ডেস্ক:
সম্প্রতি ভারতের বন্দরনগরী মুম্বাইয়ের বাবা-মায়েদের সন্তান লালন-পালনের অভ্যাস সম্পর্কিত এক জরিপে দেখা গেছে বিশ্বের অন্যান্য প্রায় সব নগরের মতোই এই নগরটিরও ৬২% বাবা-মা শাসনের নামে সন্তানদের মারধর করেন। কিন্তু এ ধরণের মারধর শাস্তি না নিপীড়ন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
২০১২ সালেও মুম্বাইয়ে একই ধরণের একটি জরিপ চালানো হয়েছিল। ওই জরিপে ৬৯ শতাংশ বাবা-মা শাসনের নামে তাদের সন্তানদের পেটানোর কথা স্বীকার করেছেন।
১ হাজার ৭০০ বাবা-মায়ের অংশগ্রহণে পরিচালিত ওই জরিপে আরো দেখা গেছে যে, সন্তানদের মারধরের ক্ষেত্রে বাবাদের চেয়ে মায়েরাই অনেক বেশি সংখ্যায় এগিয়ে রয়েছেন। জরিপে অংশ গ্রহণকারী বাবা-মায়ের মধ্যে মাত্র ২৯ শতাংশ বাবা সন্তানকে পেটানোর কথা স্বীকার করেছেন। অন্যদিকে, এর প্রায় দ্বিগুন- ৬১ শাতাংশ মা সন্তানকে মারধরের কথা স্বীকার করেছেন।
জরিপে আরো দেখা গেছে যে, যেসব বাবা-মা সন্তানদের পেটান তাদের ৮০ শতাংশই নিজেরাও ছোটবেলায় বাবা-মার পিটুনি খেয়েই বড় হয়েছেন।
সন্তানদের মারধরের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ বাবা-মা কারণ দর্শিয়েছেন যে, আদব-কায়দা শেখানোর জন্যই তারা সন্তানদের মারধর করতে বাধ্য হন। মারধরের আরেকটি কারণ হিসেবে তারা সন্তানদের সহজে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন। এছাড়া হতাশা এবং ক্লান্তি থেকেও তারা সন্তানদের মারধরে প্ররোচিত হয়ে থাকেন বলে জানিয়েছেন জরিপে অংশগ্রহণকারী বাব-মায়েরা। আর সন্তানদের নিয়ন্ত্রণে মারধর একটি কার্যকর পন্থা বলেও দাবি করেন তারা।
জরিপে আরো দেখা গেছে যে, ২ থেকে ৮ বছর বয়সী সন্তানদেরকেই বাবা-মায়েরা বেশি মারধর করে থাকেন। আর ৮ থেকে ১০ বছর বয়সী সন্তানদের সাধারণত পকেট মানি দেয়া বন্ধ করে দেয়া বা বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।
বর্নস্মার্ট নামক টিমের একজন বিশেষজ্ঞ এবং আর্লি চাইল্ডহুড অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট সোয়াতি পোপাট ভাট বলেন, সাধারণত যেসব বাবা-মা নিজেরা ছোটবেলায় তাদের বাবা-মার হাতে মার খেয়েছেন তাদের মধ্যেই পরে বড় হয়ে নিজেদের সন্তানদের মারধরের প্রবণতা বেশি দেখা গেছে।
আর এ ব্যাপারে তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, সন্তানদের আদব-কায়দা শেখানোর জন্য যতই মারধরের মতো আদিম পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় ততই মানুষের আদিম মস্তিষ্ক আরো বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে চিন্তাশীল বা স্মার্ট মস্তিষ্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে।
খবর বিভাগঃ
দেশের বাইরে
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়