ঢাকা: রাজধানীর ধানমন্ডি, মিরপুর, তেজগাঁও, যাত্রাবাড়ী ও পুরান ঢাকার লালবাগে পাঁচটি এবং নারায়ণগঞ্জে চারটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা।
সোমবার রাতে এসব গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। যাত্রাবাড়ী এলাকায় বাসে আগুন দেয়ার সময় দুইজনকে আটক করা হলেও তাদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেননি পুলিশ।
ধানমন্ডি: রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় বেঙ্গল গ্যালারির সামনে একটি প্রাইভেটকারে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানায়, কয়েকজন লোক হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে থাকা ওই প্রাইভেটকারে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। তবে এরা কে এই আগুন দিয়েছে তা জানা যায়নি।
তেজগাঁও: রাজধানীর তেজগাঁও থানার নাবিস্কোর সামনে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
সোমবার সন্ধ্যা ৭ টার সময় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
যাত্রাবাড়ী: রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার দয়াগঞ্জ মোড়ে ঢাকা-বাগেরহাট রুটে চলাচলকারী মেঘনা পরিবহনের একটি বাস আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। তবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি পুলিশ।
মিরপুর: রাজধানীর মিরপুর এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাসে আগুন দিয়েছে অবরোধ সমর্থকরা। সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মিরপুর ১০ নম্বরের কিছু দূরে সোমবার রাতে একটি যাত্রীবাহী বাসের আগুন দেয় কয়েকজন যুবক। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
লালবাগ: রাজধানীর পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকায় একটি ট্রাকে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লালবাগের বাগানবাড়ী পার্কে এ ঘটনা ঘটে। এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
দমকল বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সিনিয়র টেলিফোন অপারেটর আনজুম রশিদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জে একই সময়ে চারটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা। আগুন দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ে দ্বিগি¦দিক ছোটাছুটি করতে থাকে আতঙ্কিত লোকজন।
সোমবার রাত ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ২ নং রেলগেট এলাকায় ও পৌর পাঠাগারের সামনে বাসগুলোতে আগুন দেয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নগরীর ১ নং রেলগেটের বাস টার্মিনাল থেকে দুটি যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে আসে। নাইম নামে একজন জানান, বাসটিতে যাত্রীবেশি বেশ কয়েকজন যুবক ওঠেন।
২ নং রেলগেট পার হতেই যাত্রীবেশি যুবকরা বাস দু’টি ভাঙচুর করতে থাকে। আতঙ্কিত যাত্রীরা তাড়াহুড়া করে গাড়ি থেকে নেমে যায়। পরে দুর্বৃত্তরা পেট্রোল ঢেলে বাস দু’টিতে আগুন দিয়ে চলে যাওয়ার সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি কাভার্ড ভ্যান ভাঙচুর করে এবং কয়েকটি ককটেল ফাটিয়ে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে মন্ডলপাড়া থেকে ফায়ার সাভিসের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
একই সময়ে শহরের পৌর পাঠাগারের সামনে দুর্বৃত্তরা বেশ কয়েকটি হাত বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান ভাঙচুর করে এবং তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে আশপাশের লোকজন গিয়ে আগুন নেভায়।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের জানান, আগুন লাগার ধরন দেখে ধারণা করা হচ্ছে এটি জামায়াত-শিবিরের কাজ।
নোয়াখালীতে ২০ গাড়ি ভাঙচুর
নোয়াখালীতে মঙ্গলবারের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে হরতাল সমর্থকরা। সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে ট্রাক, পিকআপভ্যান, অটোরিকশাসহ এসব গাড়ি ভাঙচুর ও একটি অটোরিকশায় আগুন দেয় তারা।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহজাহানকে আটকের প্রতিবাদে এ হরতালের ডাক দেয় জেলা বিএনপি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সন্ধ্যা ৬টার দিকে জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর-চৌমুহনী সড়কের কেন্দুরবাগ এলাকায় দুটি ট্রাক, একটি পিকআপভ্যান ও ছয়টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করে পিকেটাররা। এ সময় পিকেটারদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে দুই অটোরিকশা চালক আহত হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পিকেটাররা পালিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করে পুলিশ।
এছাড়া সাড়ে ৬টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকায় পাঁচটি অটোরিকশা ও একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়।
এদিকে, সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা শহরের দত্তেরহাটে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ করে হরতাল সমর্থকরা। এ সময় তারা একটি অটোরিকশায় আগুন দেয়। পরে স্থানীয় লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
একই সময়ে সোনাপুরের করমুল্লা এলাকার হানিফ রোডে একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে হরতাল সমর্থকরা।
অন্যদিকে, সাড়ে ৭টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার কলেজ গেট এলাকায় একটি ঝটিকা মিছিল বের করে সড়কে থাকা চারটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে পিকেটাররা।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইনুল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, বিকাল থেকে পুলিশি পাহারায় লক্ষ্মীপুর থেকে বেশ কয়েকটি গাড়ি ছেড়ে এসেছে। তবে সন্ধ্যার পরে পুলিশি পাহারা ছাড়া লক্ষ্মীপুর থেকে ছেড়ে আসা কয়েকটি গাড়ি উপজেলার কেন্দুরবাগ এলাকায় আসলে পিকেটাররা ভাঙচুর চালায়।
পরে পুলিশ ওই এলাকা থেকে সন্দেহভাজন একজনকে আটক করেছে। তবে সে কোন দলের কর্মী কিনা তা জানা যায়নি।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, সন্ধ্যার পরে শহরের দত্তেরহাট এলাকায় পিকেটাররা কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। তবে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
খবর বিভাগঃ
সারাদেশ
0 comments:
পাঠকের মতামতের জন্য কানাইঘাট নিউজ কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়