Sunday, January 11

বাংলাদেশী চিকিৎসকরা এগিয়ে


ডা. মহসীন কবির লিমন স্ট্রোক-পরবর্তী প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতে করণীয় বিষয় নিয়ে গবেষণায় বাংলাদেশের চিকিৎসকরা এগিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে তাদের গবেষণা প্রশংসনীয় হয়েছে। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রিটেনের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে স্ট্রোক-পরবর্তী পক্ষাঘাতে করণীয় নিয়ে এ গবেষণাটি শেষ করেছে। এ গবেষণার মাধ্যমে বিশ্বের অন্য দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকল। গবেষণায় বলা হয়, স্ট্রোক-পরবর্তী প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতে প্রধান চিকিৎসা হলো রিহ্যাবিলিটেশন। আর প্যারালাইসিস-পরবর্তী চিকিৎসা হিসেবে এ রিহ্যাবিলিটেশন যত দ্রুত শুরু করা যায়, রোগীর জন্য তা ততই মঙ্গলজনক। গবেষক দল বলেন, রিহ্যাবিলিটেশন বলতে এখানে মূলত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাকেই বোঝানো হচ্ছে। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি স্পিচ থেরাপি ও অকুপেশনাল থেরাপিও জরুরি। এ ধরনের রোগীর যদি ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা দেয়া না হয়, তবে রোগীর মাংশপেশিগুলো খুব দ্রুত কার্যক্ষমতা হারায় এবং জয়েন্টগুলো ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে যেতে থাকে। কয়েক মাসের মধ্যেই বার্লিনে এ গবেষণাপত্রটি উপস্থাপনা করা হবে বলে গবেষক দল জানায়। ৭ জানুয়ারি বিএসএমইউয়ে একটি সেমিনারের মাধ্যমে বক্তারা এসব তথ্য তুলে ধরেন। সেমিনারে বিএসএমইউ ভিসি অধ্যাপক প্রাণগোপাল দত্ত ওই গবেষণার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন এবং সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হসপিটালের ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ স্ট্রোকের পর দ্রুত রিহ্যাবিলিটেশন শুরুর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. জাকারিয়া ফারুক বলেন, সম্প্রতি স্ট্রোক পৃথিবীজুড়েই একটি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্ট্রোক সম্পর্কে প্রতিটি মানুষেরই সচেতন হওয়া জরুরি। আর স্ট্রোক-পরবর্তী প্রধান চিকিৎসাই হলো রিহ্যাবিলিটেশন তথা ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি এবং অকুপেশনাল থেরাপি- এ বিষয়ও সবাইকে গুরুত্বের সঙ্গে জানাতে হবে। যুক্তরাজ্যের ইস্ট কেন্ট মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ডিরেক্টর ও স্যার উইলিয়াম বেভারিজ ফাউন্ডেশনের অ্যামবাসেডর ড. মোহাম্মদ শাকেল এ গবেষণা প্রকল্পের প্রধান উদ্যোক্তা ও কর্ম পরিকল্পনাকারী । তিনি বলেন, স্ট্রোক-পরবর্তী করণীয় বিষয় নিয়ে এ ধরনের গবেষণা বিশ্বে খুব একটা হয়নি। তাই এ গবেষণার মাধ্যমে বিশ্বের অন্য দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকল। সেমিনারে ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যক্রম বিস্তৃত করার লক্ষ্যে সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্যার উইলিয়াম বেভারিজ ফাউন্ডেশনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। স্যার উইলিয়াম বেভারিজ ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মেজর জেনারেল (অব.) জীবন কানাই দাস তার প্রতিষ্ঠান থেকে এ ধরনের গবেষণার পাশাপাশি স্ট্রোক ও ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সেবার পরিধি বাড়ানোর ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়