ঢাকা: ৫ জানুয়ারী বিএনপির ঢাকায় কালো পতাকা মিছিল ও সমাবেশকে ঘিরে দেশজুড়ে নাকশকতার আশঙ্কায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকামুখী দূরপাল্লার সকল বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে দূরপাল্লার কোনো বাস আসতে দেখা যায়নি। এছাড়া বরিশালসহ বিভিন্ন রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এদিকে হঠাৎ করে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া বাস চলচল বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পরেছেন সাধারণ যাত্রীরা। অভিযোগ রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের চাপ এবং পুলিশের নির্দেশে মালিকরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
মুন্সিগঞ্জ: ৫ জানুয়ারি ২০ দলীয় জোটের কালোপতাকা মিছিল ও সমাবেশের ঘোষণাকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জের সাথে ঢাকার বাস যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে সরকারপন্থি বাস মালিকরা ।
মিথুন সাহা নামের ঢাকাগামী এক যাত্রী জানান, সকালে অফিসে যাব বলে বাস কাউন্টারে এসে দেখি বাস চলাচল বন্ধ । এখন বিকল্প পথে যেতে হবে । এ দিকে কাউন্টারের আশে পাশে বাস চালক ও হেল্পারদের ঘুরা ফেরা করতে দেখা গেছে ।
নাম প্রকাশে অনিকছুক বাসচালক জানান, আওয়ামী লীগ নেতারা আমাদের বাস চালাতে নিষেধ করেছেন।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফকির আবুল খায়ের জানান, বাস বন্ধ আপনাকে কেন জানাবো, বাস কি আমরা বন্ধ করেছি ।
রংপুর: ৫ জানুয়ারি বিএনপির ঢাকায় কালো পতাকা মিছিল ও সমাবেশকে ঘিরে দেশজুড়ে নাকশকতা হতে পারে এ আশঙ্কায় রংপুরে ঢাকাগামী দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মোটর বাস মালিক সমিতি।
শনিবার রাত ১২টার পর থেকে অঘোষিতভাবে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে চরম বিপাকে পড়েছে ঢাকাগামী যাত্রীরা।
এব্যপারে জেলা মোটর বাস মালিক সমিতির সভাপতি আলী আজগর পিন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাস চালক বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা আর পুলিশের হুকুমের কারণে রংপুর থেকে ঢাকাগামী বাস চলাচল আপাতত বন্ধ আছে।
সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ড ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা এবং বিআরটিসি বাস ডিপো থেকে ঢাকাগামী কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। আগাম টিকেট সংগ্রহে রাখা যাত্রীরা এসে বাস বন্ধ থাকায় ফেরত চলে যান।
নাটোর: নাটোর থেকে ঢাকামুখী সব যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বাস মালিকরা। সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ করেই শহরের কানাইখালী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড ও হরিশপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকামুখী বাসগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। আকস্মিকভাবে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েন নারী-শিশুসহ বিভিন্ন ধরনের যাত্রীরা।
নাটোর জেলা বাস মিনিবিাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাসিরুর রহমান খান এহিয়া চৌধুরী জানান, সংশ্লিষ্ট পরিবহন কর্তৃপক্ষ নিজ থেকেই তাদের ঢাকামুখী বাস বন্ধ করে দিয়েছে।
ভূক্তভোগী যাত্রীদের ধারণা ৫ জানুয়ারির ২০ দলীয় জোটের সমাবেশ ঘিরে এমন হচ্ছে।
রাজশাহী: রাজশাহী থেকে ঢাকার সঙ্গে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নাশকতার আশঙ্কায় রোববার সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় বাস মালিকরা।
রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর রহমান পিটার জানান, ভোরে রাজশাহী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে দুই থেকে তিনটি বাস ছেড়ে যায়। এরপরেই বাস মালিকরা সিদ্ধান্ত নেয় রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী বাসগুলো চলাচল বন্ধ করে দেয়ার। রাস্তায় নাশকতা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কায় বাস মালিকরা এ সিদ্ধান্ত নেয়।
এদিকে হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা। আগে থেকে টিকিট কেটে নেয়া যাত্রীরা বাস কাউন্টারগুলোতে এসে ভিড় জমাচ্ছে।
এদিকে বিএনপির ৫ জানুয়ারির সমাবেশ ও আন্দোলন সংগ্রামকে সফল করতে কয়েকদিন আগ থেকে পটুয়াখালীতে অবস্থান করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী। সে কারণে আন্দোলন সংগ্রামের দিকে পটুয়াখালীকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনায় রাখছে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ বিভাগ।
পটুয়াখালী: ৫ জানুয়ারি সোমবার বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মুখোমুখি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পটুয়াখালী থেকে দূরপাল্লার সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
রবিবার সকাল ৭টা থেকে জেলার বাসস্টান্ড থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি। এদিকে হঠাৎ করে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া বাস চলচল বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পরেছেন দক্ষিণ অঞ্চলের সাধারণ যাত্রীরা।
তবে এ বিষয়ে জেলার বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
খবর বিভাগঃ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়