কিরণ সেখ:
সারা দেশে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের টানা হরতাল-অবরোধ চলছে। প্রায় প্রতিদিনই পেট্রলবোমায় মরছে মানুষ। সমালোচকরা বলছেন, বাংলাদেশের রাজনীতি রীতিমতো সহিংস আকার ধারণ করেছে।
সরকার সম্প্রতি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তারা পেট্রলবোমার কাছে মাথা নত করবে না। বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরনের সংলাপে না যাওয়ার কথাও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শাসক দলের নেতাকর্মীরা।
বিদ্যমান সঙ্কট থেকে বের হয়ে আসার জন্য এখনো তারা প্রশাসনিকভাবেই অগ্রসর হওয়ার বিষয়টির ওপর জোর দিয়েছেন। অর্থাৎ দুটি বড় দলই পয়েন্ট অব নো রিটার্নের জায়গায় চলে গেছে।
এদিকে লক্ষ্যে না পৌঁছা পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কিন্তু বিএনপির লক্ষ্য যদি হয়ে থাকে সরকারের পতন, তবে তারা কি পারবে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে- এ প্রশ্ন এখন সর্বত্র ?
ইতোমধ্যে বিএনপির প্রথম সারির নেতাকর্মীদের অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাইরে যারা আছেন, তাদের মধ্যে মামলায় গ্রেপ্তারের ভয়ে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বেশিরভাগ নেতা কর্মী।
বিশেষত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদুসহ সিনিয়র নেতাদের অনেকেই জেলে।
শীর্ষনেতাদের আটক ও নেতাদের বাসায় তল্লাশী চালানোর খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর আত্মগোপনে চলে যান দলের শীর্ষস্থানীর নেতাদের প্রায় সবাই। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যেই মধ্যম এবং নিচের সারির নেতারাও গা-ঢাকা দিয়েছেন। চেয়ারপারসনের নির্দেশেই আত্মগোপনে চলে গেছেন এসব নেতারা। দলের মুখপাত্র আত্মগোপনে থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দলের কর্মসূচি ঘোষণা করছেন।
বিএনপির একাধিক সূত্র ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানায়, বিএনপির প্রথম সারির নেতাদের গ্রেপ্তারের পর আত্মগোপনে থাকা সালাহউদ্দিন আহমেদ ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের সাথে গোপনে যোগাযোগ রাখছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক স্থায়ী কমিটির সদস্য ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে তিনিও যে কোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন। এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবে এতে আমি শঙ্কিত নই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকার বেআইনিভাবে বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সরকারের এই ধরনের পদক্ষেপ সংলাপের সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দিচ্ছে। গ্রেপ্তার-মামলা কখনো কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না।
প্রশ্ন হচ্ছে দলীয় শীর্ষনেতা ও কর্মীদের অনুপস্থিতিতে, কেবল পলাতক নেতাদের আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়ার মধ্য দিয়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের আন্দোলন কি পৌঁছতে পারবে অভীষ্ট লক্ষ্যে।
-----ঢাকাটাইমস
খবর বিভাগঃ
রাজনীতি
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়