Saturday, January 10

চসিক নির্বাচন নিয়েও শঙ্কা!


ঢাকা: আগামী ২৬ জুলাই শেষ হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়াদ। আইনানুযায়ী মেয়াদপূর্তির ১৮০ দিন আগেই সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তাই নির্বাচন কমিশনও (ইসি) রয়েছে প্রস্তুত। কিন্তু বর্তমান নগর প্রশাসন চট্টগ্রাম মহানগরীর আয়তন দ্বিগুণ করার উদ্যোগ নেয়ায় ঢাকা সিটি কর্পোরেশন (ডিসিসি) নির্বাচনের মতো চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনও ঝুলে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জানা যায়, চট্টগ্রামের ৪১টি ওয়ার্ড নিয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরী। এর আয়তন ৬০ বর্গমাইল। নতুন কয়েকটি ইউনিয়ন নিয়ে এ সীমানা দ্বিগুণ করে ১২০ বর্গমাইল করার জন্য একটি প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আগেই পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। আর তা অনুমোদন করতে তাগাদাও দেওয়া হচ্ছে। সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আহমদ (সম্প্রতি বদলি হওয়া) বলেন, ‘সীমানা বাড়ানো হলে নতুন করে আরো ২০টি ওয়ার্ড বাড়বে। আর সীমানা বাড়ানোর বিষয়ে সরকার উদ্যোগী হলে দেড় মাসের মধ্যেই তা সম্পন্ন করা সম্ভব হবে।’ এদিকে বন্দর নগরীর মেয়র মনজুর আলম বলেন, সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে চট্টগ্রাম মহানগরীর সীমানা বাড়ানো প্রয়োজন। তবে নির্বাচন কমিশনার মো. আবু হাফিজ বলেন, আপাত দৃষ্টিতে কোনো সীমানা জটিলতা আমরা দেখছিনা। তবে সীমানা বাড়ানোর ব্যাপারটি শুনেছি। যদি সীমানা বাড়ানো হয় তাহলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা জটিল হয়ে পড়বে। তবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নির্বাচনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই সবকিছু সম্পন্ন করতে পারলে নির্বাচন করা সম্ভব হবে। এটা নির্ভর করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ইচ্ছার উপর। এদিকে ইসির কর্মকর্তারা বলেন, নির্বাচন কমিশন চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন করতে প্রস্তুত। তাই আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে এ ব্যাপারে এখনো কোনো কিছুই জানানো হয় নি। এ নির্বাচনে ইতোমধ্যেই অর্থ মন্ত্রণালয় ১২ কোটি টাকা বরাদ্ধ দিয়েছে। তাদের ভাষ্য, ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের সীমানা জটিলতা নিরসন না করেই উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকা বাড়ানো হচ্ছে বলে ঢাকা সিটি নির্বাচনই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আবার চসিক নির্বাচনের সীমানা বাড়ালে জটিলতা আরো বাড়বে। শেষে ঢাকা সিটি নির্বাচনের মতোই চসিক নির্বাচনও ঝুলে একই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি থাকলেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করছে এ নির্বাচন। নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা এখনো নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে নির্বাচনী প্রস্তুতির কোনো নির্দেশনা পাইনি। নির্দেশনা পেলেই আমরা প্রস্তুতি নেব।’ এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ডিসিস নির্বাচনসহ সকল সিটি নির্বাচনের দাবি জানিয়ে ঢাকাটাইমসকে বলেন, গত পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পরাজয়ের পর থেকে সরকার ডিসিসি নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এ কারণে নানা অজুহাতে স্ব-ইচ্ছায় বিভিন্ন জটিলতা তৈরি করে ডিসিসি নির্বাচনকে আটকে রাখছে। একই পথে এগুচ্ছে চসিক নির্বাচনও। আমরা দ্রুত সিটি নির্বাচন চাই। ডিসিসি নির্বাচনের মতো চসিক নির্বাচন নিয়েও শঙ্কায় রয়েছে ২০ দলীয় জোট বিএনপি। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার জানান, চসিক নির্বাচন আদৌ হবে কিনা সেটা নিয়েই শঙ্কায় আছি। সরকার নানা জটিলতা সৃষ্টি করে ডিসিসি নির্বাচন বন্ধ করে রেখেছে। একইভাবে চসিক নির্বাচনেও নানা জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আর যেহেতু বিএনপি দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেনি, তাই চসিক নির্বাচনেও বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কিনা, সেটাও এখন নিশ্চিত নয়। তবে সময় যখন হবে, তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ইসির তথ্য মতে আগামী ২৬ জুলাই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়াদ শেষ হবে। আর মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। তফসিল ঘোষণা করতে হবে ৪৫ দিন সময় হাতে রেখে।

শেয়ার করুন

0 comments:

পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়